ধর্মীয় উস্কানির অভিযোগে টিভি সম্পাদক গ্রেফতার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
ভারতের হরিয়ানা রাজ্যর নুহ এবং অন্যান্য জেলায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নিয়ে টুইটারে ‘উস্কানিমূলক’ পোস্ট দেওয়ায় হিন্দি নিউজ চ্যানেল ‘সুদর্শন’ এর সম্পাদককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সম্পাদক মুকেশ কুমারকে গুরুগ্রামের সেক্টর ১৭ থেকে শুক্রবার (১১ আগস্ট) গ্রেফতার করা হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
সুদর্শন চ্যানেল প্রথমে দাবি করেছিল, মুকেশ কুমারকে কিছু দুর্বৃত্ত অপহরণ করেছে। তবে গুরুগ্রাম পুলিশ তাঁকে সাইবার অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার করার বিষয়টি পরে জানিয়েছে।
গত ৩১ জুলাই মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ নুহতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) র‌্যালিতে হামলার পর সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে দুজন হোম গার্ড ও একজন ধর্মগুরু ছিলেন। এরপরই সেখানে ছড়িয়ে পড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা।
ওই সময় মুকেশ কুমার টুইট করেছিলেন, কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা নিউজ চ্যানেলের চাপের কারণে গুরুগ্রাম পুলিশ ‘হিন্দু অধিকার কর্মীদের’ বিরুদ্ধে কাজ করেছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিদেশি মিডিয়া গুরুগ্রামের পুলিশ কমিশনার কালা রামচন্দ্রনকে দাঙ্গার বিষয়ে হিন্দুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছে।
গুরুগ্রাম পুলিশ মুকেশ কুমারের পোস্টটিকে ‘ভিত্তিহীন, মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর’ বলে অভিহিত করেছে। এরপর তথ্যপ্রযুক্তি আইনে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করেছে।
এফআইআরের পর সুদর্শন নিউজ জানিয়েছে, মুকেশ কুমার হিন্দু অধিকার কর্মীদের সাহায্য করতে মেওয়াতে গিয়েছিলেন। এরপর গুরুগ্রামের সেক্টর-১৭ এলাকায় তাঁর গাড়ি থেকে দুর্বৃত্তরা তাঁকে অপহরণ করে।
চ্যানেলটি টুইট করে, এই গ্রেফতার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং ভুল। সুদর্শন নিউজ মুকেশ কুমারের পাশে রয়েছে এবং এই গ্রেফতারকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ বলে মনে করে।
এদিকে সুদর্শন নিউজের এডিটর-ইন-চিফ সুরেশ চাভাঙ্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি দীর্ঘ পোস্টে মুকেশ কুমারের গ্রেফতার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
চাভাঙ্কে টুইটারে লিখেছেন ‘পুলিশ কেন ইউনিফর্মে মুকেশ কুমারকে গ্রেফতার করেনি? হরিয়ানা সরকার কি একজন অফিসারের অহংকারের কাছে মাথা নত করছে? সাংবাদিক এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো কোথায়?’
মুকেশ কুমারকে মুক্তি না দিলে ‘বড় ঘোষণা’ দেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘আসুন দেখি কোন হিন্দু পুরুষ আমাদের সঙ্গে আছে’।
এর এক ঘণ্টা পর তিনি আবার দাবি করেন, মুকেশ কুমারকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তবে গুরুগ্রাম পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে নুহতে মোবাইল ইন্টারনেট এবং এসএমএস পরিষেবার স্থগিতাদেশ রবিবার (১৩ আগস্ট) পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সহিংসতার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৯৩ জনকে গ্রেফতার এবং ১১৮ জনকে প্রতিরোধমূলক আটক করা হয়েছে।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ