এবার সাইবার ফরেনসিক ল্যাব হচ্ছে চট্টগ্রামে

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
দীর্ঘ অপেক্ষার পর চট্টগ্রামের মানুষ চট্টগ্রামেই ডিজিটাল সাইবার ফরেনসিক ল্যাব পেতে যাচ্ছেন।  যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিগত সহায়তায় স্থাপন হতে যাওয়া ল্যাবটি পরিচালনা করবে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।  তাদের ব্যবস্থাপনাতেই স্থাপিত হবে বহুল প্রত্যাশিত এই ল্যাবটি।  ইতোমধ্যে ল্যাবের অবকাঠামোগত কাজ শুরু হয়েছে। এই মাসের শেষের দিকে ল্যাবের বিভিন্ন সরঞ্জাম চট্টগ্রামে পৌঁছানোর আশা করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
আগামি জানুয়ারিতে প্রথম পর্যায়ে ১২ জন কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চালু করা হবে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কাউন্টার টেরেরিজম ইউনিটের অধীনে সাইবার অপরাধ তদন্ত বিভাগ ও ডিজিটাল সাইবার ফরেনসিক ল্যাব।  যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের এন্টিটেরোরিজম অ্যাসিসটেন্স (এটিএ) এর আওতায় এ প্রশিক্ষণ এবং সাইবার ফরেনসিক ল্যাব হচ্ছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর জানান, সাইবার অপরাধ তদন্ত একটা বিশেষায়িত বিষয়।  এটা সবার তদন্ত করার সুযোগ নেই।  এই ল্যাব চালু হলে সাইবার অপরাধের পাশাপাশি অন্যান্য মামলা তদন্তেও সহায়ক হবে।  তিনি বলেন, সাইবার বিষয়ক ‍বিভিন্ন অপরাধের বিশ্লেষণ ও রহস্য উদঘাটনে আগে যেসব সুবিধা বাইরে থেকে নেওয়া হতো, ল্যাব চালুর ফলে তা এখান থেকেই পাওয়া যাবে।  তবে পুলিশের অন্যান্য ইউনিট থেকে যেসব সুবিধা নেওয়া হত তাও অব্যাহত থাকবে।
সিএমপি কমিশনার আরও বলেন, অতীতে সিএমপি সদস্যদের যেসব প্রশিক্ষণ বাইরে কিংবা অভ্যন্তরীণভাবে হয়েছে, ল্যাব চালু হলে সিএমপিতে সাইবার অপরাধের তদন্তের বিষয়টি কাঠামোগত পর্যায়ে আসবে।  উন্নত দেশের সাইবার ল্যাবের আদলে চট্টগ্রামের এই ল্যাবটি করা হবে বলে জানান সালেহ মোহাম্মদ তানভীর।
নগর পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে যেমন বাড়ছে ব্যবহারকারীর সংখ্যা তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাইবার অপরাধ।  যেগুলোর সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হচ্ছে উঠতি বয়সী তরুণী এবং নারীরা। প্রতিদিন চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায়, গোয়েন্দা কার্যালয়ে কিংবা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটে অভিযোগ জমা পড়ছে।  যেগুলোর বেশিরভাগ ভিকটিম নারীরা।  চট্টগ্রামে সাইবার ফরেনসিক ল্যাব চালুর ফলে এসব অপরাধের তদন্ত করাও সহজ হয়ে উঠবে বলে জানান তারা।
নগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আসিফ মহিউদ্দীন বলেন, সাইবার অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর দুইটি দিক থাকে যার একটি শনাক্তকরণ এবং অপরটি তদন্ত।  চট্টগ্রামে চালু হতে যাওয়া ল্যাবটির মাধ্যমে পুলিশের তদন্ত কাজের অগ্রগতি ঘটবে।
জানুয়ারি মাসে ১২ জনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই বিভাগ এবং ল্যাবের কাজ শুরু হবে।  ২০২১ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে আরও কিছু কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষিত করা হবে।
তিনি জানান, পুলিশ কর্মকর্তা আসিফ মহিউদ্দীন বলেন, ল্যাবের সরঞ্জাম এবং সফটওয়ারসহ প্রযুক্তিগত বিভিন্ন সহায়তা দেবে এটিএ।  যেগুলোর মাধ্যমে সাইবার অপরাধ এবং সামাজিক গণমাধ্যমের মাধ্যমে ছড়ানো অপরাধেরও তদন্ত কাজ সহজ হবে।  এছাড়া বিভিন্ন সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের গুজব ছড়িয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা হয়ে থাকে।  এ ল্যাব চালুর সে ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পদক্ষেপও নেয়া যাবে।
পাশাপাশি অন্যান্য মামলারও ডিজিটাল সাইবার ফরেনসিক পরীক্ষা করা যাবে বলে জানান এডিসি আসিফ।

ডিসি/এসআইকে/এমএনএ