গণমাধ্যম মালিকরা নিজ স্বার্থে সাংবাদিকদের ব্যবহারের চেষ্টা করেন : তথ্যমন্ত্রী

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে শক্তিশালী বানাতে সরকার চেষ্টা করছে। তবে তার মন্তব্য, ‘কেবল সরকারের সদিচ্ছার ওপর শক্তিশালী গণমাধ্যমের বিষয়টি নির্ভর করে না। ব্যবসায়ী ও নিজ স্বার্থে বিভিন্ন গণমাধ্যম মালিকরা সাংবাদিকদের ব্যবহারের চেষ্টা করেন। সভা-সেমিনারে সাংবাদিকদের সঙ্গে যখন কথা বলি তখন তারা এ নিয়ে মুখ খোলেন না। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আলোচনার সময় তারা এই বাধার কথা স্বীকার করেন’।
রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের পদ্মা সম্মেলন কক্ষে মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) বিকালে তিনি এসব কথা বলেন।
‘প্রটেক্টিং ইন্ডিপেন্ডেন্ট মিডিয়া ফর ইফেক্টিভ ডেভেলপমেন্ট’ (প্রাইমড) নামের একটি প্রকল্পের উদ্বোধন উপলক্ষে বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী। গণমাধ্যমের উন্নয়নে এই প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও)।
ডা. হাছান মাহমুদের আশা, প্রকল্পটি সাংবাদিকদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে এবং গণমাধ্যমগুলো অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত চাপ থেকে মুক্ত থাকবে। তার কথায়, ‘আমাদের দেশে অনেকে মনে করেন সুসংবাদ মানে কোনও সংবাদ নয়, খারাপ সংবাদ মানে ভালো সংবাদ। আমি এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করি। যখন একটি দেশ এগিয়ে যায় তখন সেই দেশের মানুষকে আশাবাদী হতে হয়। একটা রাষ্ট্রে ও সমাজে টেকসই উন্নয়ন ও শক্তিশালী গণতন্ত্রের জন্য শক্তিশালী গণমাধ্যম থাকা জরুরি। তাই সরকার তথ্য অধিকার আইন করেছে’।
অনুষ্ঠানে গাজী টিভি ও সারাবাংলা ডটনেট-এর প্রধান নির্বাহী ও প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা উল্লেখ করেন, ‘গণমাধ্যম মানুষের জন্য কাজ করতে পারছে কিনা সেই জায়গায় এই প্রকল্পটি কাজ করবে। মিডিয়ার প্রতি মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে, আবার মানুষ কিন্তু সবশেষে গণমাধ্যমের কাছেই ফিরে যাচ্ছে’।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন মনে করেন, যত বেশি আস্থাযোগ্য জায়গা থেকে তথ্য পাওয়া যাবে, তত মানুষের জীবন আরও উন্নত হবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘তথ্যের ইকো-সিস্টেমের অন্যতম মৌলিক বিষয় হলো নির্ভরযোগ্য অন্তর্ভুক্তিমূলক মুক্ত ও বহুমাত্রিক গণমাধ্যম। এটি কার্যকরী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকারকে সহযোগিতা করে। সোজা কথায় এর মানে হলো, নাগরিকরা যত বেশি তথ্য জানবে তত তারা সরকার যেসব সেবা দেয় এবং যে নীতিতে চলে সেগুলোকে জবাবদিহির আওতায় আনতে পারবে’।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশনের প্রধান নির্বাহী ক্যারোলিনা ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।
জানা যায়, প্রকল্পটির কাজ হবে বাংলাদেশ, ইথিওপিয়া ও সিয়েরা লিওনে। বাংলাদেশের তিন গণমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউন, যমুনা টেলিভিশন ও দৈনিক গ্রামের কাগজ এই প্রকল্পে কাজ করবে। এর মাধ্যমে গণমাধ্যমে সম্পাদকীয় উন্নয়নে প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া হবে।
প্রাইমড প্রকল্পের অংশীদার প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দৈনিক গ্রামের কাগজের সম্পাদক মবিনুল ইসলাম মবিন, যমুনা টেলিভিশনের অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর রোকসানা আনজুমান নিকোল এবং ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের সভাপতি রেজওয়ানুল হক রাজা।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ