লকডাউন: গ্যাস-বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহে বিশেষ কমিটি

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
লকডাউনে জরুরি সেবা হিসেবে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ কমিটি করা হচ্ছে।  আগামীকাল এ বিষয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছে বিদ্যুৎ এবং গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো।  তারা বলছে লকডাউনে অন্যসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও চালু রাখা হচ্ছে শিল্প কারখানা।  শিল্পে জ্বালানি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এই উদ্যোগ নিতে হচ্ছে।  এছাড়া লকডাউনে সাধারণ মানুষ সবাই ঘরে থাকবেন।  এই সময়ে সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন না রাখলে গরমে পরিস্থিতি বিরক্তিকর পর্যায়ে চলে যাবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন ২৪ ঘণ্টা সেবা দিতে যেসব টিম কাজ করতে তাদের রিশিডিউল করে কাজে রাখা হবে।  যাতে কোনওভাবেই গ্যাস ও বিদ্যুতের সেবা ব্যহত না হয়।  লকডাউনে মানুষের চলাচল সীমিত থাকবে।  এই সময়ে কিভাবে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানির সেবাদানকারী কর্মীরা সহজে চলাচল করতে পারে তার উপায় বের করা হচ্ছে।  গত বছরের অভিজ্ঞতা এবার কাজে লাগানো হবে।  একই সঙ্গে যেসব কর্মী কাজের জন্য বাইরে থাকবে তাদেরও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি (ডিপিডিসি) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, আমরা গতবারের মতোই ব্যবস্থা নেব।  মনিটরিং এর জন্য বিশেষ কমিটি করা হবে। এর সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা সেবা দিতে তো সব সময়ই আমাদের টিম ছিল।  সেই টিমকে কিভাবে শক্তিশালী ও আরও কার্যকর করা যায় তার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।  এদিকে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কমিয়ে আনতে হবে জনবল।  ফলে এসব বিবেচনা করেই আমরা ব্যবস্থা নেব। তিনি বলেন, প্রি পেইড মিটার ভেন্ডিংয়ের জন্য নির্ধারিত বুথ রাখা হবে।  এরপরও যদি কারও বিদ্যুতের সমস্যা হয় তাহলে আমাদের জরুরি নাম্বার ১৬১১৬ তে কল দিয়ে সমস্যা জানালে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী ইকবাল মো. নুরুল্লাহ বলেন, লকডাউন শুরু হলেও খোলা থাকছে শিল্প কারখানা।  ফলে সেখানে সেবার যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য আমরা আলাদা কমিটি করার পরিকল্পনা করছি।  পাশাপাশি আবাসিকসহ অন্য গ্রাহকদের সেবা দিতে আমাদের টিম যেমন থাকে তেমনই থাকবে।  আমাদের যেহেতু লোকবল কমাতে হবে।  সে হিসেব করে আমরা আলাদা টিমও করবো যাতে করে গ্রাহকদের কোনওরকম সমস্যা না হয়। তিনি বলেন, আমাদের স্থানীয় অফিসগুলোও খোলা থাকবে। সেখানে যোগাযোগ করলে যাতে দ্রুত সেবা দেওয়া হয় সে বিষয়েও আমরা নির্দেশনা দিচ্ছি।
গতবছরের লকডাউনের সময় বিদ্যুৎ জ্বালানির সেবা স্বাভাবিক রাখতে কর্মকর্তাদের শিডিউল করে প্রতিদিনই কাজ ভাগ করে দেয়া হয়। এতে নিরবচ্ছিন্ন ছিল গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ। তবে লকডাউনের মধ্যে অফিস আদালত বন্ধ থাকায় চাহিদা এখনকার তুলনায় কম থাকবে বলে ধারনা করছে বিতরণ কোম্পানিগুলো। এতে সরবরাহ পরিস্থিতি বিঘ্নিত হবার কোনও আশঙ্কা নেই বলে মনে করা হচ্ছে।
এখন গরম বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা থাকছে গড়ে ১৩ হাজার মেগাওয়াট। পিডিবির হিসেবে চাহিদার পুরাটাই সরবরাহ করা হচ্ছে। লোডশেডিং হচ্ছে না কোথাও।  অন্যদিকে গ্যাসের চাহিদা তিন হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুটের বিপরীতে আজ সরবরাহ করা হয়েছে দুই হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট।  তবে লকডাউনে গ্যাসের চাহিদা খুব কম হবে না।  কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে সব শিল্প কারখানাই সচল থাকবে। এতে বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের চাহিদা কমবে না।
পিডিবির পরিচালক (জনসংযোগ) সাইফুল হাসান চৌধুরী বলেন, যেহেতু শিল্প কারখানা চালু থাকবে সেহেতু চাহিদা খুব একটা কমবে না।  যদি কমে তাহলে সব বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানো হবে না।  সেক্ষেত্রে কোন কোন কেন্দ্র চালানো হবে সেটির একটি শিডিউল করা হবে।  পাশাপাশি গতবারের মতো তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন কমিয়ে আমরা চেষ্টা করবো গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুকেন্দ্রগুলো বেশি করে চালাতে।  সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ি লোকবল কমাতে বলা হলেও আমাদের সেটির প্রয়োজন হবে না।  কারন আমরা ২৪ ঘন্টাই রোস্টার করে কাজ করি।  সবাই একসঙ্গে মাঠে কাজ করে না।  তারপরো প্রয়োজনে নতুন করে রোষ্টার করে, সিডিউল করে কে অফিস করবে, কে করবে না তার তালিকা করা হবে।

ডিসি/এসআইকে/এমএনইউ