মিজানুর রাহমান, লামা (বান্দরবান) থেকে >>>
পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা উপজেলায় গভীর রাতে ফাতেমা খাতুন (৫৫) নামে ঘুমন্ত এক বৃদ্ধ নারীকে জবাই করে হত্যার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ রবিবার (৭ জুন) দিবাগত ভোর রাত ৩ টায় পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের রাজবাড়ি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ফাতেমা বেগম রাজবাড়ি এলাকার ওমর আলীর স্ত্রী।
জানা যায়, রবিবার ভোরগত রাতে ফাতেমা খাতুন তার নাতি রিয়াজুল ইসলাম ইমন (৯) কে নিয়ে বাড়ির বারান্দায় ছোট ছেলে জাকের হোসেন আকাশ (১৯) না থাকায় তার খাটে ঘুমায়। রাত আনুমানিক ৩ টায় দুর্বৃত্তরা কৌশল অবলম্বন করে ঘরে প্রবেশ করে। এমতাবস্থায় বারান্দার খাটে ঘুমন্ত নারীকে জবাই করে হত্যার চেষ্টা চালায়। আহত নারী আকস্মিক লাফিয়ে উঠে খুনিকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার দিলে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। তবে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে জখম হয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় বৃদ্ধা ওই নারীর। গুরুতর আহত ফাতেমা খাতুনকে তাৎক্ষণিক লামা সরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে রেফার করে।
হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মনিরুজ্জামান বলেন, আহতকে ধারালো কিছু দিয়ে জবাই করার চেষ্টা করা হয়েছিল। বুকের উপরে গলার নিচে অনেকটা কাটা গেছে ও প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। অপারেশন করা প্রয়োজন বিধায় তাকে কক্সবাজার জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে৷
আহত বৃদ্ধা নারীর বড় ছেলে মো. কামাল হোসেন (৩২) বলেন, আমরা গরীব মানুষ। আমাদের সাথে কারো কোনো শত্রুতা নাই। তবে আমার ছোট ভাই জাকের হোসেন আকাশের এর সাথে পার্শ্ববর্তী চরুবিল এলাকার মো. ইউনুচ ও আছিয়া খাতুনের মেয়ে রুমানা আক্তারের সাথে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা চলমান আছে। সে মামলায় আকাশ জেল খেটে এখন জামিনে আছে। আমাদের ধারণা আকাশকে হত্যার উদ্দেশ্যে এসেছিল দুর্বৃত্তরা। তবে আমরা দুর্বৃত্তদের কাউকে চিনতে পারিনি।
আহত নারীর সাথে ঘুমানো নাতি রিয়াজুল ইসলাম ইমন (৯) জানায়, যে আমার দাদীকে জবাই করার চেষ্টা করে তার গায়ে সাদা টি-শার্ট ছিল। তারা ৪ জন ছিল। প্রথমে জানালা দিয়ে একজন ঘরে ডুকে দরজার হুক খুলে দেয়। তারপর আরেকজন ঘরে ডুকে। বাকী দুইজন বাহিরে ছিল। আমরা কাউকে চিনতে পারিনি। ধস্তাধস্তির সময় তারা জুতা ফেলে যায়।
এবিষয়ে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, খবর পাওয়া মাত্র ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করা হয়েছে। আহত ওই নারীর ছেলে মো. কামাল হোসেন থানায় এসেছেন। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ডিসি/এসআইকে/এমআর