পাহাড়ধ্বসে প্রাণহানির আশঙ্কা কাপ্তাইয়ে

মাহফুজ আলম, কাপ্তাই প্রতিনিধি >>>
গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে পার্বত্যজেলা রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার অধিকাংশ পাহাড়ি এলাকায় ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে অসংখ্য পরিবার।  যে কোনো মুহুর্তে পাহাড়ধ্বসে এসব ঝুঁকিপূর্ণ বসতবাড়ি বিলীন হতে পারে, রয়েছে প্রাণহানির আশঙ্কাও।  গত ৯ জুলাই থেকে শুরু হওয়া প্রবল বর্ষণ অতীতের দুর্যোগগুলোর কথা মনে করিয়ে দিলেও বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে থাকছেন এসব পরিবার।  ফলে অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়ে যে কোনো মুহুর্তে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে উপজেলায়।
ভৌগোলিক অবস্থান, প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্য, ঘনবসতি এবং অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কর্তন করে পাহাড়ের পাদদেশে ও চূড়ায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে তৈরি করা পাকা বহুতল ভবন নির্মাণের ফলে কাপ্তাই উপজেলার নতুন বাজার এলাকাটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত।  প্রতি বছর ভারী বৃষ্টি ও দুর্যোগের সময় এসব এলাকার লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয় অন্যত্রে।  পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে লোকজন পুনরায় ঝুঁকিপূর্ণ এসব এলাকায় ফিরে আসলেও এবার পুরো প্রেক্ষাপট বিপরীত।  প্রশাসনের সতর্কতা জারির পরেও কেউ নিজেদের আবাস্থল ছেড়ে যেতে চাইছেন না।  প্রশাসনও কিছুটা নমনীয়তা প্রদর্শন করায় যে কোনো সময় মারাত্মক দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।
কাপ্তাই ইউপির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ জানান, এ বিষয়ে সব সময় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়।  কিন্তু কাজের কাজতো কিছুই হয় না।
কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশ্রাফ আহমেদ রাসেল, কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মফিজুল হক জানান, বিষয়টির বাস্তবতা বুঝেই দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় কাপ্তাই নতুন বাজার এলাকার প্রতিটি স্থান পরিদর্শন করা হয় গুরুত্বের সঙ্গে।  চলমান বর্ষা মৌসুমে ঝুঁকিপূর্ণ কাপ্তাইয়ের অধিকাংশ এলাকার লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়।  আশ্রয় কেন্দ্র খুলে দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করা হলেও এসব এলাকার জনগণকে পুনর্বাসন করা সম্ভব হয়নি।  এর মূল কারণ- কাপ্তাইয়ে মৌজা ও খাস জমি না থাকায় লক-গেইট, নতুন বাজার এলাকার বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া যাচ্ছে না।  কাপ্তাইয়ে যে সকল ভূমি বা জায়গা রয়েছে তার কিছু অংশ বনবিভাগ, পিডিবি, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং কর্ণফুলী পেপার মিলের জায়গা।  ফলে বাধ্য হয়ে প্রাণের ঝুঁকিও উদ্বাস্তু মানুষের মতোই বসবাস করছে এখানকার মানুষ।

ডিসি/এসআইকে/এমএ