টেকনাফে বিপুল অস্ত্রশস্ত্র জব্দ, ৩ ডাকাত নিহত 

উদ্ধারকৃত বিপুল অস্ত্রশস্ত্র ও পুলিশ-বিজিবির পোশাক। ছবি- টেকনাফ থানা

কক্সবাজার প্রতিনিধি >>>
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা রঙ্গীখালিতে রোহিঙ্গা ডাকাতদলের আস্তানায় হানা দিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।  গতকাল বুধবার (৬ মে) টেকনাফের হ্নীলা রঙ্গীখালীর পাহাড়ে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিন ডাকাত নিহত হওয়ার পর ডাকাতদলের আস্তানা থেকে এসব অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়।  এসময় সেখান থেকে পুলিশ ও বিজিবির র‌্যাঙ্কধারী কর্মকর্তা-সদস্যদের পোশাকও পাওয়া যায়।
টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, ডাকাতদলের আস্তানা থেকে আমরা পুলিশের অফিসার ও কনস্টেবল পর্যায়ের সদস্যদের ১০ সেট এবং বিজিবির র‌্যাঙ্কধারী সদস্যদের ব্যবহার্য্য তিন সেট পোশাক উদ্ধার করেছে।  এছাড়াও সেখানে থেকে ৫৬ হাজার পিস ইয়াবা, ১৮টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, রাইফেল ও পিস্তলের গুলিসহ ২২৪ পিস তাজা কার্তুজ পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রমতে, টেকনাফ সীমান্তের পাহাড়কেন্দ্রিক অপরাধীচক্র দীর্ঘদিন ধরেই এসব অপকর্ম করছে। তাদের কাছে মারাত্মক সব অস্ত্রশস্ত্র মজুদ রয়েছে।  সূত্রের দাবি- পুলিশ-বিজিবির অনেক কর্মকর্তা-সদস্য এ বিষয়ে অবগত থাকলেও অদৃশ্য কারণে অপরাধী এই চক্রটিকে ধরছে না।  এসব অপরাধীরা নানাবিধ অপরাধের সাথে ডাকাতি ও অপহরণ কর্মও করে।  আর এসব অপকর্ম আরও সহজ করতে তারা ব্যবহার করছে পুলিশ-বিজিবিসহ বিভিন্ন বাহিনীর পোশাক, মজুদ করছে বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র। ।
টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ জানান, বুধবার ভোর সাড়ে ৬ টার দিকে হ্নীলার রঙ্গীখালীর গাজিপাড়া সংলগ্ন পাহাড়ে ডাকাত-ইয়াবা পাচারকারীরা জড়ো হয়েছে- এমন সংবাদের ভিত্তিতে থানা পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়।  পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতদলের সদস্যরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়।  আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুঁড়ে।  কিছুক্ষণ পর গোলাগুলি থামলে ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে তিনজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে টেকনাফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

উদ্ধারকৃত বিপুল অস্ত্রশস্ত্র ও পুলিশ-বিজিবির পোশাক। ছবি- টেকনাফ থানা

জানা গেছে, বন্দুকযুদ্ধে নিহতরা হলেন টেকনাফের হ্নীলার রঙ্গীখালীর জুম্মাপাড়ার মৃত আবদুল মজিদ ওরফে ভোলাইয়া বৈদ্যের দুই ছেলে সৈয়দ আলম (৩৬) ও নুরুল আলম (৩৭)।  অন্যজন একই এলাকার ছাব্বির আহমদের ছেলে আবদুল মোনাফ ওরফে মনাইয়া (২২)।  এ ঘটনায় পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই মশিউর রহমান, এএসআই সনজিব দত্ত, এএসআই মিঠুন কুমার ভৌমিক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয়দের মতে, টেকনাফ উপজেলার পাহাড়কেন্দ্রিক অপরাধীচক্রে বাংলাদেশি নাগরিকদের পাশাপাশি মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদি দলের সদস্যরাও যুক্ত।  এছাড়াও সে দেশ থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিপুল সংখ্যক সদস্য এতে শামিল। তাদের সোর্স সর্বস্তরে ছড়িয়ে আছে।

ডিসি/এসআইকে/এফআর