এপ্রিল-মে মাসে বইমেলা, দ্বিমত প্রকাশকদের

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
শারীরিক উপস্থিতিতেই আগামী এপ্রিল-মে মাসে সরকারের পক্ষ থেকে অমর একুশে গ্রন্থমেলা আয়োজনের চিন্তা-ভাবনা চলছে।  তবে প্রকাশকরা চান ফেব্রুয়ারির শেষ বা মার্চের শুরুর দিকে করা হোক।  তবে এই দেন-দরবার মিটবে আগামী ১৭ জানুয়ারি বাংলা একাডেমির বৈঠকে।  এদিন জানা যাবে কবে বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে।  সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানতে চাইলে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল মান্নান ইলিয়াস বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে।  ইচ্ছা থাকলেও তো সব কিছু করা যায় না।  তাই পিছিয়ে বই মেলা করতে হবে সবার নিরাপত্তার কথা ভেবে।  মার্চ মাসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান থাকে।  তাছাড়া করোনার কারণে সে সময়ও বৃহৎ জনসমাগম করারও সুযোগ নেই।  তাই পরিস্থিতি বিবেচনা করে পিছিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।  সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের সিদ্ধান্তে সবকিছু ঠিক হবে।  তবে যাই সিদ্ধান্ত হোক স্বাস্থ্য নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখেই বইমেলার আয়োজন করা হবে’।
জানতে চাইলে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের কোনও মতামত নেই।  সরকার বা মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত নেবে তাই হবে।  বইমেলা করা বাংলা একাডেমির দায়িত্ব।  কিন্তু জনগণের নিরাপত্তা রক্ষা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।  আগামী ১৭ জানুয়ারি প্রতিমন্ত্রী ব্রিফিং করবেন, দেখা যাক কী বলেন’।
জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘আমরা ফেব্রুয়ারি বইমেলা ফেব্রুয়ারিতেই চাই।  তবে বইমেলা সরকার কবে নিয়ে যাবে সেটা একটা ব্যাপার।  যদি সরকার ফেব্রুয়ারি শেষে অথবা মার্চের প্রথমে শুরু করে, হতেই পারে। জরুরি পরিস্থিতির কারণে এটা কনসিডার করাই যায়।  কিন্তু যদি এমন একটা সময়ে নিয়ে যায় যখন প্রাকৃতিক কারণে মেলা বাধাগ্রস্ত হবে, তাহলে তো আমাদের বলার কিছু থাকবে’।
অমর একুশে গ্রন্থমেলার অন্যতম আয়োজক বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির পক্ষ থেকে গত ৫ জানুয়ারি এক সভায় আবেদন জানানো হয়, ফেব্রুয়ারিতে না পারলেও আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই যেন বইমেলার আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহসভাপতি শ্যামল পাল বলেন, ‘এপ্রিল বা মে মাসে, বিশেষ করে মে মাসে বই মেলা করলে বৃষ্টিতে কোটি টাকার বই নষ্ট হবে।  যে অবকাঠামো দিয়ে বইমেলার স্টল করা হয় তাতে ঝড় বা বৃষ্টিতে বই রক্ষা করা যাবে না।  তাছাড়া ক্রেতাও পাওয়া যাবে না বৃষ্টি হলে।  সে কারণে আমরা চাই মার্চে বই মেলা করা হোক’।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে অমর একুশে গ্রন্থমেলা (বইমেলা) বন্ধ ঘোষণা করা হয়।  এরপর ঘোষণা দেওয়া হয় ভার্চুয়ালি বই মেলা করা হবে।  তাতে আপত্তি জানান প্রকাশকরা। তারা চান ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে বই মেলা শুরু করা হোক।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনার পরিস্থিতি অনুকূলে না আসলে বইমেলা করা হবে না।  সে কারণে আগামী মে মাসে বই মেলা করার একটি চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।  তবে বৃষ্টির বিষয়টি মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সর্বোপরি নির্ভর করবে করোনা পরিস্থিতির ওপর। মার্চ মাসে অনেক অনুষ্ঠান থাকে।  তাছাড়া ওই সময়ে করোনা পরিস্থিতি পুরো অনুকূলে আসার সম্ভাবনা নেই।  ফলে পিছিয়ে বই মেলা করার উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে ভার্চুয়ালি বইমেলা না করার বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করলে জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির বাধার মুখে তা ভেস্তে যায়।  পরে শারীরিক উপস্থিতিতে করা হবে এমন আলোচনা শুরু হয়।

 

ডিসি/এসআইকে/এমএস