ডেঙ্গু ও ক্যান্সার রোধ করতে পেঁপে পাতার রস খাবেন যেভাবে…

লাইফস্টাইল ডেস্ক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
কাঁচা বা পাকা পেঁপে খেতে সুস্বাদু।  কাঁচা পেঁপের যেমন স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে; তেমন পাকা পেঁপেরও আছে।  পেঁপেতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদানসমূহ।  পেঁপে গাছের প্রায় প্রতিটি অংশই রোগ নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়।  এর মধ্যে পেঁপে গাছের পাতা অন্যতম।
অনেকেই হয়তো জানেন, পেঁপে পাতার রস রক্তের প্লাটিলেট বাড়াতে সাহায্য করে।  সাধারণত ডেঙ্গু হলে রক্তের প্লাটিলেট সংখ্যা কমতে শুরু করে।  তখন পেঁপে পাতার রস খাওয়ালে প্লাটিলেট সংখ্যা বাড়তে থাকে।
পেঁপে পাতায় আছে পাপাইন এবং সায়মোপাপাইন নামক এনজাইম। যা পাকস্থলির সুস্থতায় কাজ করে।  বদহজম, পেট ফাঁপাসহ হজম সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যায় কার্যকরী।  এতে ভিটামিন এ, সি, ই, কে এবং বি আছে।
ইঁদুরের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁপে পাতার নির্যাসে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রক্তে থাকা শর্করার প্রভাবকে কমিয়ে দেয়।  এটি অগ্ন্যাশয়ের ইনসুলিন উত্পাদনকারী কোষগুলোকে ক্ষতি হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে।
জেনে নিন পেঁপে পাতার আরও স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে-
>> পেঁপে পাতার চা নিয়মিত পান করলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, পেট ফাঁপা এবং বদহজম থেকে মুক্তি মেলে।  পেঁপে পাতায় ফাইবার থাকে; যা পাকস্থলির কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।  এতে থাকা প্রোটিন এবং অ্যামিনো অ্যাসিড হজম করার জন্য বড় প্রোটিনকে ছোট এবং সহজে বিভক্ত করতে পারে।
>> পেঁপে পাতার রস খেলে বা ব্যবহার করলে পেশীর ব্যথাসহ জয়েন্টের ব্যথা কমতে শুরু করে।  সমীক্ষায় দেখা গেছে, পেঁপে পাতার নির্যাস বাতজনিত ইঁদুরের শরীরের প্রদাহ এবং ফোলাভাব কমিয়েছে।
>> মাথার স্ক্যাল্পে পেঁপে পাতার রস ব্যবহারে চুল বাড়ে এবং চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে।  গষেণায় দেখা গেছে, শরীরে উচ্চমাত্রায় অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থাকলে চুল পড়তে থাকে।  তাই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবারের মাধ্যমে শরীরের ক্ষতিকর অক্সিডেটিভ স্ট্রেসকে কমানো যেতে পারে।  এতে চুল বড়ও হয় দ্রুত।
>> পেঁপে পাতার রসে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য আছে; যা ম্যালাসেজিয়া নামক খুশকি সৃষ্টিকারী ছত্রাককে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। 
>> পেঁপে পাতার রস মুখে ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বক কোমল ও উজ্জ্বল হয়।  এতে থাকা পাপাইন নামক এনজাইম এক্সফোলিয়েন্ট হিসেবে কাজ করে।  এটি ত্বকের গভীরে থাকা ময়লা ও মৃত কোষ দূর করে।  ব্রণও কমাতে পারে এ পাতার রস।
>> ক্যান্সার প্রতিরোধেও ব্যবহৃত হয় পেঁপে পাতার রস।  আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় এটি ব্যবহার করা হয়।  গবেষণাগারে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, প্রস্টেট এবং স্তন ক্যান্সারের কোষগুলোর বৃদ্ধি ঠেকাতে শক্তিশালী ক্ষমতা দেখিয়েছে পেঁপে পাতা।
যেভাবে খাবেন: কিছু পরিষ্কার পেঁপে পাতা এবং পানি নিন।  এবার পাতাগুলো ছোট ছোট করে কেটে ব্লেন্ড করুন।  এরপর ছেঁকে রসটুকু খেতে পারেন।  ডেঙ্গুর লক্ষণ রয়েছে এমন রোগীকে তিন বেলা মোট ১০০ মিলিলিটার রস খাওয়ানো যাবে।  তেঁতো স্বাদ লাগলে এর মধ্যে মধু বা লবণ মিশিয়ে খেতে পারেন।
এ ছাড়াও শারীরিক সুস্থতায় পেঁপে পাতা নানাভাবে ব্যবহার করা যায়।  যেমন- চা হিসেবে এর পাতা পানিতে ফুটিয়ে পান করা যায়, এ পাতা ব্লেন্ড করে রস ছেঁকে পান করা যেতে পারে।  বিভিন্ন ওষুধের দোকানে পেঁপে পাতার ক্যাপসুলও পাওয়া যায়।  সেগুলোও খেতে পারেন।  এ ছাড়াও পেঁপে পাতা ভালো করে শুকিয়ে গুঁড়ো করে সংরক্ষণ করে প্রতিদিন পানিতে গুলিয়ে খাওয়া যায়।

ডিসি/এসআইকে/এমএনইউ