তুরস্ক-বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক গভীরে : প্রধানমন্ত্রী

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
অভিন্ন বিশ্বাস, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ওপর ভিত্তি করে তুরস্ক ও বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক গভীরে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে তুরস্কের আঙ্কারায় নবনির্মিত বাংলাদেশ চ্যান্সেরি কমপ্লেক্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তিনি একথা বলেন।  বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন এবং তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চোভুসৌলো আঙ্কারায় কমপ্লেক্স উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
উভয় দেশের জনগণের স্বার্থে তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  তিনি বলেন, ‘আমি জেনে আনন্দিত যে, তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবেন।  আমি তাকে স্বাগত জানাই।  আপনি কখন আসবেন আমরা সেই অপেক্ষায় থাকব’।
‘খুব শিগগিরই’ ঢাকায় তুরস্কের নবনির্মিত দূতাবাস ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশাপাশি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তায়িপ এরদোয়ানকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান শেখ হাসিনা।  তিনি বলেন, ‘আমি আনন্দিত হব যদি তুর্কির প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফর করেন।  দয়া করে আমার শুভেচ্ছা ও আমন্ত্রণের বার্তা প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডির কাছে পৌঁছে দেবেন’।
তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিন এরদোয়ানের বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার মনে আছে রোহিঙ্গারা যখন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল তখন ফার্স্ট লেডি আমার মনে হয় তিনি প্রথম যিনি কক্সবাজার পরিদর্শন করেছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ, দুইজনকেই আমার আমন্ত্রণ’।
তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়ার কথা তুলে ধরে ২০১২ সালের ১৩ এপ্রিল দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের আমন্ত্রণে আঙ্কারা সফরের কথা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।  তিনি বলেন, ‘আমাদের দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক শুরু হয়েছিল ১৯৭৪ সালে, প্রায় ৫০ বছর আগে।  অবশ্য আমাদের সম্পর্কের সূচনা ত্রয়োদশ শতক থেকেই, যখন তুর্কি জেনারেল ইখতিয়ারউদ্দীন মুহাম্মদ বখতিয়ার খিলজী বাংলা বিজয় করেন’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ অর্জনের লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশে আরও অনেক কূটনৈতিক অফিস প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বৈশ্বিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করবে বাংলাদেশ।  আঙ্কারায় এই স্থায়ী দূতাবাস কমপ্লেক্স তুরস্কের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কোন্নয়নে বাংলাদেশের অগ্রাধিকারকেই প্রকাশ করে’।
দুই বছরেরও কম সময়ে এই চ্যান্সেরি কমপ্লেক্স নির্মাণ হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।  কমপ্লেক্সে একটি সুন্দর মিলনায়তনসহ সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
নবনির্মিত দূতাবাস কমপ্লেক্সে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ মূর্তি এবং একটি শহীদ মিনার থাকার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।  বক্তব্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এবং এর প্রভাব মোকাবেলায় সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।  বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠানোয় তুরস্কের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন তিনি।
রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকার জন্য তুরস্কের সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আপনারা যে-ই সমর্থন দিয়েছেন, আমরা সেই সমর্থনের জন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।  কিন্তু আমি মনে করি, প্রায় তিন বছর হয়ে গেছে তাই রোহিঙ্গাদের তাদের নিজেদের দেশে ফিরে যাওয়া উচিত।  তুর্কি সরকার এই ইস্যুতে ভূমিকা রাখতে পারে’।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ