সিনহা রাশেদের মাকে প্রধানমন্ত্রীর ফোন, সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
পুলিশের গুলিতে নিহত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের (৩৬) মা নাসিমা আক্তারকে ফোন করে সমবেদনা ও সান্ত্বনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) বিকালে প্রধানমন্ত্রী সাবেক মেজর সিনহার মাকে ফোন করেন।  প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিহতের পরিবারকে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন।  একই সঙ্গে আর্থিক সহায়তারও আশ্বাস দেন।  অন্যদিকে নিহতের পরিবারের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছে সিনহার পরিবার।
এদিকে সেনা কর্মকর্তা সিনহা রাশেদ খান নিহতের ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিটি মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) থেকে তদন্তকাজ শুরু করেছে।  এদিন সকালে তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমান কক্সবাজারে পৌঁছে বেলা ১১ টার দিকে কক্সবাজার সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যদের নিয়ে এক সমন্বয় সভার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করেন।  কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গত শুক্রবার (৩১ জুলাই) রাত ১০ টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।  ওই ঘটনার পর প্রথমে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহা. শাহজাহান আলীকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হলেও পরে তা পুনর্গঠন করা হয়।
গত ২ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক পুনর্গঠন করা কমিটিতে প্রধান করা হয়েছে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে।  কমিটিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের একজন প্রতিনিধি, রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও কক্সবাজারের এরিয়া কমান্ডারের একজন প্রতিনিধি, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজির একজন প্রতিনিধি ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের একজন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে।  কমিটিকে সরেজমিনে তদন্ত করে ঘটনার কারণ, উৎস অনুসন্ধান এবং ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে তার করণীয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট মতামত দিতে বলা হয়েছে।
ওই ঘটনার পর ২ আগস্ট কক্সবাজারে আসেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক ও অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. জাকির হোসেন। সোমবার বিকেলে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে টেকনাফ পরিদর্শন করেন ডিআইজি।  কিন্তু ঘটনার বিষয়ে পুলিশের কোনো কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে কিছুই বলেননি।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের (৩৬) মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করে তার পরিবার।  তারা বলছে, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়েও নিজ দেশে সিনহাকে এভাবে মারা যেতে হবে, তা তারা কখনোই ভাবেননি।
সিনহার বাড়ি যশোরের বীর হেমায়েত সড়কে। তার বাবা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপসচিব মুক্তিযোদ্ধা মরহুম এরশাদ খান।  সিনহা ৫১ বিএমএ লং কোর্সের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশন লাভ করেন।  ২০১৮ সালে সৈয়দপুর সেনানিবাস থেকে তিনি স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন।  তিনি প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় নিয়োজিত স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সেও (এসএসএফ) দায়িত্ব পালন করেন।
সিনহা অবিবাহিত ছিলেন।  দুই বোনের একমাত্র ভাই তিনি।  বড় বোন একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষক।  ছোট বোন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এবং আমাজনে চাকরি করেন।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ