মন্দা নিয়েই নতুন বছরে পথচলা শুরু পুঁজিবাজারের

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সবচেয়ে ভালো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেও দিশেহারা অবস্থা বিনিয়োগকারীদের। কারণ, টানা দরপতনে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এসব কোম্পানির শেয়ারের দামও কমেছে বেশি। এ কারণে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্য থেকে সবচেয়ে ভালো মানের বাছাই করা ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচকটি প্রায় অর্ধযুগ আগের অবস্থানে ফিরে গেছে। আর বিদায়ী বছরের এই মন্দাভাব নিয়েই ২০২০ সাল শুরু করলো বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। নতুন বছরের প্রথম দিন বুধবার (১ জানুয়ারি) ঢাকায় প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এবং শরীয়াহ সূচক তেমন হেরফের না হলেও তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্য থেকে সবচেয়ে ভালো মানের বাছাই করা ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচকটি প্রায় ১২ পয়েন্ট পড়ে গেছে। অন্যদিকে চট্টগ্রামে প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৪ পয়েন্ট বাড়লেও লেনদেন হয়েছে মাত্র ৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। ঢাকায়ও লেনদেন কমেছে।

গতকাল মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) ‘ব্যাংক হলিডে’র কারণে ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি পুঁজিবাজারেও লেনদেন বন্ধ থাকে। সে কারণে ৩০ ডিসেম্বর সোমবার ছিল ২০১৯ সালের শেষ লেনদেন। ঔ দিন দুই বাজারেই মূল্যসূচক সামান্য বেড়েছিল।

২০১০ সালে বড় ধ্বসের পর পুঁজিবাজারে সবচেয়ে ‘খারাপ’ অবস্থা গেছে ২০১৯ সাল। ঔ ধ্বসের পর ২০১৬ সালের শেষ দিকে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে থাকে। ২০১৭ সালটা ভালো গিয়েছিল বাজার। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে আবার পতন শুরু হয় পুঁজিবাজারে। ২০১৯ সালে সেই পতনের পর পতনে বাজার একেবারে তলানীতে নেমে যায়। ডিএসইএক্স সূচক ফিরে গেছে সাড়ে তিন বছরের আগের অবস্থানে । খবর বিডিনিউজের

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৯ সালে ৪ হাজার ৫৫ পয়েন্ট নিয়ে শুরু হওয়া ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান ডিএসইএক্স বাড়তে বাড়তে ২০১৭ সালের ২৬ নভেম্বর ৬ হাজার ৩৩৬ পয়েন্টে উঠে। এরপর সেটা পড়তে পড়তে প্রায় ২ হাজার পয়েন্ট হারিয়ে বছরের শেষ দিন ৪ হাজার ৪৫২ পয়েন্টে নেমে এসে লেনদেন শেষ হয়।

বুধবার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা নিয়ে শুরু হয় ২০২০ সালের লেনদেন। আধা ঘন্টায় ডিএসইএক্স প্রায় ৩০ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৪৭৭ পয়েন্টে উঠে যায়। কিন্তু এর পর পড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত দশমিক ৩৫ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৪৫৩ দশমিক ২৯ পয়েন্টে এসে লেনদেন শেষ হয়। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ্ সূচক প্রায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩ পয়েন্টে। তবে ডিএস৩০ সূচক প্রায় ১১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫০১ পয়েন্টে।

বুধবার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৩ হাজার ৫১৯ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। সোমবার লেনদেনের অংক ছিল ১৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। অন্যদিকে ডিএসইতে ২৯৬ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা বিদায়ী বছরের শেষ লেনদেনের চেয়ে ২২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা কম। গত সোমবার লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩১৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। ডিএসইতে ৩৫৩টি কোম্পানি ও মিউট্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২২১ টির, কমেছে  ৮৬ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৬ টির। মন্দাভাব নিয়ে বছর শুরু হলেও বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা- সরকার এই খাতে শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে পুঁজিবাজারের অস্থিরতা রোধ করবেন।