নির্মাণ হচ্ছে ‘কলকাতায় বঙ্গবন্ধু’ তথ্যচিত্র

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে ভারতের কলকাতার সম্পর্ক নিয়ে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করা হচ্ছে।  বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে নির্মিত এ তথ্যচিত্রটি পরিচালনা করছেন পশ্চিমবঙ্গের পরিচালক গৌতম ঘোষ।
‘ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ’ এবং কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের প্রযোজনায় এই তথ্যচিত্রের নাম ‘কলকাতায় বঙ্গবন্ধু’।
শুক্রবার (১৩ মে) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।  সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পরিচালক গৌতম ঘোষ সহ অন্যান্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজবুর রহমানের কলকাতা জীবনকে উপজীব্য করে ‘কলকাতায় বঙ্গবন্ধু’ নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।  গত ১৯ মার্চ এই তথ্যচিত্র নির্মাণ সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে স্বাক্ষর হয়।  প্রায় ৩০ মিনিটের এই তথ্যচিত্রটি কলকাতা এবং বাংলাদেশে শুটিং শেষে আগামি জুনের মধ্যে নির্মাণকাজ সমাপ্তের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।  এর আগে গত ৪ এপ্রিল বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত কলকাতার মওলানা আজাদ কলেজ (যেটি পূর্বে ইসলামিয়া কলেজ নামে পরিচত ছিল) সেখানে এই তথ্যচিত্র নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৪৫-৪৬ শিক্ষাবর্ষে ইসলামিয়া কলেজে অধ্যয়ন করেছেন এবং সে সময় তিনি কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।  তিনি সেসময় সরকারি বেকার হোস্টেলের ২৪ নম্বর রুমে আবাসিক ছাত্র ছিলেন।  যেটি এখন বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কক্ষ হিসেবে সংরক্ষিত আছে।  কলকাতার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর অসংখ্য স্মৃতি জড়িত, যার বেশ কিছু অংশ আমরা বঙ্গবন্ধুর নিজের লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়ে জানতে পারি।  বঙ্গবন্ধু কখনো চিকিৎসার প্রয়োজনে, কখনো লেখাপাড়ার জন্য, আবার রাজনৈতিক নেতা হিসেবেও বহুবার কলকাতায় আসা-যাওয়া করেছেন।  সে অভিজ্ঞতা তাকে একজন অসামান্য রাজনৈতিক নেতা হিসেবে গড়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে।  কাজেই কলকাতা কেন্দ্রিক বঙ্গবন্ধুর এই অজানা বা কমজানা বিষয়গুলোকে জনসম্মুখে নিয়ে আসার জন্যই আমাদের এই প্রয়াস।  কারণ কলকাতা পর্বকে বাদ দিলে বঙ্গবন্ধুকে পূর্ণাঙ্গরূপে বিশ্লেষণ করার ক্ষেত্রে অপূর্ণতা থেকে যাবে।
পরিচালক গৌতম ঘোষ বলেন, তথ্যচিত্র নির্মাণের সময় কতগুলো আবেগ কাজ করেছে।  অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও শেখ হাসিনার লেখা বইকে নির্ভর করেই করা হয়েছে এর স্ক্রিপ্ট।  এছাড়া বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা এবং আর্কাইভ থেকেও তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।  বড় চ্যালেঞ্জ হলো সেই সময়ের ছবি পাওয়াটা দুস্কর।  তবুও এই তথ্যচিত্রে সিনেম্যাটিক কতগুলো জায়গা আছে।  এরকম তিনি তার অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে লিখেছেন।  আমরাও সেগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ক্যামেররার সামনে কথা বলতে রাজি হয়েছেন।  এটা এই তথ্যচিত্রের জন্য সব থেকে বড় বিষয়।  এতে আলাপের মাধ্যমে অনেক বিষয় উঠে আসবে।  আর বাংলা এই তথ্যচিত্রে বর্তমানে ইংরেজি সাবটাইটেল থাকলেও পরবর্তীতে তা ইংরেজিতে করা হতে পারে।  আর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এই কাজটি করতে গিয়ে তাকে যেভাবে জেনেছি, সুযোগ পেলে আগামিতে তাকে নিয়ে সিনেমার মতো কাজও করা যেতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এই কাজটিকে দুই দেশের বন্ধুত্বের উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করেন।  এছাড়া এই কাজে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ