চিকিৎসকদের গবেষণায় সময় দিতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোগীর চিকিৎসার পাশাপাশি গবেষণায় কিছুটা সময় দিতে দেশের স্বনামধন্য চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানে গবেষণা অনিবার্য হওয়ায় চিকিৎসা প্রদানের পাশাপাশি গবেষণা পরিচালনার জন্য আমরা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করছি।
প্রধানমন্ত্রী রবিবার (৯ জানুয়ারি) সকালে দেশের ৮টি বিভাগীয় শহরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৬০ শয্যা বিশিষ্ট হার্ট, কিডনি ও ক্যান্সার চিকিৎসার সমন্বিত ইউনিট স্থাপনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠানে তিনি ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সারাবিশ্বে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ ভাইরাসের নতুন রূপ ‘ওমিক্রন’ থেকে সুরক্ষায় টিকা গ্রহণ এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রোটোকল মেনে চলার জন্যও সবার প্রতি পুনরায় আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ৮টি বিভাগে ৮টি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। সেখানে পোস্ট গ্রাজুয়েশনের পাশপাশি গবেষণায়ও আপনারা মনোযোগী হবেন। এর জন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবো।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, এসব বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য হলো সেখানে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গবেষণা করা। স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের গবেষণা আমাদের জন্য একান্তভাবে অপরিহার্য।
শেখ হাসিনা বলেন, অনেকে ভালো গবেষণা করে যাচ্ছেন। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যারা ভালো ও নামি-দামি চিকিৎসক হয়ে যান, তারা তো চিকিৎসা সেবা দিতেই ব্যস্ত থাকেন! তারা যদি কিছুটা সময় ব্যয় করে গবেষণার দিকে নজর দেন, তাহলে আমাদের পরিবেশ, আবহাওয়া, জলবায়ু সবকিছু মিলিয়ে এ দেশের মানুষের কী কী ধরনের রোগ দেখা দেয় এবং এর প্রতিরোধ শক্তিটা কিভাবে বাড়ানো যায়, সেটার ব্যবস্থা নেয়া যায়।
দেশে ক্যান্সার চিকিৎসায় বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন শুরু হয়েছে উল্লেখ করে এটিকে আরো এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের জনসংখ্যার কথা চিন্তা করেই আমাদের এ ব্যবস্থাটা নিতে হবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সাভারে বায়োটেকনোলজি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বায়োকেমিকেল, বায়োমেডিকেল, বায়োটেকনোলজি, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও অনকোলজি বিষয়ে গবেষণার খুবই প্রয়োজন। এসব বিষয়ের প্রতি চিকিৎসকদের নজর দিতে হবে। কেন আমাদের দেশের মানুষ নানারোগে আক্রান্ত হচ্ছে, সেগুলো খুঁজে বের করতে হবে।
তিনি জানান, আমাদের দেশে ক্যান্সার, কিডনি এবং হার্টের রোগের প্রাদুর্ভাব একটু বেশি দেখা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে তিনি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। খাদ্যাভ্যাস থেকে শুরু করে সব বিষয়ে সবাইকে একটু সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এরই মধ্যে জনগণের নিকট ক্যান্সার চিকিৎসা সহজলভ্য করতে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে হৃদরোগ, কিডনি ও ক্যান্সার রোগের সেবা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন হয়ে আমাদের জনশক্তি গড়ে উঠুক। আর এ অতিমারিকে (করোনা) যেভাবে হোক আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এজন্য মানুষের মঝে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে, যেন জাতির পিতার আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী একবারে তৃণমূলের মানুষটি পর্যন্ত অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা এবং চিকিৎসা সেবা পেতে পারে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেদ সভাপতিত্ব করেন। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া এতে বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে একটি ভিডিও চিত্র পরিবেশিত হয়।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ