ভারতে ১১২ মুসলিম নারী ‘নিলামে’, মূল পরিকল্পনাকারী আটক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
ভারতে ১১২ মুসলিম নারী ‘নিলামে’, মূল পরিকল্পনাকারী আটক ভারতশাসিত কাশ্মীরের সাংবাদিক কুরাতুলাইন রেহবার।  ১ জানুয়ারি দেখতে পান, একটি অ্যাপে তার ছবি দিয়ে তাকে বিক্রির জন্য নিলামে তোলা হয়েছে।
‘বুল্লি বাই’ নামের অ্যাপে ১১২ মুসলিম নারীর ছবি প্রকাশ করে তাদের বিক্রির জন্য নিলামে তোলার ঘটনায় ‘মূল পরিকল্পনাকারী’কে আটক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের আসাম থেকে ঘটনার পরিকল্পনাকারীকে আটক করেছে পুলিশ।  তার নাম নীরজ বিষ্ণোই। ২১ বছর বয়সী নীরজ ভোপালে অবস্থিত ভেলোর ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির ছাত্র।  এ ঘটনায় মোট চারজনকে আটক করল পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, গিটহাবে ‘বুল্লি বাই’ অ্যাপটি তৈরির পরিকল্পনায় ছিলেন নীরজ বিষ্ণোই।  পরে তিনিই অ্যাপটি তৈরি করেন।
এর আগে বুধবার (৫ জানুয়ারি) মুম্বাই পুলিশ কমিশনার হেমন্ত নাগরালে বলেন, অ্যাপে মুসলিম নারীদের নিলামে তোলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ভারতে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, আটক দুই তরুণের মধ্যে একজনের বয়স ২০ বছর, আরেকজনের ১৮ বছর।  আটক আরেকজন নারী।  এ ঘটনায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের বিতর্কিত অ্যাপ ‘বুল্লি বাই’ নিয়ে ইতোমধ্যেই ব্যাপক আলোচনা হয়েছে।  অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে এই কাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় চলছে অভিযান।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, শতাধিক নারীকে বিক্রির জন্য ওই অ্যাপে নিলাম ডাকা হয়েছিল।  তাদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের সুপরিচিত অভিনেত্রী শাবানা আজমী, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী পাকিস্তানি তরুণী মালালা ইউসুফজাই, দিল্লি হাইকোর্টের একজন বিচারকের স্ত্রী, ভারতশাসিত কাশ্মীরের সাংবাদিক কুরাতুলাইন রেহবারসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক, অধিকারকর্মী ও রাজনীতিক।
নতুন বছরের প্রথম দিন সাংবাদিক কুরাতুলাইন রেহবার দেখতে পান, ‘বুল্লি বাই’ অ্যাপে ছবি দিয়ে তাকে বিক্রির জন্য নিলামে তোলা হয়েছে।  সেখানে তার অনুমতি ছাড়াই ব্যবহার করা হয়।
‘বুল্লি বাই’ অ্যাপে নিজের ছবি দেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শনিবার (১ জানুয়ারি) রাতে প্রতিবাদ জানিয়েছেন কয়েক ডজন মুসলিম নারী।  এর মধ্যে রয়েছেন ভারতের নয়াদিল্লিতে অবস্থানরত সাংবাদিক ইসমত আরা।  তিনি দিল্লি পুলিশের কাছে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মুসলিম নারীদের হয়রানি ও অবমাননার অভিযোগে মামলা করেছেন।
অ্যাল্টনিউজের সাংবাদিক মোহাম্মদ জুবায়ের আল-জাজিরাকে বলেন, মুসলিম নারীদের অবমাননা করতে অশ্লীল শব্দ হিসেবে স্থানীয় পর্যায়ে ‘বুল্লি’ ও ‘সুল্লি’ ব্যবহার করা হয়।  এবার পাঞ্জাবি ভাষায় ব্যবহার করা হয়েছে ‘বুল্লি বাই’।  এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে ইংরেজি প্রতিশব্দ।
তবে অভিযোগ পেয়ে ‘বুল্লি বাই’ অ্যাপটি বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
প্রসঙ্গত, মুসলিম নারীদের বিক্রি করতে ‘বুল্লি বাই’ অ্যাপটি সম্প্রতি তৈরি করা হয়।  এর আগে একই ধরনের একটি অ্যাপ ব্লক করা হয় ভারতে।  অ্যাপটির নাম ছিল ‘সুল্লি ডিলস’।
‘বুল্লি বাই’ বা এই ধরনের অন্য অ্যাপে আক্ষরিক অর্থে নারীদের বিক্রি করা হয় না।  মুসলিম নারীদের হয়রানি করতেই এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ