আপন বোনকে হত্যা করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মামলা!

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাসিরনগরে দুই বছর আগের চাঞ্চল্যকর রফিজা খাতুন হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই।  প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে স্বামী পরিত্যক্তা আপন বোন রফিজাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মুছা মিয়া।  এরপর নিজেই মামলা করেন।
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে শহরের ভাদুঘর এলাকায় নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ব্রাহ্মণবাড়িয়া পিবিআইর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন।
তিনি জানান, ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নের রামপুরের দরবেশ মিয়ার মেয়ে রফিজা খাতুনকে হত্যা করেন তারই আপন ভাই মুছা মিয়া ও তার সহযোগীরা।  পরবর্তীতে মুছা মিয়া নিজেই বাদী হয়ে প্রতিপক্ষের লোকদের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি নাসিরনগর থানায় মামলা করেন।
পুলিশ সুপার জানান, দুই বছর পর চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই।  গ্রেফতার করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিনজনকে।  তারা হলেন- রামপুরের দরবেশ মিয়ার ছেলে সোহাগ মিয়া, সিরাজ মিয়ার ছেলে মো. আক্কাছ মিয়া, সাদত মিয়ার ছেলে পরশ মিয়া।
তিনি আরো জানান, মুছা মিয়ার সঙ্গে একই গ্রামের বাসিন্দা আবু কালামের বিরোধ চলছিল।  সবশেষ গ্রামের একটি খাস জমি দখল নিয়ে দুইজনের মধ্যে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে।  ওই জমি নিয়ে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।  সেই সংঘর্ষে আবু কালামের এক সমর্থক নিহত হন।  এ খবর জানার পর মুছা মিয়া প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে তার বোনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।  সেই পরিকল্পনায় তার ভাই মোবারক, সোহাগ মিয়া, ভগ্নিপতি জয়নাল এবং চাচাতো ভাই আক্কাছসহ আরো কয়েকজন অংশ নেন।
পিবিআই কর্মকর্তা শাখাওয়াত জানান, ঘটনার দিন রফিজাকে বাড়ির আঙিনায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পরিকল্পনাকারীরা।  এরপর প্রতিপক্ষের ৫৭ জনের বিরুদ্ধে নাসিরনগর থানায় হত্যা মামলা করেন মুছা।  পিবিআই মামলাটির তদন্তভার পেয়ে আক্কাছকে গ্রেফতার করে।  পরবর্তীতে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে সোহাগ ও পরশকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরো জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।  মূলত প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।  গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণের জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে।  এছাড়া মূল পরিকল্পনাকারী মুছা মিয়াসহ জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ