গণমাধ্যমকর্মী আইন খুব সহসাই মন্ত্রিসভায় উঠছে : তথ্যমন্ত্রী

ফাইল ছবি
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

ঢাকা ব্যুরো : খুব সহসাই গণমাধ্যমকর্মী আইন মন্ত্রিসভার বৈঠকে উঠছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।তিনি বলেছেন, সাংবাদিকদের দাবি অনুযায়ী আইনটি সংশোধন করা হয়েছে।গত মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক বছরের অর্জন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। এ সময় নতুন তথ্যসচিব কামরুন নাহার ও প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকার উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী জানান, ৬৪ জেলায় আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য ডিপিপি তৈরি করা হচ্ছে।সেখানে একটি হলও থাকবে, সেই হল আমরা ভাড়াও দিতে পারব।বিএনপির বিভিন্ন অভিযোগ ও বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনই বর্তমান সরকার বিদায়ের একমাত্র পথ।নির্বাচনে জনগণ বর্তমান সরকারকে সমর্থন না জানালে, স্বাভাবিকভাবেই আমরা সরকারে থাকব না।বাংলাদেশে আমরা বহুদলীয় গণতান্ত্রিক সমাজেই বসবাস করি।এখানে বিরোধী দল সবসময় তাদের মত প্রকাশ, প্রতিবাদ করার আইনগতভাবে, সাংবিধানিকভাবে যে অধিকার, সেই অধিকার সবসময় প্রয়োগ করছে। এখানে কাউকে অধিকার দেয়ার বিষয় নেই।

বিএনপি নেত্রী সেলিমা রহমানের ‘হঠাৎ করেই সরকারের পতন হবে’- এ মন্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকারের পতন হবে- সেলিমা রহমানের এই কথা তো আমরা ১১ বছর ধরেই শুনে আসছি।২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকেই সরকারের পতনের কথা শুনে আসছি।সরকার পরিবর্তনের একটিই পথ, সেটি হচ্ছে নির্বাচনের মাধ্যমে।নির্বাচনে জনগণ বর্তমান সরকারকে সমর্থন না জানালে, স্বাভাবিকভাবেই আমরা সরকারে থাকব না।এছাড়া অন্য পথ তো নেই।অবশ্য তারা (বিএনপি) নানা পথে বিশ্বাস করে, কারণ তারা রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সেলিমা রহমানের এই বক্তব্য সেই ষড়যন্ত্রেরই ইঙ্গিত ছাড়া অন্য কিছু না। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে অতীতের মতো আর ষড়যন্ত্রের রাজনীতি সফল হবে না এবং সরকারকে বিদায় দেয়ার একটিই পথ- সেটি হচ্ছে নির্বাচন।

নতুন বছরে বিরোধী দলকে ‘স্পেস’ দেয়া প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে আমরা বহুদলীয় গণতান্ত্রিক সমাজেই বসবাস করি। এখানে বিরোধী দল সবসময় তাদের মত প্রকাশ, প্রতিবাদ করার আইনগতভাবে, সাংবিধানিকভাবে যে অধিকার, সেই অধিকার সবসময় প্রয়োগ করছে। এখানে কাউকে অধিকার দেয়ার বিষয় নেই। মাল্টিপার্টি ডেমোক্রেসিতে আমরা বিশ্বাস করি এবং সেই অনুযায়ী দেশ পরিচালিত হচ্ছে। সুতরাং এখানে বিরোধী দল সবসময়ই সংসদে, সংসদের বাইরে সবসময় তাদের মত প্রকাশ করছে। সুতরাং অধিকার দেয়া না দেয়ার প্রশ্ন অবান্তর’। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) সম্প্রচারের পর এবার বাংলাদেশ বেতার শুনবে ভারত। জানুয়ারিতেই সারা ভারতে বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান প্রচারিত হবে। অনলাইন নিউজ পোর্টালের নিবন্ধন দেয়ার বিষয়ে সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অনলাইন গণমাধ্যমে নিবন্ধন দেয়ার জন্য আমরা ইতোমধ্যেই সিদ্ধান্ত  নিয়েছি। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে আমরা সব রিপোর্ট এখনো পাইনি। পেলে খুব সহসাই কিছু অনলাইন নিবন্ধন পেয়ে যাবে।

বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) সম্প্রচারের পর বাংলাদেশ বেতার শুনবে ভারত- এমনটি জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জানুয়ারিতেই সারা ভারতে বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান প্রচারিত হবে। বিগত বছরের সাফল্য তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যে কাজগুলো কয়েক যুগে হয়নি। ভারতে বাংলাদেশ টেলিভিশন দেখানোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছিল বহু বছর আগে থেকে, কয়েক যুগ আগে থেকে। কিন্তু সেটি সম্ভবপর হয়নি। গত বছর ২ সেপ্টেম্বর থেকে দূরদর্শনের ফ্রি ডিসের মাধ্যমে সমগ্র ভারতে অফিসিয়ালি বাংলাদেশ টেলিভিশন প্রদর্শিত হচ্ছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পীদের বহুদিনের দাবি ছিল, চলচ্চিত্র শিল্পীদের জন্য একটি কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করা। সেই কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করার লক্ষ্যে ট্রাস্ট আইন প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে, এটি আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত হয়ে অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে সেটি ইতোমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। আমরা আশা করছি, খুব সহসা চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আইন সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সংসদে নিয়ে যেতে পারব।