নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানা এলাকা থেকে এক তরুণীকে তুলে নিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আটজনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) রাতে সিঅ্যন্ডবি মোড় থেকে ওই তরুণীকে তুলে নেয়া হয় বলে জানায় পুলিশ। আজ শুক্রবার (০৯ অক্টোবর) বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশ জানায়।
চান্দগাঁও থানার ওসি আতাউর রহমান খোন্দকার জানান, বৃহস্পতিবার রাতে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা থেকে গাড়িতে ওঠেন ওই তরুণী। নগরীর সিঅ্যান্ডবি এলাকায় নামেন তিনি। এ সময় ওই তরুণীকে তুলে নিয়ে কয়েকজন মিলে ধর্ষণ করে। খবর পেয়ে আমরা আটজনকে আটক করেছি।
নগরের চান্দগাঁও থানাধীন মৌলভীপুকুর পাড় এলাকায় ‘গণধর্ষণের’ ঘটনায় আটক ব্যক্তিরা ওই এলাকায় সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে অপর্কম করতো বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। মৌলভীপুকুর পাড় এলাকায় সড়কের উপর দাঁড়িয়ে পুলিশের সোর্স পরিচয় দেওয়া জাহাঙ্গীর ও সুমনসহ অন্যরা মানুষের কাছ থেকে মোবাইল ও টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিতো বলে জানা গেছে। শুক্রবার (০৯ অক্টোবর) রাতে স্থানীয়দের অনেকেই জানান, এলাকায় নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত সুমন, জাহাঙ্গীরসহ অন্যরা। তারা রাতের বেলা সিএনজি অটোরিকশা চালক হিসেবে কাজ করে। এসবের আড়ালে মূলত তারা ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত।
এর আগে সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে সিএমপির উত্তর বিভাগ। পাঁচলাইশে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপ-কমিশনার (উত্তর) এর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ‘গণধর্ষণের’ ঘটনায় আটজনকে আটকের বিষয়টি জানায় পুলিশ। ‘ধর্ষণের’ ঘটনায় আটক আটজন হলেন জাহাঙ্গীর আলম (৩৮), মো. ইউসুফ (৩২), মো. রিপন (২৭), মো. সুজন (২৪), দেবু বড়ুয়া প্রকাশ জোবায়ের হোসেন (৩১) (নও মুসলিম), মো. শাহেদ (২৪), রিন্টু দত্ত প্রকাশ বিপ্লব (৩০) ও মনোয়ারা বেগম প্রকাশ লেবুর মা (৫৫)। এদের মধ্যে মনোয়ারা বেগম ধর্ষণে সহায়তাকারী বলে জানিয়েছে পুলিশ।
উপ-কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক বলেন, এক নারী রাঙ্গুনিয়া থেকে চট্টগ্রাম শহরে আসছিলেন। কাপ্তাই রাস্তার মাথা সিএনজি অটোরিকশা থেকে নেমে রিকশা নিয়ে তার বাসায় যাচ্ছিলেন। পথে মৌলভীপুকুর পাড় এলাকায় জাহাঙ্গীরসহ আসামিরা ওই নারীকে রিকশা থেকে নামিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরে পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে আটজনকে আটক করে। এদের মধে এক নারীও রয়েছেন যিনি ধর্ষণে সহায়তাকারী।
চান্দগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাজেস বড়ুয়া জানান, জাহাঙ্গীরের সঙ্গে ভুক্তভোগী নারী পূর্ব পরিচয় রয়েছে বলে জানতে পেরেছি। ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পনা কী না তা তদন্তে জানা যাবে। তিনি বলেন, জাহাঙ্গীর আলমসহ অন্যরা ওই নারীকে ধর্ষণের সময় মনোয়ারা বেগম প্রকাশ লেবুর মা তাদের সহযোগিতা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। মৌলভীপুকুর পাড় এলাকার বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন আহমেদ জাহেদ বলেন, জাহাঙ্গীর আলম রিপন কলোনীর কেয়ারটেকার। খুবই খারাপ প্রকৃতির লোক জাহাঙ্গীর।
এদিকের আটক আটজনের মধ্যে একজন দেবু বড়ুয়া প্রকাশ জোবায়ের হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। পুলিশের গাড়ি থেকে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, পুলিশের সোর্স সুমন আমাকে ফোন করে ডেকে এনে ফাঁসিয়েছে। আমি ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত নই। প্রয়োজনে আমার ডিএনএ টেস্ট করা হোক।
ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে সুমনসহ জড়িত অন্যদের আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন উপ-কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) নাদিরা নুর, সহকারী কমিশনার (বায়েজিদ জোন) পরিত্রান তালুকদার, সহকারী কমিশনার (পাঁচলাইশ জোন) শহীদুল ইসলাম, চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খন্দকার।
ডিসি/এসআইকে/আরআর