এস আলম গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্র যুক্ত হলো জাতীয় গ্রিডে

বিশেষ প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন বাঁশখালীতে স্থাপিত ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট। শনিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুর ১টা ৫৬ মিনিটে ৪০০ কেভিএ গ্রিড লাইনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয় দেশে বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।
তবে গ্রিডে যুক্ত হলেও এখনই এ প্ল্যান্ট থেকে বিদ্যুৎ সঞ্চালন হচ্ছে না। বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং কমিশনিং শুরু হবে কয়েকদিন পর। প্রাথমিকভাবে আগামি সোমবার থেকে প্ল্যান্টটি কমিশনে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে সবকিছু ঠিক থাকলে আগামি জুন মাসে পুরোপুরি উৎপাদনে যেতে পারে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।
বাংলাদেশে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি লিমিটেডের (পিজিসিবিএল) প্রধান প্রকৌশলী মোরশেদ আলম খান বলেন, এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের ৯৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আজ জাতীয় গ্রিড থেকে ব্যাক-ফিড প্রক্রিয়ায় প্রকল্পের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশে পরীক্ষামূলক বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ওই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রকে জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযোজিত করা হলো। প্রতিটি যন্ত্রাংশে বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে উৎপাদনের সক্ষমতা যাচাই ও নিরীক্ষা শেষে উৎপাদনে যেতে আগামী এপ্রিল কিংবা মে মাস লাগবে। তবে সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে আগামী জুন মাসে উৎপাদিত বিদ্যুতের এক হাজার ২২৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে বাস্তবায়িত পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্ট (পিপিএ) এবং বাংলাদেশ সরকার ও পিজিসিবির সঙ্গে বাস্তবায়িত ইমপ্লিমেন্টেশন এগ্রিমেন্ট (আইএ) অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ করবে প্রতিষ্ঠানটি।
মোরশেদ আলম খান আরও বলেন, বাংলাদেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন ও শিল্পায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এই প্রকল্প। বিদেশি ব্যাংকের অর্থায়ন, বেসরকারি খাতের বিনিয়োগে বড় পরিসরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাংলাদেশে এটাই প্রথম। বাংলাদেশের অন্যান্য কয়লাভিত্তিক প্ল্যান্টে বিদ্যুতের দাম অনেক বেশি। এই প্ল্যান্ট উৎপাদনে গেলে প্রতিযোগিতামূলক হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশের শতভাগ বিদ্যুতায়ন ও শিল্পায়নের ক্ষেত্রে এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে জানান তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁশখালীতে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এসএস পাওয়ার ওয়ান লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানটির ৭০ শতাংশ মালিকানা এস আলম গ্রুপের। বাকি ৩০ শতাংশ শেয়ারের মালিক চীনের সেপকো-থ্রি।
প্রকল্পের প্রধান সমন্বয়কারী মো. ফারুক বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পরীক্ষামূলক বিদ্যুতায়ন করতে পেরে আমরা বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ জ্বালানি এবং খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের প্রতি কৃতজ্ঞ। একই সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, পিজিসিবি, পরিবেশ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং অন্যান্য সব স্টেক হোল্ডারদের সার্বিক সহযোগিতা এবং সমর্থনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

ডিসি/এসআইকে/সিসি