বাঁশখালীতে মারামারি বন্ধে মধ্যস্থতাকারীদের উপর হামলা, মুক্তিযোদ্ধাসহ আহত ৪

বাঁশখালী প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউপির পূর্ব চাম্বল এলাকায় পাহাড়ি জমি দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মারামারি সমাধান করতে গিয়ে মধ্যস্থকারীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।  বুধবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে চাম্বল ইউপির পূর্ব চাম্বল মিয়ার দোকান এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্ব চাম্বল এলাকায় ৮ কানি পাহাড়ি জমির দখলকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মাওলানা ফৌজুল হক ও ছৈয়দ প্রকাশ পাইপমিস্ত্রী পেড়ানের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।  বুধবার (০৭ অক্টোবর) দুপুর দেড়টার দিকে পূর্ব চাম্বল মিয়ার দোকান এলাকায় দুইপক্ষই একে অপরের সাথে বাকবিতণ্ডায় যুক্ত হয়।  একপর্যায়ে তা হাতাহাতিতে চলে যায়।  এসময় স্থানীয় মিয়ার দোকান এলাকার ব্যবসায়ী ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল হুদা এবং মিয়ার দোকান ব্যবসায়ী কমিতির সভাপতি সোহেল ইকবাল তাদেরকে সরিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।  এর প্রায় ২ ঘন্টা পর ছৈয়দ প্রকাশ পেড়ানের নেতৃত্বে ১৫-১৬ জনের একটি দল মধ্যস্থকারী নুরুল হুদা ও সোহেল ইকবালের দোকানে গিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।  এ সময় তাদের দোকানের আসবাবপত্র ভাঙচুর ও মারধর করে।  এসময় সোহেল ইকবালের দোকানের ক্যাশ থেকে নগদ সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ করেন সোহেল ইকবাল।  এ সময় হামলাকারীদের আক্রমণে সোহেল ইকবাল, আশেক এলাহী (৩০), নুরুল হুদা (৫৯) ও মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার শামশুল আলম (৭০) আহত হন।
আহত মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার শামশুল আলমকে উদ্ধার করে বাঁশখালী হাসপাতালে নেওয়া হলে তার অবস্থা গুরুতর বিবেচনায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।  এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা যায়।
আহত সোহেল ইকবাল জানান, জমির বিরোধের জেরে ২ জুনের মারামারি হয়েছে আমার দোকানের সামনে।  তখন আমি এবং পার্শ¦বর্তী দোকানদারেরা বের হয়ে তাদের মারামারি থামিয়ে দিই।  ওই ঘটনার প্রায় দুই ঘন্টা পরে ছৈয়দের নেতৃত্বে অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ১৫-১৬ জনের একটি গ্রুপ সিএনজি অটোরিকশাযোগে আমারে দোকানের সামনে আসে এবং অতর্কিতভাবে আমার এবং পার্শ্ববর্তী নুরুল হুদার দোকানে হামলা, মারধর ও ভাঙচুর চালায়।  এ সময় আমার দোকানের ক্যাশ বক্স থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে যায় তারা।  এভাবে হঠাৎ আক্রমণ কেন করল আমি বুঝতেছি না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নাছির আহমদ জানান, জমির দখল নিয়ে ২ মালিকের তর্কাতর্কির মধ্যে একপর্যায়ে মারামারি লেগে যায়।  তখন মারামারি যারা করতে দেয়নি পরবর্তীতে তাদের উপর হামলা করা হয়েছে।  একজন মুক্তিযোদ্ধার উপরও হামলা করা হয়েছে।  বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।  কতগুলো নিরীহ মধ্যস্থতাকারীদের উপর এ হামলা করা হয়েছে।  শুনেছি দোকান ভাঙচুর ও টাকা পয়সা লুট করা হয়েছে।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, চাম্বলের ঘটনায় কেউ এখনও পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ দেয়নি।  অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ডিসি/এসআইকে/এমএমবিটি