সর্বোচ্চ ১৩০ আসনে ইভিএমে ভোটের সক্ষমতা আছে : ইসি আলমগীর

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, আমাদের এখন যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) আছে তাতে সর্বোচ্চ ১৩০ আসনে ভোট করতে পারব।  এর বেশি সম্ভব না।
সোমবার (৯ মে) নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের এক সভায় দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ইভিএমে ভোট হবে জানিয়েছেন বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে সাবেক এই ইসি সচিবের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হয়।  তিনি বলেন, ইভিএমে ভোটগ্রহণ নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি।  কারণ আমরা কয়েকদিন আগে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছি।  আমরা কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন (কুসিক) ও পৌরসভা এবং ইউপি নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত আছি।  জাতীয় নির্বাচন অনেক দূরে।  ফলে এ বিষয়ে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি।
মো. আলমগীর বলেন, আমাদের এখন যে ইভিএম আছে তাতে সর্বোচ্চ ১০০ থেকে ১৩০ আসনে ভালোভাবে ভোট করতে পারব।  এর চেয়ে বেশি আসনে ইভিএমে ভোট করা সম্ভব না।
তিনি বলেন, আমাদের ইভিএম ভারতের ইভিএমের চেয়ে অনেক আপডেট এবং মানের দিক থেকেও অনেক উন্নত।  এটা অবিশ্বাস করার মতো না।  ভারত যেভাবে অবিশ্বাস কাটিয়ে উঠেছে, আমরাও সেভাবে কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করব।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের সভায় ৩০০ আসনে ইভিএমে ভোট করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।  ইভিএম নিয়ে তারা কমিশনের কাছে প্রস্তাব দেবে।  তবে এখনও আমাদের কাছে এ ধরনের কোনো ফরমাল বা ইনফরমাল প্রস্তাব আসেনি।  তারা প্রস্তাব দিলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।  তবে বলে রাখা ভালো, সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের প্রস্তাব আসার কোনো সুযোগ নেই।  সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, আস্থার জায়গা ঠিক হয়ে গেলে ১০০ বা ২০০ অথবা ২৫০ আসনে ভোট করা সম্ভব।  ৩০০ আসনেই যে করতে হবে এমন কোনো কথা নেই।  এছাড়া সব আসনে ইভিএমে ভোট করতে হলে প্রকল্প নিতে হবে।  তারপর ইভিএম কেনা সম্ভব হবে।  এখন ৩০০ আসনে ইভিএমে ভোট করার মতো সক্ষমতা আমাদের নেই।
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, বর্তমানে ইসির কাছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ইভিএম আছে।  এগুলো দিয়ে সর্বোচ্চ ১০০ আসনে ভোট করা যাবে বলে ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।  কেননা, জাতীয় নির্বাচনে ৪৩ হাজার কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।  প্রতি কেন্দ্রে তিনটি করে ভোটকক্ষের বিপরীতে ব্যাকআপসহ আরও প্রায় ২ লাখ মেশিনের প্রয়োজন।  এছাড়া প্রশিক্ষিত জনবলও নেই।
২০১১ সালে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোটগ্রহণ চালু করে।  সে সময় তারা বুয়েটের কাছ থেকে ১২ হাজার টাকায় মেশিন তৈরি করে নেয়।  কিন্তু সেই মেশিন ২০১৫ সালে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে বিকল হয়ে পড়ে।  ফলে বুয়েটের কাছ থেকে নেওয়া সব মেশিন বাদ দিয়ে নতুন করে আরও উন্নতমানের ইভিএম প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত নেয় কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ কমিশন।  আর সেই সিদ্ধান্তের আলোকেই কেএম নূরুল হুদার কমিশন ২ লাখ টাকার দামের অধিক উন্নত মেশিন বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) কাছ থেকে তৈরি করে নেয়।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ