দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) মেরিন সায়েন্স অনুষদ ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে গেলো ছাত্রলীগের ১০ নেতা-কর্মীর বাধায়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে চাঁদা দাবি করে না পেয়ে নির্মাণাধীন ভবনে ভাঙচুর চালিয়ে শ্রমিকদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। ঘটনার সময় নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে পরিচয় দেন বলেও জানায় নির্মাণ কাজে জড়িত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইয়াকুব অ্যান্ড ব্রাদার্স। এ ঘটনায় জড়িত ৫ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এ ঘটনার বেশ কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজও পেয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ঘটনায় জড়িত সবাই চবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মী।
আজ মঙ্গলবার (২৩ জুন) এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইয়াকুব অ্যান্ড ব্রাদার্সের পরিচালক নাঈম উল ইসলাম। চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করে নাঈম উল ইসলাম বলেন, গত রবিবার (২১ জুন) দুপুর ১টা ২০ মিনিটে ছাত্রলীগ পরিচয়ে পাঁচজন যুবক নির্মাণাধীন ভবনে এসে হুমকি দেন। এ সময় তারা বলেন তাদের সঙ্গে আলোচনার আগ পর্যন্ত নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে হবে। গতকাল সোমবার (২২ জুন) রাত ৮টা ১৫ মিনিট তারা আবার আসেন। এ সময় সাইট অফিস ভাঙচুর এবং শ্রমিকদের মারধর করেন তারা। ফলে নিরাপত্তাহীনতায় শ্রমিকরা আজ মঙ্গলবার নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখেন। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশকে জানানো হয়েছে বলেও জানান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক নাঈম উল ইসলাম।
সংগৃহিত সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সোমবার (২২ জুন) রাত ৮টা ২৭ মিনিটে মেরিন সায়েন্স অনুষদের নির্মাণ প্রকল্পে ১০ জন যুবক প্রবেশ করেন। এ সময় ভেতরে বসে থাকা কয়েকজন শ্রমিককে কিছু বলতে দেখা যায় থ্রি-কোয়ার্টার পরা এক যুবককে। এরপরই শ্রমিকদের চলে যেতে দেখা যায়। আরেকটি ফুটেজে দেখা যায় সাদা শার্ট ও জিন্স প্যান্ট পরা একজনের হাতে লোহার রড। মঙ্গলবার (২২ জুন) বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে তিনটি বাইকে করে আবার নির্মাণাধীন ভবনে যান ৭ যুবক। এ সময় বাইক থেকে নেমে এক যুবককে ভবনের ফটকে লাথি মারতে দেখা যায়। পরে তারা বাইক নিয়ে চলে যান।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ভবনে ভাঙচুরের ঘটনায় অংশ নেয়া ১০ জনের মধ্যে ৫ জন চবি ছাত্রলীগের সাবেক নেতা। তারা হলেন- সাবেক সহ-সভাপতি মনসুর আলম, আল আমিন রিমন, আবদুল মালেক, সুমন নাছির ও সাবেক সদস্য প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয়। বর্তমানে এদের কারও ছাত্রত্ব নেই। এদের মধ্যে মনসুর আলম, আবদুল মালেক ও প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয় সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী। অন্য দুইজন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
এদিকে, এ ঘটনার জন্য ছাত্রলীগ কোনো দায়ভার নেবে না বলে জানিয়েছেন চবি ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল।
চবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, ভাঙচুর ও চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত কেউই ছাত্রলীগ দাবি করার সুযোগ নেই। অভিযোগ ও তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এদের বিরুদ্ধে প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান বলেন, আমরা ঘটনাটি শুনেছি। সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ডিসি/এসআইকে/এসএজে