ঈদের দিনে বাঁশখালীতে সংঘর্ষে হতাহত ১১, গুলিবিনিময় : আলোচনায় ‘৮০ গ্রুপ’

মুহাম্মদ মিজান বিন তাহের, বাঁশখালী প্রতিনিধি >>>
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাহারচড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রত্নপুর গ্রামের বুদা গাজী তালুকদার পাড়া এলাকায় পূর্ব বিরোধের জেরে সংঘর্ষ ও গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে।  এতে এক পক্ষের এক যুবক খুন হয়েছেন, আহত হয়েছেন ১০ জন।  আজ সোমবার (২৫ মে) বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।  নিহত যুবক মাওলানা মো. এরফান (৩৬) রত্নপুর বুদা গাজী তালুকদার বাড়ির নুরুল ইসলামের ছেলে।  নিহত এরফান ১ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক।  তিনি চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা এলাকায় মুদির ব্যবসা করতেন।  তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন স্থানীয় চিহ্নিত ‘৮০ গ্রুপ’ নামের একটি সন্ত্রাসী দল এই হামলার ঘটনা ঘটায়।  এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় দুদু মিয়ার ছেলে মো. কালুর সাথে ৬ শতক জমি নিয়ে নিহত মাওলানা এরফানের সাথে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।  এরই জের ধরে আজ পবিত্র ঈদের দিন বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।  একপর্যায়ে ‘৮০ গ্রুপ‘ নামের একটি সংঘবদ্ধ দল সংঘর্ষ-গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটায়।  এ সময় মাওলানা মো. এরফানকে গুরুতরভাবে ছুরিকাঘাত করে প্রতিপক্ষ।  স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বাঁশখালী হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃ্ত্যু হয় বলে জানা যায়।
এই ঘটনায় আহত হন অন্তত আরো ১০ জন।  আহতরা হলেন একই এলাকার মৃত ফজল আহমদের ছেলে জাফর আহমদ (৫৫), মো. এমরান (২৮), গিয়াস উদ্দীন (২৬), আশেক (২৫), আবু মুসা (৬০), মো. ইউনুস (৪৫)।  এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মৃত আলী আহমদের ছেলে মুন্সি আলম (৫৫) ও মো. ইদ্রিস (৬০) কে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
নিহত এরফানের ভাগিনা মো. রাশেদুল ইসলাম দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, আমার মামা নিহত এরফানের সাথে একই এলাকার মো. কালুর দীর্ঘদিন ধরে ৬ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।  পবিত্র ঈদের এই দিনে ‘৮০ গ্রুপ’ নামের এলাকার একটি সন্ত্রাসীর দল আমার মামাকে চতুর্দিকে ঘিরে দেশীয় রাম দা, কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে আহত করে।  এ সময় মামাকে তাদের কবল থেকে উদ্ধারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে মো. কালু ও মো. নুর উদ্দীনের নেতৃত্বে তারা পুনরায় হামলা ও গুলি চালায়।  এতে ১০ জন আহত হয়।
বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক ডা. হীরক কুমার পাল দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, রত্নপুর এলাকায় সংঘর্ষে নিহত মাওলানা এরফানকে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়।  এ ঘটনায় আরো ২ জনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাদেরকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেছি।  অন্যান্য আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রেজাউল করিম মজুমদার দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, পূর্ব বিরোধের জেরে ওই যুবককে খুন করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।  তবে কি কারণে হামলার ঘটনা ঘটেছে তা তদন্ত শেষে বলা যাবে।
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।  নিহত যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলেও জানা যায়।

ডিসি/এসআইকে/এমএমবিটি