সন্দ্বীপের গাছুয়ায় জেলেদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি, জনতার হাতে অস্ত্রসহ আটক ২

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম
গত কয়েকদিন ধরে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার গাছুয়ায় জেলেদের কাছ থেকে অব্যাহতভাবে চাঁদাবাজি করে আসছিল একটি সংঘবদ্ধ গোষ্ঠী।  আর এই ঘটনাটি স্থানীয় সাধারণ মানুষের মাঝে বেশ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।  বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদেরও ভাবিয়ে তোলে।  গত রবিবার (৫ জুলাই) সকালে গাছুয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গাছুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ জনপ্রতিনিধিরা বৈঠক করেন।  এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা জেলেদের কাছ থেকে বাজারের টোল বাবদ শুধুমাত্র ৩০ টাকা আদায় ছাড়া যাতে কেউ অবৈধভাবে কোনো টাকা আদায় করতে না পারে সে ব্যবস্থা নিতে মোবাইলে ফোনে ইউপি চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন রাজধনকে নির্দেশ দেন।
এছাড়াও একইদিন তিনি উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ে ইউএনও বিদর্শী সম্বৌধি চাকমা’র সাথে বৈঠক করে গাছুয়া মাছ ঘাটে জেলেদের সাথে চাঁদাবাজি বন্ধের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বলেন।  সংসদ সদস্যের নির্দেশ উপেক্ষা করে সোমবার (৬ জুলাই) সকালে দুর্বৃত্তরা অন্য দিনের মতোই চাঁদা আদায় করতে যাওয়ার খবর পেলে ইউপি চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন রাজধন স্থানীয় জনতাকে সাথে নিয়ে গাছুয়া বেড়িবাঁধে হাজির হন।  এসময় তারা হাতেনাতে দু’জন চাঁদাবাজকে আটক করেন।  এ সময় একজনের কাছ থেকে অস্ত্রও উদ্ধারও করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, গত ৩-৪ বছর ধরে গাছুয়া হক সাহেব বাজার ও ঘাটমাঝিরহাটে মাছ বিক্রি করলেও ১০০ টাকা এবং না করে অন্য কোথায় বিক্রি করলেও এলাকার জেলেদের ১০০ টাকা হারে এসব হাট ইজারাদারদের বাধ্যতামূলকভাবে দিতে হয়।  তবে ইলিশ মাছ হলে এ টোলের পরিমাণ হয় দ্বিগুণ কিংবা তারও বেশী।  এছাড়া গত কয়েকদিন আগে খালে নৌকা ভেড়ানোকে নিয়ে নতুন করে আরেক সমস্যায় পড়েন জেলেরা।  গাছুয়া ঘাট মাঝির হাট ও হক সাহেব বাজার ফেরিঘাট এলাকার খালে উপজেলা প্রশাসন থেকে নিলাম গ্রহণ করার নামে দুর্বৃত্তরা প্রতি জেলের কাছ থেকে নৌকা ভেড়ানোর গদি বাবদ ৩৫০ টাকা করে আদায় করার অভিযোগ উঠে।
উপজেলা পরিষদ বা অন্য কোনো সংস্থা কর্তৃক মাছ ঘাটের নামে ইজারা দিতে আমি কখনও শুনিনি- এমন মন্তব্য করে গাছুয়া ইউপি চেয়ারম্যান রাজধন বলেন, এসব চাঁদাবাজি বন্ধ হওয়া জরুরি।  দরিদ্র জেলেদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে টাকা নেয়া হচ্ছে।
তবে সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদ কার্যালয় থেকে জানা গেছে, মাছ ঘাট দু’টি ইজারা দেয়া হলেও টোল নির্ধারণ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
গাছুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. পারভেজ জানান, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা রাজনৈতিকভাবে বিব্রতকর অবস্থায় আছি।  তবে এমপি সাহেবের হস্তক্ষেপে আশা করি এটি দ্রুত নিষ্পত্তি হয়ে যাবে’।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ