টেস্ট না করেই করোনার ভুয়া সনদ দিতো রিজেন্ট হাসপাতাল : সারওয়ার

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
রাজধানীর রিজেন্ট হাসপাতালও করোনা পরীক্ষার ভুয়া সনদ দিতো বলে প্রমাণ পেয়েছে র‌্যাব।  উত্তরা ও মিরপুরের রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে কমপক্ষে ৮ জনকে আটক করে র‌্যাবের মোবাইল কোর্ট।  সোমবার (৬ জুলাই) র‌্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে হাসপাতালটিতে অভিযান চালায় র‌্যাব।  হাসপাতালটি টেস্ট না করেই কোভিড-১৯ ‘পজিটিভ’ ও ‘নেগেটিভ’ সনদ দিতো বলে জানিয়েছেন সারওয়ার আলম।
তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালে হাসপাতালটির অনুমোদনের মেয়াদ শেষ হয়েছে।  তবুও তারা স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে কিভাবে সনদ নিয়েছে বোধগম্য নয়।  আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি’।  সারওয়ার আলম বলেন, ‘সরকারিভাবে যে টেস্টগুলো ফ্রি করার কথা সেই টেস্টের জন্য রিজেন্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাড়ে তিন হাজার টাকা করে নিচ্ছে।  সবচেয়ে জঘন্য যে কাজ করেছে সেটা হলো, টেস্ট না করে রিপোর্ট দেওয়া এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভুয়া সিল ও প্যাড ব্যবহার করা।  জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট বা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব প্রিভেন্টিভ অ্যান্ড সোস্যাল মেডিসিনসহ (নিপসম) যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্যাড ও সিল তারা ব্যবহার করেছে ওইসব প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয়েছে সিল বা প্যাডগুলো তাদের নয়।  এছাড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করোনা চিকিৎসার নামে সরকারের কাছ থেকে টাকা আদায় করছে আবার রোগীদের কাছ থেকেও মোটা অংকের বিল নিচ্ছে।  হাসপাতাল থেকে বিপুল পরিমাণ করোনার ভুয়া সনদ জব্দ করা হয়েছে।

অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম আরো বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা এখানে এসে দেখেছি তারা রোগীদের করোনার নমুনা সংগ্রহ করেছে।  সংগৃহীত অসংখ্য নমুনার মধ্যে তারা মাত্র ৪২টি নমুনা পরীক্ষা করেছে।  এর বাইরে অনেক নমুনা পরীক্ষা না করেই করোনা ‘নেগেটিভ-পজিটিভ’ রিপোর্ট দিয়েছে।  প্রাথমিকভাবে ২৬ জনের নমুনা পেয়েছি, যেগুলো পরীক্ষা না করেই ভুয়া রিপোর্ট দিয়েছে হাসপাতালটি। তিনি বলেন, উত্তরা হাসপাতাল ভবনের পাশের ভবনে রিজেন্টের আইটি শাখা।  সেখানেই নমুনা সংগ্রহের ভুয়া আইডি তৈরি করে ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছিলো।  এভাবে তারা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
মনগড়া রিপোর্ট তৈরি ছাড়াও অভিযানে গিয়ে রোগীদের সঙ্গে কথা বলে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে র‌্যাব।  হাসপাতালটিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে শুধু ভর্তি রোগীদের করোনা টেস্ট ও চিকিৎসা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হলেও তারা দীর্ঘদিন ধরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করছিল।  উদ্ধার করা ভুয়া রিপোর্টের অধিকাংশ নমুনাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করা হয়েছিল। করোনার পরীক্ষা বিনামূল্যে করার কথা থাকলেও রোগীদের কাছ থেকে তিন থেকে সাড়ে তিনহাজার টাকা আদায় করতো বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে তিনি জানান।
অভিযানের আগে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কখনও নমুনা সংগ্রহ করি না।  এ বিষয়ে আমরা বারবার আমাদের ফেসবুক পেজ ও বিভিন্নভাবে সতর্ক করে আসছি।  আমরা বারবার বলেছি, রিজেন্টের নামে একটি ভুয়া চক্র কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, গত মার্চ মাসের শেষ দিকে উত্তরা ও মিরপুরে রিজেন্ট হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা শুরু হয়। খবর বাংলাট্রিবিউনের

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ