মাস্ক কেলেঙ্কারি : দৈনিক চট্টগ্রামকে যা বললেন কেন্দ্রীয় আ’লীগ নেতা আমিন

ইসলাম শফিক, প্রধান প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
মানহীন এন-৯৫ সার্জিক্যাল মাস্ক আমদানির সাথে যুক্ত এবং জাল-জালিয়াতি অভিযোগে ঔষধ প্রশাসন কর্তৃক মামলার আসামি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন এবার নোটারি পাবলিকে রেজিস্ট্রেশন করানো একটি নন-জুডিশিয়াল অঙ্গীকারনামা সামনে আনলেন।  যদিও এই চুক্তিপত্র তথা অঙ্গীকারনামা নিয়েও বেশ আলোচনা-সমালোচনা চলছে।  চলতি বছরের ২৫ মার্চ তারিখে নোটারি পাবলিক দ্বারা সম্পাদিত ওই চুক্তিপত্রে আমিনুল ইসলাম আমিনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ‘এলান কর্পোরেশন’ এর নামে ব্যবসা পরিচালনার জন্য রাজধানী ঢাকার মো. তাজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি এই অঙ্গীকারনামা তথা চুক্তিপত্র সম্পাদন করেন।
তবে, নোটারী পাবলিক করানো ওই চুক্তিপত্রের বক্তব্য অনুসারে এটি মামলা থেকে রক্ষায় তরিঘরি করে তৈরি করা বলে আলোচনা চলছে।  বলা হচ্ছে, আমিনুল ইসলামকে মামলা থেকে রক্ষায় এমন অঙ্গীকারনামা তৈরি করা হয়েছে যা এই চুক্তিপত্রের বক্তব্য পড়লেই বোঝা যায়।  সমালোচনাকারীদের দাবি, চুক্তিপত্রে মো. তাজুল ইসলাম উল্লেখ করেছেন, আমি ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনার জন্য এলান কর্পোরেশন’ এর নাম ব্যবহার করতে চাই।  এতে আমিনুল ইসলাম সম্মতি দিয়েছেন। এতে উল্লেখ করা হয়, ‘তাই অদ্য ২৫/০৩/২০২০ইং তারিখ হইতে উপরে উল্লেখিত ঔষধ প্রশাসনে আমি উক্ত ‘এলান কর্পোরেশন’ এর নাম ব্যবহার করতঃ যাবতীয় কাজকর্ম করিব এবং উহার সমস্ত দায়-দায়িত্ব বহন করিব।  ইহাতে ‘এলান কর্পোরেশন’ এর মালিক মো. আমিনুল ইসলাম এর কোনো দায়-দায়িত্ব থাকিল না।  অদ্য হইতে ঔষধ প্রশাসনের কাজে ‘এলান কর্পোরেশন’ এর সমস্ত কাজের তদারকি আমি নিজে করিব এবং ইহাতে জনাব আমিনুল ইসলাম কোনো আপত্তি করিবে না এবং করিলেও তা সর্বাদালতে বাতিল ও অগ্রাহ্য বলিয়া গণ্য হইবে’। এতেই বোঝা যায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক দায়ের করা মামলা থেকে নিজেকে রক্ষা করতেই তিনি তরিঘরি এই অঙ্গীকারনামা পেশ করেছেন।
তবে দৈনিক চট্টগ্রামের কাছে নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করে আমিনুল ইসলাম আমিন বলেছেন, আমরা যে মাস্ক আমদানি করেছি তা ঔষধ প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া আনা সম্ভব নয়।  তারা যদি বলতেন এটি সঠিক নয়, তাহলে আমরা মাস্ক আমদানি করতাম না।  তিনি বলেন, আমার রাজনৈতিক, পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করেন।  আমার যদি ন্যূনতম অপরাধ হয়ে থাকে তাহলেও আমি ফাঁসি নিতে রাজি আছি।  আমাকে হেয় করার জন্যই একটি পক্ষ এমন একটি মামলা করিয়েছে।  আমি ও আমার বন্ধু সম্পূর্ণ নির্দোষ।
গত ১৮ এপ্রিল ৫০ হাজার কেএন-৯৫ মাস্ক সরবরাহের জন্য ঢাকার পুরানা পল্টনের এলান কর্পোরেশনের স্বত্ত্বাধিকারী আমিনুল ইসলামকে কার্যাদেশ দেয় ঢাকার মহাখালীর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।  গত ১৮ মে ঢাকা শুল্ক বিভাগ থেকে মাস্কগুলো খালাসের জন্য অনাপত্তিসূচক সনদও দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।  কিন্তু পরবর্তী সময়ে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর জানতে পারে, অনাপত্তি নেওয়ার জন্য এলান কর্পোরেশন যেসব কাগজপত্র দেখিয়েছিল, সেগুলো ভুয়া।  ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর যে অনুসন্ধান করে তাতে দেখা যায়, ফ্রি সেল সার্টিফিকেটটি মাস্ক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নিজেই ইস্যু করেছে।  অথচ এটা ইস্যু করার কথা ড্রাগ রেগুলেটরি অথরিটির।  অন্যদিকে আইএসও সার্টিফিকেট ইস্যুকারী জার্মান প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, এলান কর্পোরেশনের দেওয়া সার্টিফিকেটটি চীনের অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের নামে ইস্যু করা।  অথচ এলান কর্পোরেশনের দাখিল করা কাগজপত্রে লেখা ছিল চীনের জিয়ামেন টেকনোলজি নামের ভিন্ন একটি প্রতিষ্ঠানের নাম।  এতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর নিশ্চিত হয়েছে, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এলান কর্পোরেশন কেএন-৯৫ মাস্ক আমদানির মাস্কটির উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে টেম্পারিংয়ের মাধ্যমে সনদ জাল করেছে।  এরপরই গত ২৭ মে মাস্ক আমদানির জন্য দেওয়ার অনুমোদন ও অনাপত্তি সনদ বাতিল করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।  এরপর ২৮ মে আমদানি করা মালামালসহ গ্রেফতার করা হয় তাজুল ইসলামকে।  এর দু’দিন পর ঢাকার বনানী থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
তবে সম্প্রতি আমিনুল ইসলাম আমিনের বন্ধু হিসেবে পরিচিতি পাওয়া তাজুল ইসলামকে আমদানি করা মালামালসহ গত ২৮ মে গ্রেফতার করেছে সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী- এমন তথ্য দিয়ে আমিনুল ইসলাম আমিন আজ সোমবার (৮ জুন) বিকেলে দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, আমি কিংবা তাজুল, কেউই এই মামলার আসামি হওয়ার মতো অপরাধ করিনি।  তিনি বলেন, দেখুন, আমি রাজনীতি করি।  আপনি আমার পলিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড, আমার ব্যক্তিগত জীবনটা দেখেন।  পারিবারিক ইতিহাস দেখেন।  আমি ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে আজ এ পর্যায়ে এসেছি।  পেট চালানোর জন্য টুকটাক ব্যবসা করি।  আমি নিজে করার সময় পাই না রাজনীতির কারণে।  সে জন্য আমার বন্ধু তাজুল যখন আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কিছু ব্যবসা করতে চাইলো, আমি যেহেতু রেগুলার ব্যবসা-বাণিজ্য করি না, তাই আমার বন্ধুকে একটি চুক্তির মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনায় সম্মতি দেই।  তাজুল কোনো দোষ করেনি দাবি করে আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি কোনো ফুলটাইম ব্যবসায়ী না।  তারপরও পেট চালানোর জন্য টুকটাক কিছু ইম্পোর্ট-এক্সপোর্ট করি।  আপনি দেশের গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য সংস্থাগুলোকে দিয়ে সার্ভে করান, আমার ব্যাংক ব্যালেন্স কি আছে না আছে, আমার বাড়ি-গাড়ি কি আছে না আছে। আমি আমার লাইফে যদি কোনো অন্যায় করি, তাতে যদি আমার ফাঁসিও হয় তাও আমি মেনে নিতে রাজি।  আমার নামে যে মামলা হয়েছে তার চ্যালেঞ্জ করলে কিন্তু আমিই গেইন করবো।  আপনি দেখেন, আপনি যদি কোনো মাস্ক আমদানি করেন তাহলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনাপত্তি পত্র মাস্ট লাগবে।  এটি ছাড়া যদি আপনি আমদানি করেন তাহলে এয়ারপোর্ট থেকে এগুলো আপনি কোনোভাবেই ছাড়াতে পারবেন না।  আমরা অনাপত্তি পেলাম।  মালও দেশে আসলো, সেগুলো আমরা সরবরাহও করে ফেললাম।  এরপর আমাদের বলা হলো- ডিল সার্টিফিকেট, এফডিআর সার্টিফিকেট ও টিন সার্টিফিকেট লাগবে।  এগুলোও আমরা যথারীতি জমা দিলাম।  এরপর বললো যে আপনার আইএসও সার্টিফিকেট ও আপনার ফ্রি সেল সার্টিফিকেট লাগবে।  আমি আমার বন্ধু তাজুল যেদিন এরেস্ট হয় (২৮ মে) তখন সে আমাকে বলেছে- সে সাপ্লাইয়ার কোম্পানীকে বললো যে তোমার প্রতিষ্ঠানের এই সার্টিফিকেটগুলো লাগবে, এসব সার্টিফিকেট পেলে আমরা এখান থেকে এনওসি পাবো, আমরা তোমার এখান থেকে মাল নিতে পারবো।  তখন তারা আমাদের কাছে এ কাগজগুলো পাঠাইছে।  তখন আমরা এজ পার রুল্স আমরা সমস্ত কাগজ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে দিলাম।  এরপর তারা আমাদের অনাপত্তিপত্র দিছে।  এরপর মালও সাপ্লাই হয়ে গেছে।  ৪ দিন পর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর জানালো যে, ‘বিশ্বস্ত গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পারলাম যে, আইএসও ও ফ্রি সেল সার্টিফিকেটটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটি দিয়েছে’।  তাহলেতো এখানে আমদানিকারকের কোনো ভুল নেই।  সরবরাহকারী যদি আমি আমদানিকারককে ঠকায় তাহলেতো সেটা মাস্ক পাঠানো সেই প্রতিষ্ঠানের উপর বর্তায়।  আমদানিকারক হিসেবেতো আমি এর জন্য দায়ী না।  তিনি বলেন, যদি আমি মাস্ক সরবরাহকারী সেই বিদেশি প্রতিষ্ঠানটির কাগজপত্র জাল করে আমি নিজে তৈরি করে দিয়েছি- এমন হতো, তখন সেটা জাল-জালিয়াতি হতো।  কিন্তু সেটাতো আমি করিনি।  আমি যদি এনওসিটা জাল করে জমা দিতাম, তাহলে আমি অপরাধী।  তাহলে আমি ফাঁসি নিতাম।  সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সেটা পাঠিয়েছে, আমরা তা জমা দিয়েছি।  তাহলে দোষটা আমার হলো কিভাবে?  আচ্ছা আমি ধরে নিলাম, আমি সব কাগজপত্র জাল করে দিয়েছি।  তাহলে আপনি আমাকে অনুমতি না দিলে আমিতো এগুলো আনতাম না।  আপনি আমাকে অনাপত্তিপত্র (এনওসি) দিলেন কেন? যদি আমি ভুয়া কাগজ জমা দেই তাহলে আপনি আমাকে শো-কজ করেন।  তা না করে আপনি আমার বিরুদ্ধে সরাসরি মামলা করে দিলেন।  এ পর্যন্ত সব শেষ।  এরপর হঠাৎ করে গত ২৯ মে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর শুধু আমাকে আসামি করে একটা মামলা করে দিলো।  তিনি বলেন, আমদানি করা মাস্কগুলো যারা প্রায় ৭০% বিতরণ করে ফেলেছে তাদেরকে দিলো শুধু শো-কজ।  আরো একটা কথা বলবো, আপনি নিউজ করার আগে, আমি আপনাকে একটা রিকোয়েস্ট করবো, আপনি যেহেতু সাংবাদিক।  আমি আজ (সোমবার) রোজা রেখেছি।  রোজা রেখেই বলছি, আমি নিজেই জানিনা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অফিসটা কোথায়?  আমি কোনোদিন সেখানে যাই-ই নি।  সেখানের পরিচালক শহীদুল্লাহ সাহেব, যদিও তিনি এখন ট্রান্সফার হয়ে গেছেন, তার কাছেও আমি কখনো যাইনি।  যদি আমি এই কাজটি সরাসরি করতাম, তাহলে আমি সেখানে যেতাম।  আমি কাউকে না কাউকে অনুরোধ করতাম যে আমাকে কাজটা দেন।  আমি কোনোদিন পারসিউই করিনি।  আপনি আমার টেলিফোনটা যাচাই করলে পাবেন।  আপনি দেখেন আমি স্ব-শরীরে পারসিউ করছি কি না, আমি ফোন দিয়ে পারসিউ করছি কিনা, অন্য কাউকে দিয়ে করাইছি কি না।  যদি প্রমাণ দিতে পারেন আমি পারসিউ করছি তাহলে আমি ফাঁসি নেবো।  এটার আমার ভুলের কারণে আমাকে বিপদে পড়তে হয়েছে।  আমার সরলতার কারণে আমাকে বিপদে ফেলা হয়েছে, আমার রাজনৈতিক সম্মানহানির জন্যই এটা করা হয়েছে বলে আমি মনে করি।
তিনি দৈনিক চট্টগ্রামকে অনুরোধ করে বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে আমি খুবই বিব্রত। এ সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো নিউজ না করলেই ভালো হয়।  যদি করতে হয় তাহলে তাজুল জেল থেকে বেরুলে তার সাথে কথা বলে আপনি নিউজ করতে পারেন।  আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, দেখেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর যে মামলাটি আমার বিরুদ্ধে করেছে, সেখানে স্পষ্টতই তারা উল্লেখ করেছে যে, ফ্রি সেল সার্টিফিকেট ও আইএসও সার্টিফিকেটটি মাস্ক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান দিয়েছে। সেটাতো আমার বন্ধু দেয়নি বা আমি দেইনি।  ওকেতো দোষ দিয়ে লাভ নেই।  ধরেন আমি আপনার কাছ থেকে মাল কিনবো। আমি বললাম যে, তোমার কাছে মাল কিনবো যে, এই এই কাগজগুলো আছে কি না।  আপনি বললেন- হ্যাঁ আছে।  এরপর আমি আপনার কাছ থেকে সার্টিফিকেটগুলো নিয়ে আমার অথরিটিকে দিলাম।  এখন আমার অথরিটি চেক না করেই আমাকে এনওসি দিয়ে দিছেন? এটা কি আমার বা তাজুলের দোষ?
তাহলে আপনি ঔষধ প্রশাসন এর জন্য দায়ী বলে মনে করেন- এমন প্রশ্ন করা হলে আমিনুল ইসলাম আমিন দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, এখন আমি নিজেইতো ভিকটিম।  তাহলে কাস্টম কর্তৃপক্ষ কিভাবে কোন প্রক্রিয়ায় মাস্কগুলো ছাড়লো- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে কাস্টম কর্তৃপক্ষের কোনো দায় নেই।  আমাদের দেশের নিয়ম অনুসারে, বিশেষ পরিস্থিতিতেও যদি আপনি ঔষধ বা এই মাস্ক আনেন তাহলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর আপনাকে এনওসি দিতেই হবে।  না দিলে আপনি এসব আমদানি বা ছাড় করাতে পারবেন না।  আমাদের ক্ষেত্রেও, যখন ঔষধ প্রশাসন আমাদের কাছে যে ডকুমেন্টসগুলো চেয়েছে, সেগুলো আমরা আমাদের যে চায়না কোম্পানিটি আছে, যারা এসব মাস্ক সরবরাহ করেছে তাদের কাছ থেকে চাহিত সব ডকুমেন্টস আনিয়ে তারপর আমরা ঔষধ প্রশাসনকে দিয়ে এনওসি পেয়েছি।  তারা যে মামলাটি আমার বিরুদ্ধে করেছে সেখানেও স্পষ্ট করে লিখেছে যে, সরবরাহকারী চায়না প্রতিষ্ঠানটি যে সনদপত্র জমা দিয়েছে সেটা তারা দিতে পারে না, এটি দিতে পারে আমাদের নির্দিষ্ট অথরিটি।  তাহলে এখানে আমার বিরুদ্ধে কেন মামলা হবে? মামলাতো কাগজপত্র দেয়া চায়না কোম্পানিটির বিরুদ্ধে হবে।  আমাকেতো ঔষধ প্রশাসন এনওসি দিয়েছে।  তারা কি যাচাই-বাছাই করে আমাকে সেগুলো দেয়নি?
উল্লেখ্য যে, ৩০০ টাকা মূল্যমানের নোটারি পাবলিক দ্বারা রেজিস্ট্রিকৃত ওই অঙ্গীকারনামাটিতে স্বাক্ষী হিসেবে দেখানো হয় রাজধানী ঢাকার ফুলবাড়িয়া এলাকার জাকের সুপার মার্কেটের আবুল বশরের ছেলে দিদারুল আলম, মহাখালী এলাকার নিউডিওএইচএস আবাসিকের (বাড়ি- ৪০৭, রোড- ২৯) ছফিউল্লাহ পাটোয়ারির ছেলে জনৈক মো. জাকির হোসেন এবং ধানমন্ডি এলাকার (১/ই/৫, রবি ম্যানসন) সৈয়দুল হকের ছেলে জিল্লুর রহমানকে। আর এতে আইনজীবী হিসেবে নোটারী করেন অ্যাডভোকেট বনি আমিন ও তার সহযোগী আইনজীবী আবুল হাসান সুজন।
এই বিষয়ে জানতে আজ সোমবার (৮ জুন) প্রথমে অ্যাডভোটেক আবুল হাসান সুজনকে ফোন দেয়া হলে তিনি দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, আসলে আমি এখন এই বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।  সিনিয়র আইনজীবী মো. বনি আমিনের সহযোগী হিসেবে কাজ করি।  আপনি তাঁর সাথে কথা বলুন, তিনি বিষয়টি বলতে পারবেন।
এরপরই সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট বনি আমিনকে ফোন করা হলে তিনি সোমবার (৮ জুন) বিকেলে দৈনিক চট্টগ্রামকে উল্লেখিত কোনো অঙ্গীকারনামার ব্যাপারে কিছু বলতে পারবেন না জানিয়ে বলেন, অনেক কাজইতো করি।  আপনি কোনটার কথা বলছেন জানি না।  যদি আমাকে কষ্ট করে কপিটা পাঠান তাহলে আমি সেটা দেখে বিস্তারিত বলতে পারবো।  এরপর চুক্তিপত্রটি তার দেয়া ইমেইল ঠিকানায় প্রেরণ করে দৈনিক চট্টগ্রাম।  এর প্রায় চল্লিশ মিনিট পর তাকে ফোন করা হলে তিনি দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, আমি আপনার পাঠানো চুক্তিপত্রটি পেয়েছি।  এটা হইছে কি, এটা একজন অ্যাডভোকেট পাঠিয়েছে।  বিশেষ করে আমরাতো সিনিয়র তাই অনেকে আছেন জুনিয়র আইনজীবী তারা এটা তৈরি করে পাঠিয়েছে, বলেছেন স্যার এটা আমি দেখে দিছি, এটাতে স্বাক্ষর করে দেন।  এটা একজন অ্যাডভোকেট শনাক্ত করে পাঠাইছেন, তাই  আমি স্বাক্ষর করেছি।  আমি চুক্তিটি দেখবো, রেজিস্ট্রেশন দেখবো।  তিনি বলেন, করোনার কারণে তাড়াহুরো করা হয়েছে, অফিস-আদালত বন্ধ, কেউ বাড়িতে যাবে, কেউ অফিস থেকে চলে যাবে।  এই তাড়াহুরোর কারণে ইতরামি, ফাতরামি, জাউরগামিতো কিছু হইছেই।  তিনি আরো বলেন, আমার জুনিয়র একজন অ্যাডভোটেক এটা তারাহুড়ো করে করেছেন।  এখানে কিছু তারাহুড়োর কারণে সমস্যা থাকতে পারে।  আমি আপনাকে রেজিস্ট্রেশন ডেটটা জেনে বিস্তারিত জানাবো।

ডিসি/এসআইকে/আইএস