দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
প্রতারণা আর চাপাবাজি দিয়েই উত্থান হয়েছিল তার। একসময় মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসা করে গ্রাহকের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন। প্রতারণা মামলায় জেলও খেটেছিলেন। অন্তত দুই ডজন মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু তার টিকিটির নাগালও পায়নি কেউ। কারণ তিনি নিজেকে কখনও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা, কখনও গোয়েন্দা সংস্থার ঘনিষ্ঠ, আবার কখনও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সংশ্লিষ্ট বলে পরিচয় দিয়ে বেড়াতেন। নিজেকে মিডিয়া ব্যক্তিত্ব জাহির করে অর্থের বিনিময়ে টক শো’তে অংশ নেওয়াও শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি রিজেন্ট হাসপাতালের কর্ণধার মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমের। করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতি করতে গিয়ে ধরা খেয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার (৭ জুলাই) রিজেন্ট হাসপাতাল ও প্রধান কার্যালয় সিলগালা করে দিয়েছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে করা হয়েছে নিয়মিত মামলাও।
কে এই সাহেদ/শাহেদ করিম?
বর্তমানে মো. শাহেদ/সাহেদ হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকলেও তার আসল নাম কিন্তু মো. শাহেদ করিম। পিতা- সিরাজুল করিম ও মাতা- মৃত সুফিয়া করিম। শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি। তার মা মৃত্যুবরন করেন ৬ নভেম্বর, ২০১০ সালে।
প্রতারক শাহেদের একাধিক নাম রয়েছে। সে কখনো কখনো মেজর ইফতেকার আহম্মেদ চৌধুরী, কর্ণেল ইফতেকার আহম্মেদ চৌধুরী, কখনো মেজর শাহেদ করিম হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে। কিন্তু তার আসল নাম জাতীয় পরিচয় পত্রে শাহেদ করিম লেখা। কিন্তু বর্তমানে সে মো. শাহেদ নামে আরেকটি জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করছে যার নাম্বার হলো- ২৬৯২৬১৮১৪৫৮৮৫। আর এ জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হয় ২৫-৮-২০০৮ইং। কিন্তু তাতে তার মা মারা গেছে লেখা রয়েছে, অথচ তার মা মৃত্যুবরণ করেন ৬ নভেম্বর ২০১০ তারিখে। তাতেই প্রমাণ হয় এটাও ভুয়া।
ঠিকানা হরনাথ ঘোষ রোড, লালবাগ, ঢাকা-১২১১ রয়েছে। গ্রামের বাড়ী সাতক্ষীরা জেলায়। এক নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান হয়েও প্রতারণা বাটপারি করে আজ শত শত কোটি টাকার মালিক। বিএনপি সরকারের আমলে রাজাকার মীর কাসেম আলী ও গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের সাথে সম্পর্ক গড়ে তাদের মাধ্যমে তারেক জিয়ার হাওয়া ভবনের অন্যতম কর্তাব্যক্তি হয়ে উঠে সে।
শাহেদের বেশ কিছু প্রতারণার প্রমাণ তৎকালীন প্রভাবশালী ছাত্রদল নেতা বর্তমানে জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মঞ্জু , ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সাহসী ছাত্রলীগ নেতা এসএম হলের শামীম তথা শামীম আহমেদ এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পলাশ চৌধুরীর কাছে রয়েছে।
১/১১ ফকরুদ্দিন সরকারের সময় আর খাম্বা মামুনের সাথে সে ২ বছর জেলও খাটে। জেল থেকে বের হয়ে শাহেদ ২০১১ সালে ধানমন্ডির ১৫ নং রোডে এমএলএম কোম্পানী বিডিএস ক্লিক ওয়ান নামে বাটপারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। আর সেসময় তার নাম ছিল মেজর ইফতেখার করিম চৌধুরী।
তার বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় ২টি মামলা, বরিশালে ১ মামলা, বিডিএস কুরিয়ার সার্ভিসে চাকরির নামে মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রতারণার কারনে উত্তরা থানায় ৮টি মামলাসহ রাজধানীতে ৩২টি মামলা রয়েছে।
অন্যদিকে, সে মার্কেন্টাইল কো- অপারেটিভ ব্যাংক বিমানবন্দর শাখা থেকে ৩ কোটি টাকা লোন নেয় আর সেখানে সে নিজেকে কর্ণেল (অব.) পরিচয় দিয়ে কাগজপত্র দাখিল করেন সে ব্যপারে আদালতে ২টি মামলা চলমান আছে। এ সম্পর্কে একুশে টিভি ২০১৫/১৬ সালে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করে।
এই প্রতারক মো. শাহেদ ওরফে মেজর/কর্ণেল ইফতেখার আহম্মেদ চৌধুরী, ওরফে শাহেদ করিম, ওরফে মো. সাহেদ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী ও কর্তা ব্যক্তিদের কাছের লোক পরিচয় দিয়ে থাকে। প্রকাশ্যে অনেক মন্ত্রীর নাম ব্যবহার করেই মানুষকে হুমকি দিয়ে থাকে।
তার গাড়িতে ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড ও সাইরেনযুক্ত হর্ন ব্যবহার করে। সে নিজেকে কখনো মেজর, কর্ণেল, সচিব, এমনকি সে নাকি ৯৬ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের সময় প্রধানমন্ত্রীর এডিসি ছিলো এমন পরিচয়ও দিয়ে থাকে। আবার কিছুদিন যাবৎ সে বিভিন্ন টিভিতে টকশোতে খুব নীতিবাক্য বলে।
বর্তমানে সে উত্তরাস্থ ১১ নং সেক্টরের ১৭ নং রোডে, বাড়ী নং-৩৮ একটি হাসপাতাল গড়ে তুলেছে যার কোনো বৈধ্য লাইসেন্স নেই, যা র্যাব এর অভিযানেই প্রমানিত হয়েছে আর হাসপাতাল চালানোর মত কোনো ডাক্তার, নার্স, যন্ত্রপাতি নেই তবুও দালালের মাধ্যমে টঙ্গী সরকারি হাসপাতাল, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রোগী ক্রয় করে এনে তাদের আটকে রেখে হাজার হাজার টাকা আদায় করার অভিযোগ আছে।
এছাড়াও প্রতারণার টাকায় সে উত্তরা পশ্চিম থানার পাশে গড়ে তুলেছে রিজেন্ট কলেজ ও ইউনির্ভাসিটি, আরকেসিএস মাইক্রোক্রেডিট ও কর্মসংস্থান সোসাইটি যদিও এর একটিরও কোনো বৈধ লাইসেন্স নেই। আর অনুমোদনহীন আরকেসিএস মাইক্রোক্রেডিট ও কর্মসংস্থান সোসাইটির ১২টি শাখা করে হাজার হাজার সদস্যদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।
এর আগেও সে উত্তরাস্থ ৪,৭ ও ১৩ নম্বর সেক্টরে ভুয়া শিপিংয়ের ব্যবসা করেছে সেই ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামেই সাধারন মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে মেরে দিয়েছে। বর্তমানে তার ভিজিটিং কার্ডে সে রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান পরিচয় দেয়। কিছুদিন আগে সে একটি অস্ত্রের লাইসেন্সও নিয়েছে। অথচ অস্ত্রের লাইসেন্স করতে বাৎসরিক ন্যূন্যতম ৩ লক্ষ টাকা ইনকাম ট্যাক্স দিতে হয়। সে কখনো ইনকাম ট্যাক্স দেয় না বলে কথিত আছে। শাহেদের প্রতারণা সম্পর্কে দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় ২০১৪ সালের ১১ ডিসেম্বর একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় এবং অপরাধ জগত পত্রিকাও সংবাদ পরিবেশন করে। শাহেদের বেশ কয়েকটি গাড়ি রয়েছে সে গাড়িগুলোর কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। তার গাড়িতে ভিভিআইপি ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড, অবৈধ ওয়ারল্যাস সেট আর অস্ত্রসহ ৩ জন বডিগার্ড থাকার কারনে সাধারণত পুলিশ তার গাড়ি থামাবার সাহস পায় না।
তার অফিসে লাঠিসোটা রাখা হয়। এমনিক তার অফিসের ভেতরে একটি টর্চার সেলও রয়েছে। কোনো পাওনাদার টাকা চাইতে আসলে পাওনাদারদের সেখানে টর্চার করা হয়। তার অফিসে সুন্দরী মেয়েদের রাখা হয় বেশী আর অনেক সুন্দরীর সাথে তার অবৈধ সর্ম্পক রয়েছে।
তার বিরুদ্ধে ৩২ টি মামলা রয়েছে দেশের বিভিন্ন থানায় এর মধ্যে ধানমন্ডি, মিরপুর, উত্তরায় বেশী সেগুলোর কয়েকটি মামলার নং- বাড্ডা- ৩৭(৭)০৯, আদাবর-১৪(৭)০৯, লালবাগ-৪৭(৫)০৯, উত্তরা ২০(৭)০৯, উত্তরা১৬(৭)০৯, উত্তরা ৫৬(৫)০৯, উত্তরা ১৫(৭)০৯, ৩০(৭)০৯, ২৫(৯)০৯, ৪৯(০৯)০৯, ১০(৮)০৯ সবগুলো মামণাআ ৪২০ ধারায়।
তার প্রতিষ্ঠান রিজেন্ট কেসিএস লিঃ ইউসিবি ব্যাংক উত্তরা শাখায় একাউন্ট নং-০৮৩২১০১০০০০১০০০৩, রিজেন্ট হাসপাতাল লি. ইউসিবি ব্যাংক উত্তরা শাখায় একাউন্ট নং-০৮৩১১০১০০০০০০৬১৬, সহ ব্র্যাক ব্যাংক উত্তরাসহ বিভিন্ন ব্যাংকে শত শত কোটি রয়েছে।
বর্তমানে সে রিজেন্ট গ্রুপ ও কর্মসংস্থান সোসাইটি কেকেএসের নামে প্রতিষ্ঠান বাড়ি ১৬ রোড ১৭ সেক্টর ১১ উত্তরা ঢাকায় বসে সকল অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে, সে বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেয়েও বড় আওয়ামী লীগার। মধ্যরাতে বিভিন্ন টিভির টকশোতে এমন নীতিবাক্য বলে যা দেখে হাসি পায়। যে নিজে মহাচোর আর সেই টকশোতে বসে অন্যকে বলে তুই চোর। অবাক লাগে ৩২ মামলার আসামি আজ নাম পাল্টে টকশোতে বসে জাতিকে নীতিবাক্য আর রাজনীতির সবক দেয়।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর তারা বেশ কয়েকদিন ধরে গোয়েন্দা নজরদারি করে আসছিলেন রিজেন্ট হাসপাতালে। সেখানে করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা নিয়ে তারা জালিয়াতি করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন। রিজেন্টের মালিকসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের দিকে সাহেদ ধানমন্ডি এলাকায় বিডিএস কিক ওয়ান এবং কর্মমুখী কর্মসংস্থান সোসাইটি (কেকেএস) নামে দুটি এমএলএম কোম্পানি খুলে গ্রাহকদের কাছ থেকে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে গা ঢাকা দিলে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। ২০১১ সালে তাকে প্রতারণা মামলায় একবার গ্রেফতারও করা হয়েছিল। কিন্তু অর্থের বিনিময়ে দ্রুতই তিনি জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে আসেন। এরপর প্রতারণার অর্থ দিয়ে তিনি রিজেন্ট গ্রুপ নামে ব্যবসা শুরু করেন। চালু করেন রিজেন্ট হাসপাতাল। যদিও এর কয়েক বছর আগেই হাসপাতালের অনুমোদন নিয়েছিলেন তিনি।
সূত্র জানায়, এবার ভিন্ন কৌশলে চলা শুরু করেন তিনি। বিভিন্ন সরকারি দফতরে, বিশেষ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে তিনি নিজেকে কখনও অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা, কখনও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত এমন নানা পরিচয় দিয়ে বেড়াতেন। কৌশলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছবি তুলতেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে স্পন্সর সহযোগিতা করে তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করতেন। এসব কিছু কাজে লাগাতেন নিজের স্বার্থে। অফিস, হাসপাতাল বা বাসা সবখানেই সরকারের ক্ষমতাধর ব্যক্তি বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে তোলা ছবি বাঁধাই করে টাঙিয়ে রাখতেন। যাতে সবাই বুঝতে পারে তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চলাফেরা রয়েছে। বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে তোলা ছবিকে পুঁজি করেই রিজেন্ট মালিক সাহেদ বিভিন্ন অপকর্ম করছেন। এ বিষয়ে কেউ কিছু বললেই দেখে নেওয়ার হুমকি দিতেন তিনি। তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক উপ-কমিটির সদস্য বলেও পরিচিত যা মিত্যা বলে জানা গেছে। তাকে ‘গুলি সাহেদ’ বলেও ডাকা হয়। এর ব্যাখ্যায় তিনি প্রচার করতেন- তিনি আওয়ামী লীগের হয়ে বিএনপি-জামায়াতের সাথে লড়াই করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। এভাবেই সাহেদ তার প্রতারণার কাজে সুবিধা আদায় করতেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত চার-পাঁচ বছর ধরে নিজেকে কথিত বুদ্ধিজীবী বা রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে পরিচয় দিতেন তিনি। সেন্টার ফর পলিটিক্যাল রিসার্চ বা রাজনীতি গবেষণা কেন্দ্র নামে একটি প্রতিষ্ঠানও চালাতেন তিনি। এজন্য গাঁটের টাকা খরচ করে বিভিন্ন টক শো’তে অংশ নিতেন বলেও জানা গেছে। টক শো’তে বিরোধী রাজনীতিকদের বিষয়ে বেশি বেশি সমালোচনা করা সাহেদের বিরুদ্ধে একসময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কথাও শোনা গেছে। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সুবিধা আদায়ের জন্য ‘নতুন কাগজ’ নামে একটি নামসর্বস্ব পত্রিকাও খুলেছেন তিনি। নিজেকে সেই পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে পরিচয় দিতেন তিনি। এসবই ছিল তার বিভিন্ন অপকর্ম থেকে নিজেকে বাঁচানোর ঢাল।
র্যাবের একজন কর্মকর্তা জানান, সাহেদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তারা প্রায় ৩২টি মামলা খুঁজে পেয়েছেন। এর বেশির ভাগই প্রতারণা মামলা। কারণ প্রতারণা করে অর্থ-সম্পদ গড়ে তোলাই ছিল তার মূল কাজ। এজন্য করোনা মহামারি চলাকালেও স্পর্শকাতর একটি বিষয়েও সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতে বিবেকে বাধেনি তার।
জানা গেছে, সাহেদের গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলায়। নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা সাহেদ অল্পদিনেই কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। তার এই উত্থানের বিষয়ে এলাকাবাসীও হতবাক। যদিও সাতক্ষীরায় তাকে সবাই প্রতারক সাহেদ হিসেবেই চেনে। এদিকে রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদের অপকর্ম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। প্রতারণা করাই যার মূল কাজ, সেই ব্যক্তি কিভাবে সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে চলাফেরা করতেন, কিভাবে কথিত বুদ্ধিজীবী সেজে টক শো’তে অংশগ্রহণ করতেন, তার প্রমোটার কারা- এসব নিয়ে চলছে আলোচনা।
উল্লেখ্য, গত সোমবার র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। পরীক্ষা ছাড়াই করোনার সনদ দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছিল তারা। র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত অন্তত ছয় হাজার ভুয়া করোনা পরীক্ষার সনদ পাওয়ার প্রমাণ পায়। একদিন পর গতকাল মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশে র্যাব রিজেন্ট হাসপাতাল ও তার মূল কার্যালয় সিলগালা করে দেয়। রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় নিয়মিত মামলা করা হয়েছে।
ডিসি/এসআইকে/এমএসএ