ফুড ডেলিভারিম্যানের চাকরিতে সাবেক আফগান মন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
নিজের দেশে থাকতে দায়িত্বপালণ করেছেন সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রী হিসেবে।  কিন্তু তাকেই এখন বিদেশে এসে করতে হচ্ছে ফুড ডেলিভারি ম্যানের চাকরি।  বলা হচ্ছে আফগানিস্তানের সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ সাদাতের কথা।  জীবনের গল্পটা অন্যরকম ছিল তার।  কিন্তু নিজ দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা পাল্টে দিয়েছে সেই গতিপথ।
ভবিষ্যতের আশায় গত ডিসেম্বরে আফগানিস্তানের মাটি ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন জার্মানিতে। তবে বাস্তবতার কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন তিনি। এক সময়ের আফগান সরকারের গুরু দায়িত্ব পালনকারী এ মানুষটি এখন বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছেন।
সংবাদমাধ্য আল জাজিরা জানায়, বর্তমানে জার্মানির পূর্বাঞ্চলের শহর লিপজিগে বসবাস করছেন সৈয়দ সাদাত। শহরটির অলিগলিতে হরহামেশাই দেখা মেলে আফগান সরকারের সাবেক এ মন্ত্রীর। ২০১৮ সালে দায়িত্ব ছাড়েন তিনি। পরে আরও দুই বছর তিনি আফগান সরকারের সঙ্গে কাজ করেন।
তিনি বলেন, তার কাজের জন্য পরিবারের লোকজন সমালোচনা করলেও তার কাছে কাজ কাজই।
ব্রিটিশ-আফগান দ্বৈত নাগরিকত্ব পাওয়া সৈয়দ সাদাত আরও বলেন, এ কাজের জন্য আমার কোনো অনুতাপ নেই। সাদাত বলেন, আমি আশা করি আফগানিস্তানের অন্য রাজনীতিকরাও একই পথ অনুসরণ করবেন, পালিয়ে না থেকে বরং মানুষের সঙ্গে কাজ করবেন তারা।
তালেবান ক্ষমতা দখলে নেয়ার পর আফগানিস্তানের পুরো চিত্রই পাল্টে গেছে। সৈয়দ সাদাতের পরিবারের সদস্য, বন্ধু বান্ধবরাও দেশ ছাড়তে ইচ্ছুক।
জার্মানির অভিবাসন ও শরণার্থীবিষয়ক কেন্দ্রীয় দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার ঠিক আগে এ বছরের শুরুতে আফগান আশ্রয় প্রার্থীর সংখ্যা ১৩০ শতাংশ বেড়ে গেছে দেশটিতে।
তার দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকায় তিনি চাইলে যুক্তরাজ্যেও যেতে পারতেন, যেখানে তিনি তার জীবনের সবচেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছেন। কিন্তু তিনি ২০২০ সালে পুনরায় জার্মানিতেই পুনর্বাসিত হন।
আইটি ও টেলিযোগাযোগ বিষয়ে ডিগ্রি থাকায় সাদাত জার্মানিতেই থাকতে চেয়েছিলেন ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে। কিন্তু বহু চেষ্টা করেও তিনি তার শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা অনুযায়ী চাকরি পাননি।
তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত কিছু করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সে সুযোগ হয়নি কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ভাষা শেখাটা এখানে খুব জরুরি। প্রতিদিন তিনি ৬ ঘণ্টার ফুড ডেলিভারির কাজে যাওয়ার আগে চার ঘণ্টা ধরে একটি স্কুলে জার্মান ভাষা শিখছেন।
ফুড ডেলিভারি কাজ শুরু করতে প্রথমে একটু কষ্টই করতে হয়েছে তাকে। তবে এখন ভালই লাগে সৈয়দ সাদাতের। তিনি বলেন, যতই আপানি বাইরের মানেুষের সঙ্গে মিশবেন ততই শিখতে পারবেন।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ