সীতাকুণ্ডে শীপইয়ার্ডে সংঘবদ্ধ চোরের হানা, চোখ হারালো গার্ড

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
সীতাকুণ্ড উপজেলার একটি শীপইয়ার্ডে সিকিউরিটি ইনচার্জের উপর হামলা চালিয়ে আড়াই লাখ টাকার স্ক্র্যাপ লোহা চুরি করে নিয়েছে একটি লোহা চোর চক্র।  এসময় চোরের দলের সদস্যরা দুই সিকিউরিটি ইনচার্জের উপর হামলা চালিয়েছে।  এতে করে একজনের চোখ নষ্ট হয়ে গেছে।  শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) ভোরগত গভীর রাতে সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারি ইউনিয়নের কদমরসুল এলাকায় সাগর উপকূলে অবস্থিত আরেফিন শীপব্রেকিং ইয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এ ঘটনায় সীতাকুণ্ড থানায় একটি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। 
জানা যায়, শনিবার ভোরগত রাতে ১৫ থেকে ২০ জনের সংঘবদ্ধ একটি চোরের দল একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে শীপইয়ার্ডে হানা দেয়।  অস্ত্রের মুখে দায়িত্বরত দারোয়ানদের জিম্মি করে পিতল ও স্ক্র্যাপ লোহা নিয়ে যায়।  এসব পিতল ও স্ক্র্যাপ লোহার আনুমানিক মূল্য আড়াই লাখ টাকা।  খবর পেয়ে ইয়ার্ডের সিকিউরিটি ইনচার্জ মোহাম্মদ আরিফ হোসেন (৩০) ও রেজাউল করিম ঘটনাস্থলে গিয়ে চোরদের প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।  কিন্তু চোরের দলের সদস্যরা কিরিচ দিয়ে তাদের কুপিয়ে জখম করে।  চোরদের অস্ত্রের আঘাতে আরিফ হোসেনের চোখ নষ্ট হয়ে যায়।  পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করেন।
এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে ইয়ার্ডের অপর সিকিউরিটি ইনচার্জ মি. মাইকেল বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় একটি হত্যা প্রচেষ্টা ও চুরির মামলা দায়ের করেন।  এতে আসামি করা হয় স্থানীয় চোর চক্রের সদস্য ফারুক (২৭), নজরুল (২৮), আলাউদ্দিন (২২), সাহাবউদ্দিন (২৬), ইলিয়াছ (২৮), ইউসুফ সওদাগর (৪৫), রণি জদাশ (২৪), মোজাম্মেল (৩৫) ও মঞ্জু (৩২) সহ অজ্ঞাত ১০জনকে।
স্থানীয় ইয়ার্ড মালিকরা জানান, শীপইয়ার্ডকে ঘিরে উপজেলার মাদামবিরিহাট কনফিডেন্স সিমেন্ট কারখানা সংলগ্ন ইছামতি খাল এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ চোরের চক্র গড়ে উঠেছে।  তারা প্রতি রাতে সাগর উপকূলের কোনো না কোনো ইয়ার্ডে সিকিউরিটি গার্ডদের জিম্মি করে স্ক্র্যাপ লোহা ও স্ক্র্যাপ জাহাজের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।  থানায় মামলা দিলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সুমন চন্দ্র বণিক মামলা রেকর্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘চোর চক্রটির হামলায় দুই সিকিউরিটি ইনচার্জ গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।  ইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।  আমরা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রেখেছি’।

ডিসি/এসআইকে/ইউএস