বিদেশ পাঠানোর নামে প্রতারণার অভিযোগ

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
বিদেশ পাঠানোর নামে প্রতারণার অভিযোগে মানবপাচারকারী চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে রাজধানীর পল্লবী এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে সিআইডি ঢাকা মেট্রো পশ্চিমের একটি টিম।
সিআইডি জানিয়েছে, বিদেশ যেতে ইচ্ছুক স্বল্প শিক্ষিতদের টার্গেট করতো তারা।  এরপর ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে ভিসা যাচাই প্রক্রিয়া দেখাতো ভুক্তভোগীদের।  তৈরি করতো জাল টিকিট, ভিসা ও বিএমইটি কার্ড।  এ কাজের জন্য তাদের একটি অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ টিম রয়েছে।  বিএমইটি কার্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কারও যোগসূত্র রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে সিআইডি।
গ্রেফতার দুজন হলো, জালিস মাহমুদ (৩২) ও অমল জয়ধর (৪১)‌।  তাদের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা, ৭১টি পাসপোর্ট, মালয়েশিয়ার ১১টি জাল ভিসা, ফ্রান্সের তিনটি জাল ভিসা, ভুয়া বিএমইটি ছাড়পত্রের ফটোকপি ২৪টি, ভুয়া মেডিক্যাল সার্টিফিকেট ৮টি, ভুয়া বিমান টিকিট ১০টি জব্দ করা হয়।
মালিবাগে সিআইডি প্রধান কার্যালয়ে সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক জানান, ভুক্তভোগীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এসএম এন্টারপ্রাইজ নামে ভুয়া রিক্রুটিং এজেন্সির পরিচালক জালিস মাহমুদ ও ফিল্ড অফিসার অমল জয়ধরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান রিপন মাহমুদ এখনও পলাতক।  তাকে ধরতে অভিযান চলছে। বর্তমানে বনানীতে প্রতিষ্ঠানটির ভাড়া করা রুম থাকলেও নেই কোন কর্মচারী কর্মকর্তা। সবাই গা ঢাকা দিয়েছে।
তিনি বলেন, রিক্রুটিং লাইসেন্স না থাকলেও ২০১৮ সাল থেকে বিদেশে লোক পাঠানোর নামে প্রতারণা করে আসছিল এসএম এন্টারপ্রাইজ।
ভুক্তভোগীদের বরাত দিয়ে ওমর ফারুক বলেন, ২০১৯ সালের মে মাস থেকে বিদেশে লোক পাঠানোর নামে এই চক্রটি এখন পর্যন্ত ৬৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।  এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ জন ভুক্তভোগী সিআইডিতে অভিযোগ করেছেন।
ঘটনা ২০১৯ সালে হলেও ভুক্তভোগীরা কয়েকদিন আগে মামলা করেছে কেন– এমন প্রশ্নের জবাবে সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এজেন্সিকে টাকা দিয়ে তা ফেরত নেওয়ার জন্য বারবার এজেন্সি লোকজনদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। বারবারই তারা সময় দিয়েছে।  এছাড়া ভুক্তভোগীরা, স্বল্পশিক্ষিত। আইনি ব্যবস্থা নেবেন সে বিষয়ে তারা সাহস পাচ্ছিলেন না।  সম্প্রতি বেশ কিছু মানব পাচারকারী চক্র গ্রেফতারের ঘটনা গণমাধ্যমে প্রচার হয়, সেই পরিপ্রেক্ষিতে তারা আইনগত ব্যবস্থা নেয়।
ভুক্তভোগীরা জানান, ভাগ্য বদলানোর জন্য মালয়েশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার জন্য নিজেদের সম্পদ বিক্রি করেছেন তারা।  বিমানবন্দরের যাওয়ার পর তারা বুঝতে পারেন প্রতারণার শিকার হয়েছেন।  পরে এসএম এন্টারপ্রাইজের যোগাযোগ করে টাকা ফেরতের বিষয়ে কথা বলতে গেলে বারবার সময় দিব টাকা ফেরত পাননি।  এছাড়া বিভিন্ন সময় তাদের রিক্রুটিং এজেন্সি থেকে ভয়-ভীতি দেখান হয় বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
বনানী থানায় তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ আইনে করা মামলায় গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।

ডিসি/এসআইকে/এমএস