তারা আছে নজরদারিতে, যেকোনো সময় গ্রেফতার

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
ডাকাতিতে জড়িয়ে পড়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকজন সদস্য।  তাদের বিষয়ে তথ্যপ্রমাণও পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এরমধ্যে কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছে।  শনাক্ত হয়েছে ৭-৮ জন। তারা নজরদারিতে আছে।  যেকোনও সময় হতে পারে গ্রেফতার।
পিবিআই সূত্র বলছে, ডাকাত চক্রটি মহাসড়কে গোয়েন্দা-পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি করে আসছিল।  ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-মাওয়া, মানিকগঞ্জ, চট্টগ্রাম সিলেট এসব মহাসড়কে তৎপরতা তাদের।  স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের টার্গেট করতো তারা।  ব্যবসায়ীদের স্বর্ণের অর্ডার দিয়ে পথেই সেগুলো লুট করতো।
মূলত পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরাই এ চক্রের টার্গেটে থাকতো।  ডাকাতির স্বর্ণ বিক্রির জন্য ওই বাজারেরই কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর সঙ্গে আঁতাত করতো।  এ চক্রের সঙ্গে সাবেক কয়েকজন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনা সদস্য জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে পিবিআই।
২০২০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সাভারের আমিনবাজারে পুলিশ পরিচয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয় ১৬৬ ভরি স্বর্ণ।  এখন পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  এরপরই ডাকাতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে।
সূত্র বলছে, ডাকাত চক্রের মূল হোতা সোহেল আহমেদ পল্লব।  বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের প্রেষণাদানে পটু তিনি।  বেকারদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়েও দল ভারী করতেন।  জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানতে পারে পিবিআই।
তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, এই চক্রের আরেক সদস্য রিপন মিয়াকে তাঁতীবাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  তিনি চক্রের অপারেশনাল টিমের সদস্য। তার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা উদ্ধার হয়েছে।  স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন রিপন।
কয়েকজনের ধরা পড়ার খবরে গা ঢাকা দিয়েছে চক্রের বাকিরা।  ডাকাতিতে জড়িত থাকায় এরইমধ্যে গ্রেফতার করে আদালত কারাগারে পাঠিয়েছেন সাবেক সেনাসদস্য ফারুক হোসেনকে।
চক্রটি প্রধানত ৩টি ধাপে মহাসড়কগুলোতে ডাকাতির কাজ করে আসছিল।  টার্গেট করা ব্যবসায়ীর সঙ্গে সুসম্পর্ক করে তথ্য সংগ্রহ করতো প্রথমে।  স্বর্ণের অর্ডার কবে ও কোথায় পৌঁছে দেওয়া হবে সে বিষয়ে অন্য গ্রুপের কাছে তথ্য সরবরাহ করতো।  পরে অপারেশনাল গ্রুপটি গোয়েন্দা-পুলিশ পরিচয়ে সুবিধাজনক স্থানে ওই ব্যবসায়ীর গাড়ি থামিয়ে জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যেত।  মালামাল বিক্রি করতো গ্রুপের অন্য সদস্যরা।
পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘ডাকাতিতে যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদেরকেই গ্রেফতার করা হবে‌।  অনেকেই নজরদারিতে রয়েছে’।
পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘স্বর্ণ ব্যবসায়ী কিংবা যে কোনও ব্যবসায়ীকে নগদ টাকা বা স্বর্ণ নিয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াতে আরও সতর্ক থাকতে হবে।  যেকোনও সমস্যায় পড়লে যেন সঙ্গে সঙ্গে তারা ৯৯৯-এ কল করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা চান।  অনেক সময় দেখা যায় তাদের কাছের লোকজনই অন্যদের কাছে তথ্য সরবরাহ করছে’।
স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের স্পর্শকাতর তথ্য শেয়ার না করা ও অর্ডার পৌঁছানোর আগে তা যাচাই করার পরামর্শও দেন খোরশেদ আলম।

ডিসি/এসআইকে/এমএস