প্রবাসী আয়ে খরা, এপ্রিলে আয় ১৫০ কোটি ডলার

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
ডলার সংকটের মধ্যে ঈদের মাসে দেশে আগের চেয়ে প্রবাসী আয় কম এসেছে। চলতি মাসের ১ থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত প্রবাসী আয় এসেছে ১৫০ কোটি ডলার। অথচ গত মার্চে দেশে এসেছিল ২০১ কোটি ডলারের প্রবাসী আয়। চলতি মাসের আরও যে কয়েক দিন বাকি আছে, তাতে সর্বোচ্চ ১৫ কোটি ডলার আয় আসতে পারে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকাররা। ফলে পুরো মাসে প্রবাসী আয় বেড়ে দাঁড়াতে পারে ১৬৫ কোটি ডলারে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবারসহ চলতি মাসের প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে বাকি চার দিনের হিসাব। এ চার দিনের মধ্যে আবার তিন দিনই দেশ-বিদেশ মিলিয়ে ব্যাংক বন্ধ। শুক্রবার ও শনিবার বাংলাদেশের ব্যাংক বন্ধ। আর রোববার আন্তর্জাতিক বাজারে লেনদেন বন্ধ। এ কারণে এ চার দিনে প্রবাসী আয়ে বড় ধরনের কোনো উত্থান ঘটবে বলে মনে করছেন না ব্যাংকাররা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলের প্রথম তিন সপ্তাহে (১ থেকে ২১ এপ্রিল) বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১০৫ কোটি ৭৩ লাখ ডলারের প্রবাসী আয়। আর রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৭ কোটি ৩৭ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৬৩ লাখ মার্কিন ডলার ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪২ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলারের প্রবাসী আয় দেশে এসেছে। আর গত ২২ থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত প্রবাসী আয় এসেছে আরও প্রায় ২৩ কোটি ডলার। ফলে গত বুধবার পর্যন্ত প্রবাসী আয় এসেছে ১৫০ কোটি ডলার।
ব্যাংকাররা বলছেন, সাধারণত ঈদের আগে ভালো পরিমাণে প্রবাসী আয় আসে। অনেকে জাকাত ও ফিতরার টাকা দেশে পাঠান। আবার পরিবারের সদস্যদের ঈদের বাড়তি খরচ জোগাতে অনেক প্রবাসী বেশি আয় পাঠিয়ে থাকেন। তবে ডলারের বিপরীতে টাকার দাম আটকে রাখার কারণে এবার বৈধ পথে আয় কম এসেছে।
ব্যাংকগুলো এখন সর্বোচ্চ প্রতি ডলার ১০৭ টাকা দরে প্রবাসী আয় কিনতে পারছে। তবে হুন্ডিতে ডলারের দাম প্রায় ১১০ টাকা। ডলারে ব্যাংকগুলো এর চেয়ে বেশি টাকা দিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের শাস্তির মুখে পড়তে হচ্ছে। এই কারণে ব্যাংকগুলো বেশি দাম দিয়ে আয় আনতে পারছে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে বৈধ পথে ২০১ কোটি ৭৭ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে, যা ফেব্রুয়ারির চেয়ে ৪৫ কোটি ৭২ লাখ ডলার বেশি। ফেব্রুয়ারিতে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলার। সেটি আবার জানুয়ারির তুলনায় ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ ডলার বা প্রায় ২০ শতাংশ কম ছিল। জানুয়ারিতে প্রায় ১৯৬ কোটি ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে বেশি পরিমাণে প্রবাসী আয় আনতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরপরও ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় আসা আশানুরূপ বাড়ছে না। এক মাসে বাড়ছে তো আরেক মাসে কমছে।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ