সংসারে অশান্তি, সমাধানে স্বামী ভাগাভাগি

বিচিত্র বিশ্ব ডেস্ক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
ভারতে একই ব্যক্তিকে বিয়ে করেছেন দুই নারী। এ নিয়ে তাদের সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয়। পরে বিষয়টি মিটমাট হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের জন্য তারা সপ্তাহের ৭ দিন ভাগ করে নিয়েছেন। চুক্তি হয়েছে দুই স্ত্রীকে আলাদা দুই বাড়িতে রাখবেন। সপ্তাহের ৭ দিনের মধ্যে প্রতি স্ত্রীর বাড়িতে তিনি থাকবেন তিনদিন করে। বাকি একদিন তিনি তার পছন্দমতো স্ত্রী বেছে নিতে পারবেন।
গোয়ালিয়র শহরে পারিবারিক আদালতের একজন আইনজীবী এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে কাউন্সেলর এবং আইনজীবী হরিষ দিওয়ান এই চুক্তিকে হিন্দু আইনের অধীনে বেআইনি বলে মন্তব্য করেছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি।
ওই ব্যক্তি পেশায় একজন ইঞ্জিনিয়ার। তিনি বিয়ে করেছেন দুই নারীকে। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি প্রকাশ হলেও দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি ছিল রহস্যে ঘেরা। তিনি করোনা মহামারির সময় প্রথম স্ত্রীকে গোয়ালিয়রে ফেলে চলে যান গুরুগ্রামে। সেখানে একজন নারী সহকর্মীর সঙ্গে বিবাহের চুক্তিতে প্রবেশ করেন। ওই ব্যক্তি প্রথমে বিয়ে করেন গোয়ালিয়র ভিত্তিক একজন যুবতীকে ২০১৮ সালে। তারপর দুই বছর একত্রে বসবাস করেন। কিন্তু করোনা ভাইরাস মহামারির সময় তিনি প্রথম স্ত্রীকে শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়ে দেন। নিজে ফিরে যান গুরুগ্রামে।
২০২০ সাল পর্যন্ত তিনি আর প্রথম স্ত্রীর কাছে ফেরেননি। এতে তার স্ত্রীর মধ্যে সন্দেহ জন্মে। ফলে তিনি ছুটে যান ওই ব্যক্তির গুরুগ্রামের অফিসে। জানতে পারেন, একজন সহকর্মীকে বিয়ে করেছেন। এরই মধ্যে একটি মেয়ে শিশুর জন্ম হয়েছে তাদের। ওই ব্যক্তির মুখোমুখি দাঁড়ান প্রথম স্ত্রী। সেখানে অফিসের ভিতরেই তিনি দ্বিতীয় বিয়ের প্রতিবাদ জানান। পরে বিচার চেয়ে পারিবারিক আদালতের মুখোমুখি হন। তার স্বামীকে গোয়ালিয়রে তলব করা হয়। তাকে কাউন্সেল দেয়ার চেষ্টা সত্ত্বেও, তিনি দ্বিতীয় স্ত্রীকে ত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানা।
এ অবস্থায় তার প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রীকে কাউন্সেলিং দেয়া হয়। তারাও বিষয়টি বুঝতে প্রস্তুত নয়। পরে তিনজন মিলে একটি চুক্তিতে উপনীত হন। তাতে বলা হয়, ওই ব্যক্তি প্রতি স্ত্রীকে সপ্তাহে তিন দিন করে সময় দেবেন। বাকি একদিন রোববার তিনি ইচ্ছেমতো যেকোনো স্ত্রীকে সময় দিতে পারবেন। এমন চুক্তিতে প্রতি স্ত্রীকে একটি করে ফ্ল্যাট দিয়েছেন তিনি। যে বেতন পাবেন তা দুই স্ত্রীর মধ্যে সমভাবে ভাগ হবে। তবে এমন চুক্তির কোনো বৈধতা আছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে আইনজীবী হরিশ দিওয়ান বলেন, ওই তিনজনের সম্মতিতে তাদের মধ্যে এমন চুক্তি হয়েছে। এতে পারিবারিক আদালত বা কাউন্সিলর কারো কোনো ভূমিকা নেই। তারা বলেছেন, তারা এখনও হিন্দু এবং এই আইন অনুযায়ী চলেন। তবে এই চুক্তির কোনো বৈধতা নেই। আইন অনুযায়ী একজন হিন্দু ব্যক্তি তার প্রথম স্ত্রীকে তালাক না দেয়া পর্যন্ত অন্য মেয়েকে বিয়ে করতে পারেন না। কিন্তু তারা তাদের মতো করে জীবন সাজানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ