জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
১৯৮১ সালে ঘরে গুলি, প্রকাশ্য জনসভায় ব্রাশ ফায়ার, গ্রেনেড হামলা, ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে বা ট্রেনে অথবা গাড়িবহরে হামলা করে হত্যার চেষ্টা থেকে বঙ্গবন্ধুকন্যা বারবার নিরাপদে বেঁচে ফিরেছেন দলীয় বহু নেতা-কর্মীর প্রাণের বিনিময়ে।  দলের পক্ষ থেকে হিসাব করা আছে, তাকে হত্যায় মোট ১৯ বার চেষ্টা করা হয়েছে।  সব ঘটনায় মামলাও হয়নি।  আবার মামলা হলেও বছরের পর বছর ধরে চলছে সেসব মামলা।
নিজের জীবন ‘অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  বলেছেন, যেকোনো সময় আঘাত আসতে পারে।  এমনকি তার নিরাপত্তায় যারা কাজ করছেন তাদের নিয়েও চিন্তিত সরকারপ্রধান।
ঢাকা সেনানিবাসের পিজিআর সদরদপ্তরে মঙ্গলবার (৫ জুলাই) সকালে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।  গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন সরকারপ্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি যেটা সব সময় অনুভব করি, আমি জানি আমার জীবনটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।  আমি বাংলাদেশে আসার পর বারবার আমার ওপর আঘাত এসেছে।  আমার পার্টির অনেক নেতা-কর্মী তারা জীবন দিয়ে আমাকে রক্ষা করেছেন।  মানবঢাল তৈরি করে আমাকে রক্ষা করেছেন।  কাজেই আপনারা যখন দায়িত্ব পালন করেন, স্বাভাবিকভাবে আমার চিন্তাও থাকে আপনাদের জন্য, সকলের জন্য।  কারণ, যেকোনো সময় আঘাত আসতে পারে’।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার রাতে শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় তারা প্রাণে বেঁচে যান।  হত্যার ছয় বছর পর ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর বারবার বঙ্গবন্ধুর বড় কন্যাকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে।  ঘরে গুলি, প্রকাশ্য জনসভায় ব্রাশ ফায়ার, গ্রেনেড হামলা, ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে বা ট্রেনে অথবা গাড়িবহরে হামলা করে হত্যার চেষ্টা থেকে বঙ্গবন্ধুকন্যা বারবার নিরাপদে বেঁচে ফিরেছেন দলীয় বহু নেতা-কর্মীর প্রাণের বিনিময়ে।
দলের পক্ষ থেকে হিসাব করা আছে, তাকে হত্যায় মোট ১৯ বার চেষ্টা করা হয়েছে।  সব ঘটনায় মামলাও হয়নি।  আবার মামলা হলেও বছরের পর বছর ধরে চলছে সেসব মামলা।  একাধিক মামলায় রায়ও ঘোষণা করা হয়েছে। রায়ে জনা ত্রিরিশের বেশি আসামির ফাঁসির দণ্ড হয়েছে।  তবে কোনো রায় এখনও কার্যকর হয়নি।
পিজিআর সদস্যদের কর্তব্যপরায়ণতা, দক্ষতা, বিশ্বস্ততা প্রশংসনীয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু আপনারা কখনও নিজের জীবনের কথা চিন্তা করেন না।  রোদ, বৃষ্টি, ঝড়, তুফান– সবকিছু মাথায় নিয়েও আপনারা আপনাদের কর্তব্য পালন করেন, দায়িত্ব পালন করেন।  আমি আপনাদের আন্তরিকভাবে দোয়া করি এবং আপনাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই আপনারা যে এত কষ্ট স্বীকার করেন’।
‘নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় গার্ডসের লক্ষ্য’ এই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে রেজিমেন্টের সবাইকে কাজ করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।  তিনি বলেন, ‘আন্তরিকতা, পেশাগত দক্ষতা, সততা ও কর্তব্যনিষ্ঠা এবং দেশপ্রেমের শপথে বলীয়ান হয়ে দায়িত্ব পালন করবেন।  দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার, উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, পেশাগত অনুশীলনের মাধ্যমে রেজিমেন্ট আগামিতে আরও সমৃদ্ধ হোক আমি সেটাই আশা করি।  এ ক্ষেত্রে যা যা দরকার অবশ্যই আমরা তা করব’।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আবারও বাড়তে থাকায় সবাইকে সতর্ক থেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।  যারা এখনও বুস্টার ডোজ নেননি, তাদের দ্রুত বুস্টার ডোজ নিতেও অনুরোধ জানান তিনি।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ