গর্ভের শিশুর লিঙ্গ প্রকাশ করা যাবে না, নীতিমালা হাইকোর্টে

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় অনাগত শিশুর লিঙ্গ প্রকাশ করা যাবে না মর্মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গঠিত কমিটির প্রতিবেদন হাইকোর্ট দাখিল করা হয়েছে। এই নীতিমালা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি, হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ল্যাবরেটরী কোনো লেখা বা চিহ্ন বা অন্য কোনো উপায়ে শিশুর লিঙ্গ প্রকাশ করতে পারবে না।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ নীতিমালা দাখিল করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
‘ÔNational Guideline regarding Prenatal Gender Selection in Bangladesh’ নামে এই নীতিমালায় বলা হয়েছে–
১. কোনো ব্যক্তি, হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ল্যাবরেটরি কোনো লেখা বা চিহ্ন বা অন্য কোনো উপায়ে শিশুর লিঙ্গ প্রকাশ করতে পারবে না।
২. এ বিষয়ে কোনোরকম বিজ্ঞাপন দিতে পারবে না।
৩. সরকারের মন্ত্রণালয়গুলো ডাক্তার, নার্স, পরিবার পরিকল্পনা কর্মী, টেকনিশিয়ান কর্মীদের নেতিবাচক ফলাফল সম্পর্কে ট্রেনিং দেবে এবং নৈতিকতা ও পেশাগত আচরণ বিষয়ে ট্রেনিং দেবে।
৪. হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ মেডিকেল সেন্টারগুলো এ সংক্রান্ত সব ধরনের টেস্টের ডাটা সংরক্ষণ রাখবে।
৫. হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ মেডিকেল সেন্টারগুলো ডিজিটাল ও প্রিন্ট মাধ্যমে লিঙ্গ সমতা এবং কন্যাশিশুর গুরুত্ব তুলে ধরে বিভিন্ন মেসেজ প্রচার করবে।
আদালত এ নীতিমালার ওপর শুনানির জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেছেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।
এর আগে গত ২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় রোধে নীতিমালা তৈরি করতে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
রুলে অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় রোধে নীতিমালা বা নির্দেশনা তৈরি করতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় নির্ধারণে নীতিমালা তৈরি করতে বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চান হাইকোর্ট।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেছিলেন। হাইকোর্টের রুলের পর নীতিমালা তৈরির জন্য কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
রুল জারির পর রিটকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেছিলেন, ভারতে আইন করে গর্ভজাত সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গর্ভের শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণ করা হলে প্রসূতি মায়ের মানসিক চাপ তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে পারিবারিক চাপে গর্ভপাত করার ঘটনাও ঘটে।
২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি গর্ভের শিশুদের লিঙ্গ পরিচয় জানার উদ্দেশে পরীক্ষা ও লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে রিট করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ