৮ মিনিটে পদ্মা পার, ২ ঘন্টায় ঢাকা থেকে ভাঙ্গা গেল ট্রেন

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকার কমলাপুর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে প্রথমবার ফরিদপুরে গেছে ট্রেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৭ মিনিটে কমলাপুর থেকে ট্রেনটি ছেড়ে যায়। ঠিক ১১টা ২৬ মিনিটে পদ্মা সেতুতে ট্রেন ওঠে। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সেতু ট্রেনে করে পাড়ি দিতে সময় লেগেছে ৮ মিনিট। ঠিক ১১টা ৩৪ মিনিটে পদ্মা সেতু পাড় হয়। অন্যদিকে ঢাকার কমলাপুর থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশনে পৌঁছাতে ট্রেনটি সময় নিয়েছে মোট ২ ঘন্টা। দুপুর ১২টা ৬ মিনিটে ফরিদপুরের ভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায় ট্রেনটি।
স্টেশনে ভাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জড়ো হওয়া মানুষ ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে স্বাগত জানায়।
যাত্রা শুরুর আগে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘এই রেললাইন উদ্বোধনের ফলে রেলযোগাযোগ ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন হবে। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা সহজ হবে’। পদ্মা বহুমুখী সেতুতে সড়ক ও রেল একই সঙ্গে চলাচলের কথা ছিল। কিন্তু সড়ক অংশ চালু হলেও উদ্বোধন হয়নি রেল চলাচল। তবে আগামি ১০ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর এতে করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ আরও সহজ হবে। পুরো প্রকল্প যশোর পর্যন্ত। সেটি উদ্বোধন হবে ২০২৪ সালের জুনে। আর এ বছর চালু হবে ফরিদপুরের ভাঙ্গা জংশন পর্যন্ত। পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত প্রায় ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথ নির্মাণ করছে রেলওয়ে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিলোমিটার রেলপথ চালু হচ্ছে।
এই রেললাইন নির্মাণে ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে বাস্তবায়ন শুরু করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। জিটুজি পদ্ধতিতে এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে চীন। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা।
রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীসহ রেলওয়ে ও প্রকল্পের কর্মকর্তারা পরীক্ষামূলক এই যাত্রায় সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছেন।
মন্ত্রী গত সোমবার জানান, পদ্মা সেতু হয়ে রেলপথ উদ্বোধনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সময় দিয়েছেন ১০ অক্টোবর। সেদিন একটি সুধী সমাবেশও অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে ৭ সেপ্টেম্বর পরীক্ষামূলকভাবে একটি ট্রেন কমলাপুর থেকে ভাঙ্গা অংশ পর্যন্ত যাবে এবং ফিরে আসবে।
পুরো প্রকল্প যশোর পর্যন্ত। সেটি উদ্বোধন হবে ২০২৪ সালের জুনে। আর এ বছর চালু হবে ফরিদপুরের ভাঙ্গা জংশন পর্যন্ত। পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত প্রায় ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথ নির্মাণ করছে রেলওয়ে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিলোমিটার রেলপথ চালু হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের এক সপ্তাহ পর থেকে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা। শুরুতে একটি ট্রেন পরিচালনা করা হবে। প্রকল্প কার্যালয় থেকে ঢাকা-পদ্মা সেতু-রাজবাড়ী রুটে ট্রেন চালানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
রেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উদ্বোধনের সময় সব স্টেশন এবং পুরো সংকেতব্যবস্থা হয়তো চালু করা যাবে না। শুরুতে তিনটি স্টেশনে ট্রেন থামার ব্যবস্থা থাকবে। স্টেশনগুলো হচ্ছে মাওয়া, পদ্মা (জাজিরা) ও শিবচর। মুন্সিগঞ্জের নিমতলা স্টেশনটিও চালুর চেষ্টা চলছে।
প্রকল্পের অগ্রগতি প্রতিবেদন অনুসারে, আগস্ট পর্যন্ত প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৮২ শতাংশ। এই প্রকল্পে তিন অংশে বিভক্ত হয়ে কাজ চলমান। প্রথম অংশের ঢাকা-মাওয়া অংশে অগ্রগতি ৮০.৫০ শতাংশ। এই অংশে রেললাইন নির্মাণ শতভাগ হয়ে গেলেও নতুন ৪ স্টেশনের একটিরও শতভাগ কাজ হয়নি। কাজ বাকি ব্যালাস্টেড ট্রাক ও মেজর দুই ব্রিজের।
আর দ্বিতীয় অংশ মাওয়া-ভাঙ্গার কাজের অগ্রগতি ৯৬.৫০ শতাংশ। ব্যালাস্টেড ট্রাক ও সিগন্যালিংয়ের কাজ বাকি। নতুন ৪ স্টেশনের দুটির নির্মাণ শেষ। এ ছাড়া এই অংশের সব কাজই সম্পন্ন হয়েছে।
এই রেললাইন প্রকল্প নির্মাণে ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে বাস্তবায়ন শুরু করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। জিটুজি পদ্ধতিতে এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে চীন। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। রেলসংযোগের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ