ব্ল্যাকমেইল, চট্টগ্রামের আকবরশাহ থেকে নারীসহ গ্রেফতার ২

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করা সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।  তারমধ্যে একজন নারীও রয়েছে।  এ প্রতারক চক্রটি নানা কৌশলে নিরীহ লোকজনের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে।  সম্পর্কের এক পযায়ে টার্গেট করা ব্যক্তিকে বাসায় নিয়ে নারীর সাথে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখায়।  এরপর মোটা অংকের টাকা দাবি করে।  কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভিকটিম লোকলজ্জায় পুলিশের কাছে আসেন না।  এ চক্রের কাছে অনেকে সর্বস্ব খুইয়েছেন৷
শুক্রবার (৯ এপ্রিল) ভোরে চট্টগ্রাম নগরীর আকবরশাহ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।  তবে এ চক্রের আরও দুই সদস্য পলাতক রয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- খুলশী থানার সেগুনবাগান ৮ নম্বর লেইনের সোহাগ কলোনির মো. রহমানের স্ত্রী শাহিনা আক্তার প্রকাশ আইরিন নিসা (৩০) ও একই এলাকার মো. শহিদের ছেলে মো. ফয়সাল প্রকাশ রেজা (২৫)।  এছাড়া পলাতক পলাতক দুই আসামি হলেন- নগরীর আকবরশাহ থানাধীন নন্দন হাউজিং সোসাইটির আব্দুল জব্বারের ছেলে হুমায়ুন কবীর সুমন (৩৫) ও আকবরশাহ থানাধীন বিশ্ব কলোনি এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ দোয়েল (৩২)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১ এপ্রিল কলেজের সাবেক ছাত্রী পরিচয় দিয়ে শাহিনা আক্তার প্রকাশ আইরিন নিসা নামে এক নারী ফোন করে দেখা করতে চান নগরীর চান্দগাঁও এলাকার একটি কলেজের সাবেক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের সাথে।  গত ৪ এপ্রিল বেলা ১১ টার দিকে চট্টগ্রাম ডায়াবেটিস জেনারেল হাসপাতালের সামনে পরীক্ষা করতে যান ওই শিক্ষক।  সেখানে শাহিনা আক্তার প্রকাশ আইরিন নিসা ফোন করে দেখা করার অনুরোধ করলে হাসপাতালের সামনে আসতে বলেন।  কিছুক্ষণ পরে সেখানে হাজির হয় শাহিন আক্তার এবং তার সহযোগি হুমায়ুন কবীর সুমন ও মো. দোয়েল।
এসময় হঠাৎ তারা ওই শিক্ষককে মারধর করতে থাকে।  এক পর্যায়ে তাকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় তুলে নন্দন হাউজিং সোসাইটির ১ নম্বর রোডের মোস্তাফা ভবনের ৮ তলায় নিয়ে যায়।  সেখানে নিয়ে গিয়ে শিক্ষকের সঙ্গে শাহিন আক্তারের অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ধারণ করে হুমায়ুন কবীর সুমন ও দোয়েল।  এ সময় ৫ লাখ টাকা দাবি করে তারা।  না হলে আপত্তিকর ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।  এসময় সঙ্গে থাকা নগদ ১২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন।
সম্মানের ভয়ে সিএনজি অটোরিকশা যোগে বাসায় ফিরে কাউকে কিছু না বলে ২ লাখ টাকার চেক দেন ওই শিক্ষক।  সেই চেক দিয়ে ওআর নিজাম রোডের একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে বেলা ২ টার দিকে টাকা তুলে নেওয়া হয়।  পুনরায় শিক্ষকের কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করে শাহিন আক্তার।  টাকা না দিলে আপত্তিকর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।  অবশেষে নিরুপায় হয়ে থানায় এসে অভিযোগ দেন অবসরপ্রাপ্ত ওই শিক্ষক।
আজ শুক্রবার বিভিন্ন নগরীর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে শাহিন আক্তার ও সন্দেহভাজন আসামি ফয়সালকে গ্রেফতার করা হয়।
খুলশী থানার ওসি মোহাম্মদ শাহীনুজ্জামান জানান, প্রতারণার মাধ্যমে কলেজশিক্ষকের আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  তাদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী শিক্ষক বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।  বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ডিসি/এসআইকে/আরএআর