সীমান্তে ‘অপরাধ’ বন্ধে সম্মিলিত উদ্যোগ চায় ভারত

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের পর সীমান্ত হত্যা বন্ধের পাশাপাশি স্পর্শকাতর ওই এলাকায় যে কোনো মূল্যে ক্রাইম বা অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সম্মিলিত উদ্যোগ চেয়েছেন ঢাকা সফররত দিল্লির বিদেশমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর।  তার মতে, উভয়ের অভিন্ন চাওয়া এমন হওয়া উচিত নো ক্রাইম নো ডেথ।  জয়শঙ্কর বলেন, আমি নিশ্চিত যদি আমরা একসঙ্গে এমন চিন্তা করতে পারি তাহলে সীমান্তে হত্যা বা মৃত্যুর মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধ কার্যকরভাবেই সম্ভব।  একটি মৃত্যুও গ্রহণযোগ্য নয় মন্তব্য করে তিনি বর্ডারকে ক্রাইম ফ্রি করার ওপর জোর দেন।  জয় শঙ্কর বলেন, আমরা একসঙ্গে সীমান্ত হত্যা বন্ধে সফল হবো- এ বিষয়ে আমাদের আলোচনা চলছে।
বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর রমনাস্থ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে শেষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী।  সেখানে তারা সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার পথ ও পন্থাগুলো নিয়ে কথা বলেন।  ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে তার দেশ বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
জয়শঙ্কর বলেন, বাংলাদেশ আমাদের কাছে শুধু একজন প্রতিনিধি না বরং সারাবিশ্বের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অংশীদার।
এ দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং মুজিববর্ষ আমাদের দেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।  আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে অনেক অগ্রগতি হয়েছে।  আমাদের সম্পর্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আমরা শুধু আলোচনার মাধ্যমেই যেকোনো সংকটের সমাধান করতে পারি।  এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে নিরাপত্তা, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, বাণিজ্য, পারস্পরিক সম্পর্কোন্নয়নসহ দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।  উন্নয়নশীল দেশের স্ট্যাটাস পাওয়ায় বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানান এস জয়শঙ্কর।  বলেন, বাংলাদেশ সম্পূর্ণ নিজের কাজ ও যোগ্যতায় এটি অর্জন করেছে।  তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে নিশ্চয়তা দিতে চাই যেকোনো পরিস্থিতিতে ভারত বাংলাদেশের পাশে থাকবে।  আর এ দুদেশের মধ্যে উন্নয়নকে কেন্দ্র করে অনেক সম্ভাবনা আছে।  সেটা খুঁজে বের করতেই এ সফরে আসা।  তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে ভারত সরকার যে আশ্বাস দিয়েছিল সেই অবস্থানের পরিবর্তন হবে না বলেও জানান তিনি। 

সকাল ১০ টার দিকে ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে দিল্লি থেকে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।  বিএএফ বাশার ঘাঁটিতে তাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।  দিল্লির বিদেশমন্ত্রক আগেই জানিয়েছে, গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে এস জয়শংকর ঢাকা সফর করছেন। 

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামি ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকায় আসবেন।  তার সফর চূড়ান্তকরণও জয়শঙ্করের সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য।  তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এ নিয়ে আজই আলোচনা করবেন।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ