প্রতিবন্ধী শনাক্ত, ভাতা ও সুবর্ণ কার্ডের জন্য ঘুষ দিতে হয় : টিআইবি

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
প্রতিবন্ধী ব্যক্তি শনাক্ত, সুবর্ণ কার্ড ও ভাতা দেয়ার ক্ষেত্রে ১০০ থেকে ৩ হাজার হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে।  করোনা ভাইরাস মহামারির সময়ে প্রতিবন্ধী শনাক্তকরণ কার্যক্রমে অনিয়ম ও প্রতিবন্ধীদের ভাতা আত্মসাৎ করার এসব তথ্য উঠে এসেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণায়।
জরিপে সব ধরনের প্রতিবন্ধিতা শনাক্ত না করা, অধিকাংশ জেলা সদর হাসপাতালে প্রতিবন্ধী শনাক্তকরণ কার্যক্রমে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা ‘অনেক ব্যস্ত’ থাকায় প্রতিবন্ধিতা শনাক্ত করতে সময়ক্ষেপণের পাশাপাশি বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) আয়োজিত ‘উন্নয়নে অন্তর্ভুক্তি এবং প্রতিবন্ধিতা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব অভিযোগ তুলে ধরা হয়।  প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন প্রোগ্রাম ম্যানেজার (গবেষণা ও পলিসি) ফারহানা রহমান।  এতে স্বাগত বক্তব্য দেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোনো কোনো সরকারি হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক এবং তার সহকারীদের একাংশের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী শনাক্তকরণ কার্যক্রমে এক থেকে দেড় হাজার টাকা নিয়ম বহির্ভূতভাবে অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।  অধিকাংশ জেলা সদর হাসপাতালে প্রতিবন্ধী শনাক্তকরণ কার্যক্রমে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ‘অনেক ব্যস্ত’ থাকায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।  উপজেলা/শহর সমাজসেবা কার্যালয়ে তথ্যভাণ্ডারে নাম অন্তর্ভুক্ত করতে ক্ষেত্র বিশেষে প্রতিবন্ধিতাসহ ব্যক্তি বা তার নিকট আত্মীয়ের কাছ থেকে ১০০-২০০ টাকা নিয়ম বহির্ভূতভাবে অর্থ আদায় করা হয়।
এছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্য, সচিবালয়, জেলা প্রশাসন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশ তাদের প্রতিবন্ধী নন এমন আত্মীয়স্বজন ও পরিচিতজনদের সুবর্ণ কার্ড দিতে সমাজসেবা কার্যালয়ে তদবির করেন।  যাদের সুবর্ণ কার্ড দেওয়ার কথা নয়, তদবিরের মাধ্যমে তাদেরকে কার্ড দেওয়া হচ্ছে।  ফলে প্রকৃত প্রতিবন্ধিতাসহ ব্যক্তিরা সুবর্ণ কার্ড পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সুবর্ণ কার্ড করার জন্য সমাজসেবা কার্যালয়ে গেলে নাজেহাল হতে হয় বলেও অভিযোগ করেছেন কোনো কোনো সেবাগ্রহীতা।  অনেক সময় সমাজসেবা কার্যালয়ের লোকজন ফরম ছিঁড়ে ফেলেন এবং সার্ভার নষ্ট হওয়ার অজুহাত দেখান।  এমন অভিযোগও আছে যে অতি দরিদ্র প্রতিবন্ধিতাসহ ব্যক্তির কাছ থেকেও কোনো কোনো কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তরা ৪০০-৫০০ টাকা নিয়ম বহির্ভূতভাবে আদায় করেন।
ইউনিয়ন পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিদের একাংশের বিরুদ্ধে সুবর্ণ কার্ডের জন্য এক থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ম বহির্ভূতভাবে অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।  আবার সুবর্ণ কার্ড থাকা সত্ত্বেও সুযোগ-সুবিধা না পাওয়া এবং প্রাপ্য সুবিধা পেতে মধ্যস্থতা করার অভিযোগ রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ