সীতাকুণ্ডে হলুদ ফুলকপি চাষে সফলতা

উত্তর চট্টগ্রাম প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় প্রথমবারের মতো হলুদ রঙের ফুলকপির চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা, হয়েছেন স্বাবলম্বী। উপজেলায় প্রথমবারের মতো এই রঙিন ফুলকপি চাষ করেন তাঁরা। কৃষকের ক্ষেতের রঙিন ফুলকপি দেখতে আসছেন সাধারণ উৎসুক লোকজনও। ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন রঙিন ফুলকপি চাষ করা কয়েকজন সবজি চাষী।
উপজেলার বারৈয়ারঢালা, সোনাইছড়ি হাফিজ জুট মিলের সংলগ্ন ও ফৌজদারহাট সাংগু সড়ক এলাকায় হলুদ (রঙিন) ফুলকপির চাষ করেছেন কৃষক জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, রঙিন ফুলকপি আর সাধারণ ফুলকপি উৎপাদন খরচ একই। তবে রঙিন হওয়ায় এই ফুলকপির দাম দ্বিগুণ। একটি জমিতে সাদা ফুলকপি চাষ করতে যত টুকু চারা রোপণ করা যায়, তার চেয়ে রঙিন ফুলকপি বেশি লাগানো যায়। রঙিন ফুলকপি জমির আয়তন বেশি দখল করে না। এই হলুদ ফুলকপির খবর শুনে আমার জমিতে প্রতিদিন শত শত মানুষ আসছেন তা দেখতে। আর আমাকে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ফুলকপিগুলো পাহারা দিয়ে রাখতে হয়। কারণ অনেকে না বুঝে জমিতে প্রবেশ করে ফুল কপিতে হাত দেয়। এতে ফুলকপির ফুল নষ্ট হয়ে যায়’।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, সীতাকুণ্ডে মোট ৮০ হেক্টর জমিতে ফুলকপির চাষ হয়। প্রতি ফুলকপি ২৫ টাকা দরে বাজারমূল্য দাঁড়ায় ৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। চারা লাগানোর ৬০-৭০ দিনের মাথায় ফুলকপি বিক্রির উপযোগী হয়।
এবার সীতাকু-ে ১ হাজার ২০০টি হলুদ ও বেগুনি রঙের ফুলকপির চারা লাগানো হয়েছে। ১৫ জন চাষি রঙিন ফুলকপি চাষ করেছেন। তিনি জানান, ১৩ শতাংশ জায়গায় এই চারা লাগানো হয়েছে। প্রতি চারা কেনায় খরচ পড়েছে সাড়ে সাত টাকা।
কৃষক জাহাঙ্গীর আলম দুই শতাংশ জমিতে ২৫০টি চারা লাগিয়েছেন। তিনি জানান, রং হলুদ হওয়ায় দেখতে সুন্দর দেখায়। এটিকে রঙিন ফুল কপি হিসেবে লোকজন চিনে।
রঙিন ফুলকপির স্বাদ কেমন জানতে চাইলে উপজেলার ভাটিয়ারি বানুবাজার এলাকার সাইদুল হক বলেন, ‘আমি দু’টি ফুল কপি কিনে আজ ঘরে রান্না করেছে। সাদা ফুলকপি থেকে রঙিন ফুলকপিতে আলাদা একটা ফ্লেভার আছে মনে হলো। ভিটামিনের দিক থেকেও এটা বেশি। দেখতে সুন্দর হওয়ায় বাড়িতে ছোট বাচ্চারা আগ্রহ করে খাচ্ছে’।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘উপজেলায় প্রথমবারের মতো রঙিন ফুলকপির চাষ হয়েছে। এই রঙিন ফুলকপিতে রয়েছে ভিটামিন এ। এছাড়াও প্রচুর পরিমানে কেরোটিন থাকে, আমরা জানি যে এন্টি অক্সিজেন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এই জন্য ভিটামিন এ রঙিন ফুলকপি আমরা সীতাকু-ে এই প্রথমবারের মতো কৃষকদের দিয়ে রোপণ করিয়েছি। পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করে আমরা সফল হয়েছি। এই মাটিতে রঙিন ফুলকপি চাষ করা সম্ভব। প্রাথমিকভাবে উপজেলার বারৈয়ারঢালা, সোনাইছড়ি হাফিজ জুট মিল সংলগ্ন এলাকা ও ফৌজদারহাট সাঙ্গু সড়ক এলাকায় এই ফুলকপি চাষ করা হয়েছে। যেহেতু চট্টগ্রাম থেকে সীতাকুণ্ড খুব কাছে। মার্কেটিং এ কোনো ধরনের অসুবিধা হবে না। যেহেতু এই ফুলকপি ক্যান্সার প্রতিরোধক, যতটুকু সম্ভব আমরা চাষীদের এই ফুলকপি চাষে সহযোগিতা করবো। একইভাবে বাজার থেকে এই ফুলকপি বেশি বেশি কেনার জন্য ক্রেতাদের অনুরোধ করছি’।

ডিসি/এসআইকে/এসইউআর