নতুন বই পেলে তারা অনেক আনন্দ পায় : প্রধানমন্ত্রী

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
বছরের শুরুতে ছেলে-মেয়েদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে পারলে তারা অনেক আনন্দ পায় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  তিনি বলেন, ‘এজন্য আমাদের চেষ্টা ছিল যেকোনো পরিস্থিতিতেই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়া’।
বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০২১ শিক্ষাবর্ষের বই বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধাপে ধাপে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।  এছাড়া নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে যারা বই বিতরণের এই কাজটি সফলভাবে করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।  তিনি বলেন, ‘গত ১০ বছর ধরে বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হচ্ছে।  তার আলোকে চলতি বছর প্রথমিক পর্যায়ে ২৪ কোটি ১০ লাখ ৭৯ হাজার ৮৫৭টি এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৮২ হাজার ৫৫৫টি বই বিতরণ করা হবে।  করোনা পরিস্থিতির মধ্যে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাতে বৃত্তি ও উপবৃত্তির অর্থ পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছি।  তারা যাতে কোনোভাবে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত না হয় সে বিষয়টাকে আমরা বেশি গুরুত্ব দিয়েছি।  পরবর্তীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে সে সিদ্ধান্ত থেকে আমরা পিছিয়ে এসেছি’।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।  শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে না পেরে বাসায় বসে অনেক কষ্ট পাচ্ছে।  শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে রাখতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ক্লাস কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।  বাসায় বসে ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করার সুযোগ পাচ্ছে’।
সরকার প্রধান বলেন, ‘দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর এক ধরনের মানসিক চাপ তৈরি হয়েছে।  সে কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিয়ে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের স্বাভাবিক করে তোলা হবে’।
যুগোপযোগী শিক্ষার জন্য শিক্ষক প্রশিক্ষণ জরুরি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কারিগরি শিক্ষাকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে এ শিক্ষাকে যুগোপযোগী করতে কাজ করে যাচ্ছি।  নতুন নতুন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হচ্ছে।  মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক করা হচ্ছে’।
শুধু পাঠ্য বইয়ের উপরে নির্ভরশীলতা নয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সহায়ক বই পড়তে হবে।  বাবা-মাকে তাদের সন্তানদের সময় দিতে হবে’।  তাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য নিয়মিত খেলাধুলা ও ব্যায়াম করানোর পরামর্শ দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, দুই মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আফছারুল আমীন ও মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বই বিতরণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩০০ জন শিক্ষার্থী ও সেসব স্কুলের একাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।  প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি বেশকিছু শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দেন।  এ সময় শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ