চট্টগ্রামের আকবরশাহ’য় অস্ত্র-গুলিসহ যুবক আটক, ফাঁসিয়ে দেয়ার অভিযোগ

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রাম নগরের আকবরশাহ থানাধীন বিশ্বকলোনীতে এক যুবককে ধরে ধরে নিয়ে গেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)- ৭।  পরে আজ সোমবার (৫ এপ্রিল) র‌্যাব থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় ‘আটক যুবকের কাছ থেকে তিন রাউন্ড গুলিসহ একটি বিদেশি রিভলবার ও কিছু নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।  তার নাম মো. মামুন।  সে বিশ্বব্যাংক কলোনীর জি ব্লক এলাকার বাসিন্দা’।  গতকাল রবিবার দুপুরে তাকে আটক করা হয়।  আজ সোমবার (৫ এপ্রিল) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়।
তবে প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, হঠাৎ করেই র‌্যাবের দল এসে মামুনকে জোর করে গাড়িতে ওঠায়।  এসময় মামুনের কাছে বা আশেপাশে কোনো অস্ত্র ছিল না।  তাকে অস্ত্রসহ আটকের বিষয়টি আমরা দেখিনি। 
র‌্যাবের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে যে, চট্টগ্রাম মহানগরীর আকবরশাহ্ থানাধীন ৯নং ওয়ার্ড বিশ্বকলোনী আলহেরা মসজিদ সংলগ্ন ফারুক মার্কেটস্থ সততা ট্রেডার্স নামীয় দোকানের সামনে কতিপয় ব্যক্তি মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অবস্থান করছে।  উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে রবিবার (৪ এপ্রিল) দুপুর পৌনে একটায় অভিযান পরিচালনা করলে র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে আসামিরা।  র‌্যাব সদস্যরা ধাওয়া করে আসামি সন্দ্বীপের মুছাপুর এলাকার মৃত আবু বক্করের ছেলে মো. মামুন (৩৮) কে আটক করে।  সে বিশ্বকলোনীর জি ব্লকস্থ মকবুলের বাসায় থাকে। 
র‍্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এএসপি নুরুল আবছার জানান, মাদকদ্রব্য বেচাকেনার খবরে বিশ্বকলোনির আলহেরা মসজিদ এলাকায় অভিযান চালানো হয়।  ওই সময় র‍্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করলে মামুনকে আটক করা হয়।  পরবর্তীতে তার কাছ থেকে একটি বিদেশি রিভলবার ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
এএসপি নুরুল আবছার আরো বলেন, আটক মামুন পেশাদার সন্ত্রাসী।  জিজ্ঞাসাবাদে তিনি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্ত্র বেচাকেনা ও অস্ত্র দেখিয়ে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন বলে জানিয়েছেন।  পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে আকবরশাহ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আটক মামুন স্থানীয় যুবলীগের রাজনীতিতে যুক্ত।  ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রথম যুগ্ম আহবায়ক সৈয়দ সরোয়ার মোরশেদ কচির অনুসারী মামুন।  গত চসিক নির্বাচনে সরকারদলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় বিপক্ষ একটি গ্রুপ তাকে অস্ত্র ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করে এই ঘটনা ঘটানো হয় বলে তার পরিবার ও কচি সমর্থকেরা দাবি করেন।  আলহেলা মসজিদের যে সততা ট্রেডার্সের সামনে থেকে তাকে আটক করা হয়েছিল সেখানে অনেকেই ছিলেন।  তাদের কয়েকজন রহিম, আব্বাস, সাইফুল, আল-আমিন দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, ‘মামুনকে যখন আটক করা হচ্ছিল তখনও তার কাছে কোনো অস্ত্র ও গুলি- কিছুই ছিল না’।
‘যখন র‌্যাব তাকে অস্ত্র-গুলিসহ পেয়েছে বলেছে তখন মামুন চিৎকার করে বলছিল- আমার কাছে কোনো অস্ত্র ছিল না।  আপনারা অস্ত্র দিচ্ছেন যে এটা সিসিটিভি ক্যামেরায় আছে।  এরপরই সেই সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়’ বলে মামুনের পরিবার দাবি করে।

ডিসি/এসআইকে/আরএআর