চট্টগ্রামে ২ শতাধিক চোরাই মোবাইলসহ আটক ৮, স্টেশন রোড থেকে মোবাইল কিনলেই বিপদ!

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রাম নগরে দুই শতাধিক মোবাইল সেটসহ আটজনকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ।  এদের মধ্যে পাঁচজন ছিনতাই ও মোবাইল চুরির সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশ জানিয়েছে।  অন্যরা ওই সব মোবাইল বিক্রি করত।  নগরীর স্টেশন রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে গত বুধবার (২ ডিসেম্বর) রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।  তাদের দুইজন নগরের পুরাতন রেলস্টেশন থেকে নতুন রেল স্টেশন পর্যন্ত ফুটপাতে কাঠের টেবিল বসিয়ে যেসকল মোবাইল বিক্রি করা হয় তার ব্যবসা করে।  এই স্থানগুলোতে ফুটপাতে যেসকল মোবাইল বিক্রি করা হয় সেগুলো চুরি-ছিনতাইয়ের।  ফলে নানান অপরাধের সূত্র ধরে মোবাইল ব্যবহারকারীকে আটক করা হলে অনেকেই এই্ ফুটপাত থেকে এসব মোবাইল কিনেছেন বলে জানিয়েছেন।  ফলে অহেতুক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জেরার মুখে পড়তে হয় অনেককে।  এ জন্য সেখান থেকে কোনো মোবাইল ফোন না কেনার পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ।
গ্রেফতার আটজন হলেন মো. ফজলুল করিম (৩৫), মো. শাহ আলম (৩০), মো. মহিউদ্দিন (২৭), ইয়াকুব হোসেন সাইমুন (১৯), রাজীব হোসেন (২৭), মো. সাজ্জাদ (২২), মিজানুর রহমান রাকিব (২০) ও মো. শাহাদাত (২২)।
কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন জানান, ‘গ্রেফতার আটজনের মধ্যে ফজলুল, শাহ আলম ও মহিউদ্দিন চোরাই মোবাইল বেচা-কেনা করে।  আর অন্যরা মোবাইল ছিনতাই ও চুরির সাথে জড়িত’।
বুধবার নগরীর পুরাতন রেল স্টেশন এলাকার বাগদাদ হোটেল গলি থেকে ফজলুল করিম ও শাহ আলমকে ১৬৪টি মোবাইলসহ গ্রেফতার করা হয়।  যেগুলোর ৭২টি ফজলুল করিমের কাছে এবং ৯২টি শাহ আলমের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।
ওসি মহসিন বলেন, গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় যে- বিভিন্ন ছিনতাইকারী ও চোরদের কাছ থেকে তারা কম দামে কিনে বেশি দামে মোবাইলগুলো বিক্রি করে।  এর সাথে আরও কয়েকজন জড়িত এবং পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়েছে।
ফজলুল ও শাহ আলমকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে নতুন রেল স্টেশন সংলগ্ন পাবলিক টয়লেটের কাছে কাঠের টেবিলে মোবাইল সাজিয়ে বিক্রির সময় ২৯টি মোবাইল সেটসহ মহিউদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়।
নগরীর নতুন স্টেশন থেকে পুরাতন স্টেশন এলাকার ফুটপাথগুলো চোরাই মার্কেট বলে পরিচিত নগরবাসীর কাছে।  যেখানে বিভিন্ন ধরনের পুরাতন মোবাইল, জামা কাপড় এবং বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী বেচা-কেনা হয়।  চুরি ও ছিনতাই হওয়া মোবাইল সেটের সন্ধান সেখানে পাওয়া যায় বলে অভিযোগ আছে।
ওসি মহসিন বলেন, গ্রেফতার ফজলুল, শাহ আলম ও মহিউদ্দিন নতুন ও পুরাতন রেল স্টেশন এলাকায় টেবিল পেতে পুরানো মোবাইল বেচা-কেনা করেন।  এসব মোবাইল তারা বিভিন্ন ছিনতাইকারী ও চুরির সাথে জড়িত লোকজনদের কাছ থেকে কেনেন।  তিনি আরও বলেন, এসব স্থান থেকে মোবাইল কেনা লোকজনকে অনেক সময় পুলিশি ঝামেলায় পড়তে হয়।  অনেক মামলার আলামত উদ্ধার করতে গিয়ে এসব মোবাইল ক্রেতার সন্ধান পাওয়া যায়।  যারা জিজ্ঞাসাবাদে স্টেশন রোডের চোরাই মোবাইলের দোকানগুলো থেকে কিনেছে বলে জানায়।
স্টেশন রোডের ফুটপাথে সাজিয়ে রাখা এসব দোকান থেকে মোবাইল না কেনার পরামর্শ দিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা মহসিন।
এদিকে রাতে স্টেশন রোড ও নিউমার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে অন্য পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।  যাদের কাছ থেকে তিনটি ছোরা এবং আরও কিছু মোবাইল উদ্ধার করা হয়।  তারা পথচারী এবং বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীদের কাছ থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নিতেন বলে পুলিশ জানায়।
ওসি মহসিন বলেন, ‘পুরাতন স্টেশন এলাকায় চোরাই মোবাইল বিক্রির সাথে সম্পৃক্ত ১৪ জনের তালিকা পেয়েছে পুলিশ।  যাদের মধ্যে কয়েক জন কারাগারে আছেন চুরি কিংবা ছিনতাই মামলার তদন্তে পাওয়া মোবাইলের ক্রেতা বিক্রেতা হিসেবে।  আর বাকিদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে’।

ডিসি/এসআইকে/এমএনইউ