খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির কর্মসূচি, রিজভী দিলেন পৃথক ঘোষণা

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে আগামি ২০ নভেম্বর গণঅনশন কর্মসূচি ডেকেছে বিএনপি।  বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) বিকাল পৌনে ৪ টার দিকে ঢাকার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটি ও কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে এই ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
অন্যদিকে প্রায় একইসময়ে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে একা নিজের কক্ষে বসে একই কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার বিকালে গুলশানে যখন দলের অধিকাংশ নীতিনির্ধারক ও জ্যেষ্ঠ নেতার উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন চলছিল, তখনই রুহুল কবির রিজভী আহমেদ সংবাদমাধ্যমে কথা বলেন।
তার পৃথকভাবে কর্মসূচি ঘোষণা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিকাল ৪ টার দিকে দলের স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের মহাসচিব ম্যাডামের মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।  আমরা স্থায়ী কমিটি ও দলের অন্যান্য নেতারা সেখানে ছিলাম। এর বাইরে আমি কিছু জানি না’।
গুলশানে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের বিষয়টি আজ সকালেই দলের চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং এবং নয়াপল্টনের দফতর বিভাগ থেকে জানানো হয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়া বাংলাদেশের মানুষের সবচেয়ে প্রিয়নেতা।  অনতিবিলম্বে তার জীবনরক্ষার জন্য বিদেশে চিকিৎসা নিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।  তার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে আগামি ২০ নভেম্বর ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে এবং সারাদেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে গণঅনশন কর্মসূচি থাকবে।  শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এই অনশন অনুষ্ঠিত হবে’।
ঢাকায় কর্মসূচি পালনে ভেন্যুর অনুমতি না পেলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপি গণঅনশন করবে বলে জানান মহাসচিব।  লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গত ১২ অক্টোবর নতুন উপসর্গ নিয়ে বেগম জিয়া আবারও হাসপাতালে ভর্তি হন।  তার বায়োপসি করা হয়।  ৭ নভেম্বর বাসায় ফেরেন তিনি। বাসায় চিকিৎসা চলাকালে ১৩ নভেম্বর আবারও হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে।  মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে, দেশে তার উন্নত চিকিৎসা সম্ভব নয়। ম্যাডাম এখন যে অবস্থায় আছেন তা সমাধানযোগ্য। কিন্তু চিকিৎসকদের আশঙ্কা, সময়োপযোগী সঠিক ও উন্নত চিকিৎসা না পেলে তিনি এমন এক জায়গায় উপনীত হবেন, যখন কোনো চিকিৎসা আর কাজে আসবে না’।
সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, ব্যারিস্টার শাজাহান উমর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামসহ দলের অন্যান্য নেতা।
রিজভীর পৃথক ঘোষণা
এদিকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে নিজের কক্ষে বসে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘জ্বালানি তেল, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি ও গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামি শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিতব্য মানববন্ধন কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। তার পরিবর্তে গণতন্ত্রের মা, বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে ওইদিন (শনিবার) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত গণঅনশন কর্মসূচি পালিত হবে’।
এর কিছুক্ষণ পর নিজের ঘোষণার সংশোধনী দেন রিজভী, ‘সীমান্তে মানুষ হত্যার প্রতিবাদে আগামি শনিবার (২০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিতব্য মানববন্ধন কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে’। এ প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে রুহুল কবির রিজভীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ