সমাজের সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
নোয়াখালীর কবিরহাটে এক গৃহবধূকে (২০) স্বামীর সামনে থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।  গত বুধবার (৩ জুন) রাতে এ ঘটনা ঘটে।  এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ গতকাল শনিবার (৬ জুন) বিকেলে সাতজনের নাম উল্লেখ করে কবিরহাট থানায় মামলা করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার বিকেলে পার্শ্ববর্তী সুবর্ণচর উপজেলার চরবৈশাখী গ্রাম থেকে জমি কেনার উদ্দেশ্যে কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের পূর্ব নবগ্রামে খালার বাড়িতে আসেন ওই গৃহবধূ (২০) ও তার স্বামী (২৬)।  কাজ শেষ না হওয়ায় তারা ওই বাড়িতেই রাতে অবস্থান করেন।  রাত সাড়ে ৯ টার দিকে স্থানীয় সমাজ কমিটির সভাপতি আব্দুস সাত্তার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালামের নেতৃত্বে ছয়-সাতজন গৃহবধূর আত্মীয়ের বাড়িতে আসে।  এ সময় তারা ঘরে ঢুকে এই দম্পতির মধ্যে সম্পর্ক অবৈধ বলে তাদের বিয়ের কাগজপত্র দেখতে চায়।  কিছু বুঝে ওঠার আগেই গৃহবধূ ও তার স্বামীকে আটক করে বাড়ির পাশের একটি জায়গায় নিয়ে তাদের সঙ্গে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় তারা।  এ সময় আব্দুস সাত্তার ও আবুল কালাম তাদের ছেড়ে দিতে ওই দম্পতির কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন।
পরে ওই গৃহবধূর খালাতো ভাই সাত্তারের হাতে ৩৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ দেন।  আরও ২৫ হাজার টাকা পরে দেবে মর্মে একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন সাত্তার।  টাকা নিয়ে আব্দুস সাত্তার ওই গৃহবধূকে নিরাপত্তা দেয়ার কথা বলে তার মেয়ের বাড়িতে নিয়ে যান এবং গৃহবধূর স্বামী ও খালাতো ভাইকে পিটিয়ে জখম করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
ওই গৃহবধূ অভিযোগ করে বলেন, রাত ১২ টার দিকে আমাকে নেয়ার জন্য খালাতো ভাই ও তার স্ত্রী এসেছে বলে আব্দুস সাত্তার মেয়ের বাড়ি থেকে আমাকে বের করে নিয়ে যায়।  কিছু পথ যাওয়ার পর একটি বেড়িবাঁধের ওপর পাঁচ-ছয়জন লোকের হাতে আমাকে ছেড়ে দেয় সাত্তার।  ওই লোকগুলোর আচরণ দেখে আমি ঘটনা আঁচ করতে পেরে সাত্তারকে বাবা ডেকে আমাকে রক্ষা করতে বলি।  কিন্তু সাত্তার আমাকে তাদের হাতে ছেড়ে দেন।  পরে রাস্তার পাশের একটি কলাবাগানে নিয়ে সাত্তারসহ সবাই আমাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।  অচেতন অবস্থায় তারা রাত সাড়ে ৩ টায় পার্শ্ববর্তী আজাদের দোকানের সামনের একটি বটগাছের নিচে আমাকে রেখে চলে যায়।  সেখান থেকে লোকজনের সহযোগিতায় আমার স্বামী ও খালাতো ভাই আমাকে উদ্ধার করে।
কবিরহাট থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) ফজলুল কাদের জানান, গণধর্ষণের অভিযোগ এনে ঘটনার তিনদিন পর ওই গৃহবধূ শনিবার বিকেলে থানায় এসে সাতজনের নামে লিখিত অভিযোগ করেন।  পুলিশ অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেছে।  আসামিরা হলেন- কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের নবগ্রামের আব্দুস সাত্তার, সোহেল, আবুল কালাম, রিপন, মাসুম, গিয়াস উদ্দিন ও নুর আলম।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ