মাহে রজমান আসন্ন, বেড়ে গেলো ছোলা-মুগ ডালের দাম

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
সরকারের কঠোর হুঁশিয়ারিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে এবার চাউল, ডাল, সয়াবিন তেল, আটা, শুকনা মরিচ, আদা, রসুনের পর বেড়েছে ছোলা ও মুগ ডালের দাম। সেই সঙ্গে কিছুটা দাম কমার পর নতুন করে আবার বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। শুক্রবার (১০ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পরপরই চাউল ও মসুর ডালের দাম বাড়ে। তবে অ্যাংকর, ছোলা ও মুগ ডালের দাম স্থিতিশীল ছিল। এখন রমজান মাস কাছাকাছি চলে আসায় ছোলা ও অ্যাংকর ডালের দাম বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে মুগ ডালের দামও।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বাজার ও মানভেদে অ্যাংকর ডালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি। আর ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মুগ ডালের দাম বেড়ে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা হয়েছে।
হঠাৎ করে এমন দাম বাড়ার বিষয়ে ব্যবসায়ী মিরাজ বলেন, রমজান কাছাকাছি চলে এসেছে। অনেকে রমজানের কেনাকাটা শুরু করে দিয়েছে। আর রোজার সময় অ্যাংকর ও ছোলার অনেক চাহিদা থাকে। যে কারণে এ দুটি পণ্যের দামও রোজার আগে কিছুটা বেড়ে যায়। এবারও তারই প্রতিফল দেখা যাচ্ছে।
রামপুরার ব্যবসায়ী ইব্রাহিম বলেন, রোজার সময় অ্যাংকর ডালের চাহিদা সব থেকে বেশি থাকে। অ্যাংকর দিয়ে অনেকে ঘুগনি বানায়। আবার এটা দিয়ে বেশনও তৈরি করা হয়। এ কারণে রমজানে অ্যাংকরের চাহিদা অনেক। অ্যাংকরের মতো এ সময় ছোলাও অপরিহার্য পণ্য। তিনি বলেন, মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক থাকলেও রোজা কেন্দ্রিক কেনা শুরু হয়ে গেছে। এ কারণে ছোলা ও অ্যাংকর ডালের দাম কিছুটা বেড়েছে। এর সঙ্গে কিছুটা বেড়েছে মুগ ডালের দাম। তবে মসুর ডালের দাম এ সপ্তাহে নতুন করে বাড়েনি। অবশ্য মসুর ডালের দাম কিছুদিন আগেই বেড়েছে।
এদিকে করোনা আতঙ্কে ৮০ টাকায় ওঠার পর গত সপ্তাহে পেঁয়াজের কেজি ৩০ টাকায় নেমে আসে। তবে রোজা সামনে রেখে আবার পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। বাজার ও মানভেদে দেশি পেঁয়াজের কেজি এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়।
ব্যবসায়ী নোয়াব আলী বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় পেঁয়াজের দাম এখন একটু বাড়তি। রোজার কারণেই মনে হয় পেঁয়াজের এই দাম বেড়েছে। তবে আমাদের ধারণা এবার রোজার ভেতরে পেঁয়াজের দাম আর বাড়বে না।
এর আগে করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে প্রথমে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী চাউলের দাম বড়িয়ে দেন। তারপর পর্যায়ক্রমে বাড়ে আদা, রসুন, সয়াবিন তেল, আটা, মসুর ডাল ও শুকনা মরিচের দাম। নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্যের দাম বাড়লেও করোনা আতঙ্কের মধ্যে বেশ স্থির রয়েছে সবজির দাম। আগের মতোই করলা ৪০-৫০ টাকা, বরবটি ৪০-৫০ টাকা, শসা ২০-৩০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, পাকা টমেটো ২০-৪০ টাকা, শিম ২০-৪০ টাকা, গাজর ২০-৩০ টাকা, মুলা ১৫-২০ টাকা, বেগুন ২০-৪০ টাকা, পটল ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর গত সপ্তাহে ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া সজনের ডাটার দাম কমে ১০০-১২০ টাকা হয়েছে।
সবজির মতোই অনেকটা স্থিতিশীল রয়েছে মাছের দাম। আগের মতোই রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০-৫০০ টাকা। নলা (ছোট রুই) মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকা কেজি। তেলাপিয়া ১৩০-১৭০ টাকা, পাঙাশ ১৪০-১৮০ টাকা কেজি, শিং ৩০০-৪৫০ টাকা, শোল মাছ ৪০০-৭৫০ টাকা, পাবদা ৪৫০-৬০০ টাকা, বোয়াল ৫০০-৮০০ টাকা, টেংরা ৪৫০-৬০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকা কেজি। পাকিস্তানি কক মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০-২৪০ টাকা। লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা কেজি। গরুর মাংস ৫৮০-৭০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৮০০-৯৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর বয়লার মুরগির ডিম গত সপ্তাহের মতোই ৮০-৮৫ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে।

ডিসি/এসআইকে/এসএজে