শর্ত দিয়ে ক্লাসে ফিরছেন চবি চারুকলার শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবিতে চলমান আন্দোলন স্থগিত করে শ্রেণিকক্ষে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চবির চারুকলার শিক্ষার্থীরা। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে দাবি আদায়ের কোনো অগ্রগতি দেখা না গেলে পুনরায় আন্দোলনে নামবেন তারা ।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঙ্গে রবিবার (২২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে আন্দোলনের ৮২তম দিনে এই ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতিনিধিও ছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে স্নাতকোত্তর বর্ষের শিক্ষার্থী মো. শহীদ জানান, ‘জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম নাছির উদ্দিন আমাদের ক্যাম্পাসে এসেছেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতিনিধিও ছিলেন। আমাদের অনেকক্ষণ আলোচনা হয়েছে। তারা আমাদের জানিয়েছেন চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবির বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে লিখবেন। জেলা প্রশাসক নিজ উদ্যোগে কাজ করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। আমরা তাদের আশ্বাসের ভিত্তিতে আন্দোলন স্থগিত করে শ্রেণিকক্ষে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছি’।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শর্ত দিয়েছি, আমরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস করব না, আমরা চারুকলা প্রাঙ্গণে খোলা মাঠে ক্লাস করব। শ্রেণি কার্যক্রমের ফেরার জন্য আমাদের আবাসিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষক ক্লাব অপসারণ করে সেখানে মেয়েদের আবাসন ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দেয়া হয়েছে। ক্যান্টিন ও শৌচাগারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তর প্রক্রিয়া চলমান থাকতে হবে’।
শহীদ বলেন, ‘এক সপ্তাহের মধ্যে যদি আমাদের দাবির বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া না হয় তবে আমরা পুনরায় আন্দোলনে ফিরে যাবো’।
সহকারী প্রক্টর মুহাম্মদ ইয়াকুব বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা সাতদিনের সময় দিয়েছে। আজকে থেকেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। আমাদের প্রকৌশল দপ্তর থেকে লোক সেখানে গেছে। স্থানান্তরের বিষয়ে সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জেলা প্রশাসক চিঠি দিবে বলেছেন। পাশাপাশি তাদের আর যে দাবি-দাওয়া ছিল সেটা নিয়ে আজ থেকে কাজ শুরু হয়ে যাবে’।
এর আগে ২০২২ সালের ২ নভেম্বর থেকে ২২ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ও ক্লাস বর্জন শুরু করেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন দাবি মানতে ইতিবাচক সাড়া দিলেও পরে ২২ দফা দাবি হঠাৎ মূল ক্যাম্পাসে ফেরার এক দফা দাবিতে রূপ নেয়।
শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, মূল ক্যাম্পাস ছাড়া তাদের এই ২২ দফা দাবির সবগুলো পূরণ করা সম্ভব নয়। এর বাইরে ১২ বছর ধরে দৃশ্যমান কোনো সংস্কার কিংবা অগ্রগতি তারা দেখেননি। তাই মূল ক্যাম্পাস বিচ্ছিন্ন তারা আর থাকতে চান না। এক দাবিতেই গত ৮২ দিন ধরে তারা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যান। সর্বশেষ আন্দোলনের বিষয়ে শনিবার শিক্ষার্থীদের সাথে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রী।

ডিসি/এসআইকে/সিআর