কৃষি আইন বাতিল করে ক্ষমা চাইলেন মোদি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করছিলেন ভারতের কৃষকরা। তাদের দাবি বাতিল করতে হবে ‘বিতর্কিত’ কৃষি আইন। অবশেষে আন্দোলনের মুখে হার মানলো বিজেপি সরকার। তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আবার এরজন্য চেয়েছেন ক্ষমাও।
আজ শুক্রবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নরেন্দ্র মোদি বলেন, আমি দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমাদের হয়তো তপস্যাতেই খামতি ছিল। তাই কৃষি আইন প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এ মাসে শুরু হতে চলা সংসদ অধিবেশনে আইনগুলো প্রত্যাহার করা হবে।
এবার জেনে নেয়া যাক কি ছিল এই তিন কৃষি আইনে।
ভারতীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, প্রথম আইনটি হচ্ছে, ফারমার্স প্রোডিউস ট্রেড অ্যান্ড কমার্স (প্রোমোশন অ্যান্ড ফেসিলিটেশন) অ্যাক্ট, ২০২০। যেখানে বলা হয়েছে, বড় ব্যবসায়ী বা বেসরকারি সংস্থা চাইলে সরাসরি চাষীর কাছ থেকে কৃষিজ পণ্য কিনতে পারবে। সরকারের যুক্তি, এর ফলে কৃষকরা বাজারের সর্বোচ্চ মূল্য পাবেন। কিন্তু কৃষকদের দাবি, এভাবে বাজারের নিয়ন্ত্রণ ব্যবসায়িক সংস্থার হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে।
দ্বিতীয় আইনটি হল, ফারমার্স (এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড প্রটেকশন) এগ্রিমেন্ট অব প্রাইস অ্যাসিওরান্স অ্যান্ড ফার্ম সার্ভিসেস অ্যাক্ট, ২০২০। এই আইন অনুযায়ী কোনও বেসরকারি বাণিজ্য সংস্থা বা খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ সংস্থা চাইলে কৃষকদের কাছ থেকে জমি লিজ নিয়ে সেই জমিতে কৃষিজ পণ্য ফলাতে পারবে। সরকারের যুক্তি ছিল, এতে দেশীয় কৃষিজ পণ্যের চাহিদা বাড়বে। কৃষি পণ্য রপ্তানির পথ প্রশস্ত হবে। কিন্তু কৃষকদের দাবি, এর ফলে তাদের জমি আর তাদের থাকবে না।
তৃতীয় আইনটি হল, এসেনশিয়াল কমোডিটিজ (সংশোধিত) বা অত্যাবশ্যক পণ্য আইন। এই বিল অনুযায়ী চাল, ডাল, গম, ভোজ্য তেল, তৈলবীজ ইত্যাদি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সামগ্রী মজুতের ঊর্ধ্বসীমা বলে কিছু থাকবে না। সরকারের যুক্তি ছিল, এর ফলে ফড়েদের দাপট শেষ হবে। কৃষিক্ষেত্রে বেসরকারি এবং বিদেশি বিনিয়োগও আসবে। কৃষকদের পাল্টা দাবি, এভাবেই অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা ঘুরপথে চলে যাবে বড় ব্যবসায়ীদের হাতে।
২০২০ সালে পাস হওয়া এই তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে সেই বছরের নভেম্বর থেকেই আন্দোলন শুরু করেন কৃষকরা।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ