জোর করে ১৯ বছরের ছেলের সাথে ১৩ বছরের মেয়েকে বিয়ে দেয়ার অভিযোগ মেয়ের বাবার বিরুদ্ধে

এম. জুবাইদ, পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি >>>
১৩ বছর বয়সী কনের সাথে বিয়ে হয় ১৯ বছর বয়সী এক বরের সাথে।  তাও বরকে ধরে নিয়ে গিয়ে একটি বাড়িতে আটকে রেখে জোরপূর্বক বিয়ে পড়ানো হয়েছে।  তা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।  এমন বাল্য বিবাহের ঘটনা ঘটে গত ১৯ মার্চ উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ মেহেরনামা বাজারপাড়া এলাকায়।  বরের নাম হুমায়ুন কবির।  সে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড হরিনাফাঁডি এলাকার আহমদ কবিরের পুত্র।
অপর দিকে কনের নাম খতিজা বেগম।  সে একই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাঘগুজারা দক্ষিণ মেহেরনামা বাজারপাড়া এলাকার জয়নাল আবেদীনের মেয়ে ও মেহেরনামা আলমাছিয়া দাখিল মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণির ছাত্রী।
বিষয়টি জানতে পেরে বরের মা সাহেদা বেগম বাদী হয়ে তার অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেকে আটকে রেখে জোরপূর্বক বিয়ে পড়ানোর দায়ে কনের পিতাসহ কয়েকজনকে বিবাদী করে পেকুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ছেলেটির মা সাহেদা বেগম জানান, গত ১৮ মার্চ সকালে আমার ছেলে হুমায়ুন কবির হরিণাফাড়ি থেকে দক্ষিণ মেহেরনামা বাজারপাড়া গ্রামে একটি কাজে যায়।  কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে আমার ছেলের গতিরোধ করে মেয়ের বাবা ও তার সহযোগীরা।  জোরপূর্বক টানা হ্যাঁচড়া করে একটি বাড়িতে নিয়ে যায় বাজারপাড়া এলাকার ছৈয়দ আহমদের ছেলে জয়নাল আবেদীনসহ ৫-৬ জনের দল।  তারা আমার ছেলেকে একটি ঘরে অবরুদ্ধ করে রাখে।  পরের দিন ১৯ মার্চ বিকেল ২ টার দিকে হুমায়ুন ও জয়নাল আবেদীনের মেয়ে মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণির ছাত্রী খতিজা বেগমের বিয়ে পড়ানো হয়েছে।  জোরপূর্বক ও ইচ্ছার বিরুদ্ধে অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক ছেলে-মেয়েকে নিকাহ রেজিস্টার্ড কাবিন সম্পাদন করতে কাজী সম্মত না হলে মেয়ের অভিভাবকরা ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে যান।  সেখানে গিয়ে তথ্য গোপন রেখে নোটারীর মাধ্যমে বিয়ে সম্পাদন করে যা বেআইনী।  আমার ছেলের সাথে ওই মেয়ের সম্পর্ক আছে ঠিকই।  কিন্তু তারা এখনো নাবালক।
এদিকে মেহেরনামা বাজারপাড়ার স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হুমায়ন কবির (১৯) ও ওই মাদ্রাসা ছাত্রী দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্কে জড়িত।  সেই সুবাদে হুমায়ুন কবির প্রতিনিয়ত ওই ছাত্রীর সাথে দেখা করতে এই এলাকায় আসে।  প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই ছাত্রীর সাথে প্রতিনিয়ত শারীরিক সম্পর্ক করে হুমায়ুন কবির।  শেষ পর্যন্ত ওই ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হলে হুমায়ন কবির বিয়ে করতে রাজি হয়।  পরে ওই মেয়ের পরিবারের লোকজন তাদেরকে নোটারীর মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করে।
এ বিষয় জানতে পেকুয়া থানার ওসি (তদন্ত) কানন সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, খোঁজ-খবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডিসি/এসআইকে/এমজে