কর্ণফুলীতে কবিরাজ হত্যার সাথে যুক্ত ৬ ব্যক্তি গ্রেফতার

কর্ণফুলী উপজেলা প্রতিনিধি >>>
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা এলাকার চাঞ্চল্যকর কবিরাজ সায়ের মোহাম্মদ সাগর (৩৮) হত্যাকাণ্ডের মূলহোতাসহ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ৬ জনকে আটক করেছে র‍্যাব-৭। শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) ভোররাতে চট্টগ্রাম র‌্যাব-৭ এর এএসপি কাজী মো. তারিক আজিজ এর নেতৃত্বে কর্ণফুলীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যায় জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত তিনটি লোহার পাইপ উদ্ধার করে র‌্যাব।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন স্থানীয় ইছানগরের মোহাম্মদ মিয়ার দুই ছেলে মহিউদ্দিন (২১) ও মো. রাব্বি, একই এলাকার জলিল আহমদের ছেলে মো. কাউয়ুম (২০), চরলক্ষ্যার আব্দুস সালাামের ছেলে মো. ইরফান (২০), একই এলাকার মো. ইয়াছিনের ছেলে নাইমুল হক শাকিব (১৯), ইছানগরের মৃত আব্দুল বাতেনের ছেলে আব্দুল করিম রিফাত (১৯)। তার প্রকৃত গ্রামের বাড়ি সন্দ্বীপ উপজেলায় বলে র‌্যাব জানিয়েছে।
র‌্যাব সূত্রে জানা যায়, কবিরাজ হত্যার মূলহোতা মহি উদ্দীন। মহি উদ্দীন একই এলাকার এক মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। মেয়ের পরিবার মহি উদ্দীনকে মেনে নিতে রাজি ছিলেন না। মেয়েকে মহি উদ্দীন থেকে ফেরাতে মেয়ের পরিবার কবিরাজ সায়ের মুহাম্মদ সাগরের দ্বারস্ত হন এবং অন্যদিকে মেয়েকে বিয়ে দেন। বিষয়টি মহি উদ্দীন জানতে পেরে কবিরাজের উপর ক্ষিপ্ত হয়। পরে কৌশলে ঝাড় ফুঁকের রোগীর কথা বলে চরলক্ষ্যার নির্জন জায়গায় নিয়ে নির্মমভাবে সাগরকে পিটিয়ে আহতাবস্থায় ফেলে রেখে যায় মহি উদ্দীন ও তার সহযোগিরা। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত সাগরকে দেখতে পেয়ে তার পরিবারকে খবর দেয় এবং দ্রুত চমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেয়া হয় বেসরকারি একটি হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন কবিরা সাগর।
এই ঘটনায় কোনো ক্লু-ই পাচ্ছিল না সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ক্লুলেস এই হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনে ও অজ্ঞাতনামা আসামিদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করার জন্য ছায়া তদন্ত শুরু করে র‌্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৭ গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কবিরাজ হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত ছয় ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
উদ্ধারকৃত আলামতসহ গ্রেফতার ব্যক্তিদের কর্ণফুলী থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব- ৭।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ এপ্রিল কবিরাজ সায়ের মো. সাগরকে ঝাড় ফুঁক করানোর কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পরে হত্যার শিকার কবিরাজ সায়ের এর ভাই মো. বশির বাদি হয়ে কর্ণফুলী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত কবিরাজ ৮ নম্বর শিকলবাহা ইউনিয়নের অলির বাপের বাড়ির মৃত হাসেমের ছেলে। ৪ ছেলে ৩ মেয়ের মধ্যে নিহত সায়ের মোহাম্মদ মেজো সন্তান ছিলেন।

ডিসি/এসআইকে/এমএম